খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অঙ্কের উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেক।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ঢাকায় অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নে ৩৩৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকার এই সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।
দুপুরে খুবির জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আতিয়ার রহমান বার্তা২৪.কমকে জানান, এই সংশোধিত প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত। অনুমোদিত এ প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য অবকাঠামো সমূহের মধ্যে রয়েছে ৭৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে দশ হাজার বর্গমিটার আয়তনের ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তন ভবন এবং অডিটরিয়াম নির্মাণ, ৭০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে ১৬ হাজার সাতশত পঞ্চাশ বর্গমিটার আয়তনের চতুর্থ একাডেমিক ভবন নির্মাণ (১০ তলা ভিতে ১০ তলা), ৩৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে সাত হাজার তিনশত সত্তর বর্গমিটার আয়তনের শিক্ষক, কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবন নির্মাণ (১১ তলা ভিতে ১১ তলা), ২৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে তিন হাজার সাতানব্বই বর্গমিটার আয়তনের জিমনেসিয়াম নির্মাণ, ১৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে আইইআর ভবন (খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এবং ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন এন্ড রিসার্চসহ) নির্মাণ, ৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে মার্বেল পাথর দ্বারা কেন্দ্রীয় মসজিদের ফ্লোর নির্মাণ ও বিশেষ টাইপের গ্রিল তৈরি, বৃহৎ ও সুউচ্চ ভবনসমূহের ছাদে ৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে সোলার প্যানেল স্থাপন। ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যুতের অভ্যন্তরীণ সাব-স্টেশন নির্মাণ। ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সীমানা প্রাচীর এবং দৃষ্টিনন্দন প্রধান ফটক নির্মাণ। ১৯৮৭ সালের ৪ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত গত ৩০ বছরে এটাই সবচেয়ে বড় সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প। তবে মূল প্রকল্পে তখন যে আয়তন ধরা হয়েছিলো তা ভবিষ্যৎ চাহিদার তুলনায় কম। ফলে চাহিদা পূরণ হতো না। এই সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদিত হওয়ায় প্রয়োজনীয় আয়তন বৃদ্ধি পাবে যা সময়ের চাহিদা পূরণ করবে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় অংকের সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান তার নিজের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
এক বার্তায় তিনি বলেন, এই উন্নয়ন বরাদ্দ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আনুকূল্যের নিদর্শন যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত বঞ্চনা পুষিয়ে নিয়ে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে শিক্ষা-গবেষণার নতুন দ্বার উম্মোচন করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
একইসঙ্গে তিনি অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ একনেকের সদস্যবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়ের সচিববৃন্দ, ইউজিসির চেয়ারম্যান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, পরিকল্পনা অনুবিভাগ, প্রকল্প বাস্তবায়ন অনুবিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। এছাড়া এই প্রকল্পটি একনেক পর্যন্ত যাওয়ার ব্যাপারে যারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদেরকেও তিনি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।