‘আমাদের দাদা সাদেক খান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-09-01 22:36:10

একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাষাসৈনিক, প্রখ্যাত সাংবাদিক, কলামিস্ট ও চলচ্চিত্র নির্মাতা সাদেক খানকে নিয়ে লেখা ‘আমাদের দাদা সাদেক খান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইসফেন্দিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

বিচারপতি আবদুল জব্বার খান ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা ও অ্যার্ডন পাবলিকেশন্স থেকে বইটি প্রকাশিত হয়। বইটির গ্রন্থনা ও সম্পাদনা করেছেন মানোয়ার হোসেন।

প্রখ্যাত সাংবাদিক সাদেক খান তার আত্মজীবনী লেখা শুরু করলেও শেষ করে যেতে পারেননি। অসমাপ্ত অবস্থায় রেখে যাওয়া সেই আত্মস্মৃতি, তার বিভিন্ন সময়ে লেখা কলাম এবং তাকে নিয়ে লেখা নিয়ে প্রকাশিত হলো বইটি।

বক্তব্য দিচ্ছেন রাশেদ খান মেনন

বইটির মোড়ক উন্মোচনের আগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সাবেক কূটনৈতিক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ইনাম আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাদেক খানের বোন ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, সাপ্তাহিক হলিডের সম্পাদক সৈয়দ কামালউদ্দীন, একুশে পদকপ্রাপ্ত আলোকচিত্রী গোলাম মোস্তফা, বাংলা একাডেমির সাবেক পরিচালক মনসুর মুসা, লেখক জয়নাল হোসেন, গ্রন্থটির প্রকাশক অ্যাডর্ন পাবলিকশনের প্রধান নির্বাহী সৈয়দ জাকির হোসাইন ও সম্পাদক মানোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিচারপতি আবদুল জব্বার খান ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। সঞ্চালনা করেন সাদেক খানের ছোট ভাই ফাউন্ডেশনটির সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলি ‘নিউ এজ’ পত্রিকার প্রকাশক শহীদুল্লাহ খান বাদল।

সাদেক খানের ভাই রাশেদ খান মেনন বলেন, আমাদের বাবার পরে দাদা ছিলেন পরিবারের অভিভাবক। আমাদের সকল ভাই-বোন কোন না কোনভাবে তার চিন্তা ও কর্ম দ্বারা উপকৃত হয়েছি।

তিনি বলেন, আমি মানোয়ারকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম বইটি সম্পাদনা করার জন্য কিন্তু দাদা কিছুতেই রাজি হচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত আমার জোরে রাজি হয়ে যান। তখন দাদার সে আত্মস্মৃতি লেখা শুরু হয়। কিন্তু বইটি অসমাপ্ত রেখে দাদা আমাদের মাঝ থেকে চলে গেলেন। এটি আমাদের জন্য অনেক বড় ধরনের ক্ষতি।

তিনি আরও বলেন, দাদা যা লিখে গিয়েছিলেন তার সঙ্গে অন্য কিছু লেখা সংযুক্ত করে এবং আমাদের পরিবার ও উনার বন্ধুবান্ধব যারা রয়েছেন তাদের লেখা দিয়ে আমরা এই বইটি প্রকাশ করেছি।

সাদেক খানের মেজবোন সেলিমা রহমান বলেন, আমাদের দাদা সাদেক খান ছিলেন অসম্ভব মেধাবী ও কর্মচঞ্চল একজন মানুষ। জীবনে যখন যেটি সত্য বলে উপলব্ধি করেছেন সেটাই প্রকাশ করেছেন অকপটে।

তিনি বলেন, দাদা ছিলেন আমাদের কাছে বটবৃক্ষের মতো। আদর, স্নেহ, ভালোবাসা দিয়ে আমাদের সব ভাই বোনদেরকে আগলে রাখতেন।  তিনি কোনো বিতর্কে যেতেন না। কোন বিষয় নিয়ে হয়তো তর্ক করতেন কিন্তু কোন কিছু কারো ওপর চাপিয়ে দিতেন না।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেও যারা কোন কিছু আশা করেননি, সাদেক ভাই তাদের মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ অনেক সংগঠন প্রতিষ্ঠার সাথে জড়িত থাকলেও কোথাও থেকে তিনি কোন সুবিধা নেননি। দেশপ্রেমিক এক নিপাট ভদ্রলোক ছিলেন সাদেক খান।

সাপ্তাহিক হলিডে’র সম্পাদক সৈয়দ কামালউদ্দীন বলেন, সাদেক খানের আত্মস্মৃতিটুকু পরিপূর্ণভাবে পাওয়া গেলে আমরা তৎকালীন দেশ-সমাজ ও রাজনীতি সম্পর্কে আরো অনেক অজানা কথা জানতে পারতাম। তার সাংবাদিকতার ভূমিকার কারণে তিনি বহুদিন মানুষের মাঝে বেঁচে থাকবেন।

গ্রন্থটির প্রকাশক অ্যাডর্ন পাবলিকশনের প্রধান নির্বাহী সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, সাদেক খানের মতো গুণীজনের স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করা আমরা দায়িত্বশীলতা মনে করি।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ইনাম আহমেদ চৌধুরী বলেন, সাদেক খান তার পরিবার, স্বজন ও অনুজ বন্ধুদের অনেকের অনুপ্রেরণা ও জীবনের আদর্শ ছিলেন। যে কোন মানুষের জন্য এটি একটি বড় অর্জন। জীবনের সৌন্দর্যবোধ, মানুষ ও দেশপ্রেমের অসাধারণ উদাহরণ ছিলেন তিনি।

সভার একপর্যায়ে সাদেক খানকে নিয়ে তৈরি ডকুমেন্টারি দেখানো হয় এবং বইয়ের সম্পাদনাকারী মনোয়ার হোসেন ‘আমাদের দাদা সাদেক খান’ বইটির অংশবিশেষ পাঠ করে শোনান।

প্রখ্যাত সাংবাদিক সাদেক খান ২০১৬ সালের ১৬ মে ৮৩ বছর বয়সে মারা যান। সাদেক খানের বাবা বিচারপতি আবদুল জব্বার খান পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার ছিলেন। তিনি প্রয়াত সাংবাদিক এনায়েতুল্লাহ খানের বড় ভাই।

এ সম্পর্কিত আরও খবর