মিয়ানমার বলে রোহিঙ্গা নেব, কিন্তু নেয়না

ঢাকা, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-22 00:43:42

পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গা নিতে মিয়ানমার সিরিয়াস নয়। তারা বলে নেব কিন্তু নেয় না। এ ইস্যুতে মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। বাংলাদেশ ১ লাখ লিস্ট  পাঠিয়েছে কিন্তু তারা শনাক্ত করেছে ৮ হাজার। দুইবার পাঠানোর চেষ্টা করেও মিয়ানমারের অসহযোগিতায় প্রত্যাবাসন বিফল হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে (২ জানুয়ারি) ফ্ল্যাশ অন রোহিঙ্গা জেনোসাইড’ শীর্ষক ৭ দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে এখনও আমরা সফলকাম হতে পারিনি। শেখ হাসিনা যদি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিতেন তাহলে বিশ্ব যুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় গণহত্যা হতো। তারপরও ২০ হাজার রোহিঙ্গা মারা গেছেন। অনেক বন্ধু দেশ এ ইস্যুতে সহযোগিতায় করছে। কিছু দেশ ছাড়া। ১৩৪ টি দেশ জাতিসংঘে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ৯ টি দেশের মধ্যে ৪ টি বলেছে প্রতিবেশী শক্তিশালী বলে তারা বিপক্ষে রায় দিয়েছে। আং সান সুচিও নিজে স্বীকার করেছেন মিয়ানমারে হত্যাকাণ্ড হয়েছে।

এ সময় তিনি চিত্রকর্মের একটি শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশের ফরেন পলেসি হচ্ছে সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো জন্য শত্রুতা নয়। ভারত, নেপাল ভুটান এমনকি মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ভালো। কিন্তু রোহিঙ্গা ফেরাতে মিয়ানমারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে। আমরা বলেছি, তোমাদের লোকগুলো তোমাদের বিশ্বাস করে না। রোহিঙ্গা নেতাদের নিয়ে কী আয়োজন করেছ তাদের দেখাও, প্রমাণ দেখাও, কিন্তু তারা কেনো কিছুর উত্তর দেয় না। তারা এ বিষয়ে সিরিয়াস নয়। মিয়ানমার সমস্যা সৃষ্টি করেছে, সমাধানও সেখানে। দ্বিপক্ষীয় ছাড়াও এ ইস্যুতে আর একটি দল সঙ্গে এসেছে তা চীন। ভয় হচ্ছে এত মানুষ দীর্ঘ সময় এখানে থাকলে সন্ত্রাসের জন্ম হবে যা গোটা বিশ্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন জাপান মিয়ানমারে ব্যবসা করতে চায়। কিন্তু এ সংকট জিইয়ে রেখে তারা লাভবান হতে পারবে না। চীন রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বলে কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। এ বিষয়ে সকল দেশ এক বাক্যে বলেছে রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়া উচিত কিন্তু মিয়ানমার মানছে না। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা  গণহত্যার কথা বলেনি, কিন্তু বিশ্ব বলছে। বাংলাদেশ বলেনি কারণ মিয়ানমার বন্ধু রাষ্ট্র, তাদের সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে বলেন, মিয়ানমারের যে নৃশংস ঘটনা ঘটেছে তা স্মরণকালে ঘটেনি। মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকবে কিন্তু মানবিক সম্পর্ককে ছাপিয়ে নয়।

তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানে থেকে সংহতি প্রকাশ করায় ধন্যবাদ জানান। 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মিজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সকল দেশ একই রকম ব্যবহার করছে না। এটি খুবই জটিল। সাময়িক সময়ের জন্য রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হলে, এত মানুষ একসঙ্গে থাকলে নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দিতে পারে। যতই মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হোক না কেন তারা তা মানছে না। কারণ মিয়ানমারকে রক্ষা করার জন্য এক চীনই যথেষ্ট।

জাতীয় চিত্রশালা গ্যালারী-১- এ এক সপ্তাহ ব্যাপী এ প্রদর্শনী প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮ টা এবং শুক্রবার বেলা ৩ টা থেকে রাত ৮ টা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ভোরের কাগজ ও বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর