রাজধানীর যানজট নিরসনের জন্য সড়কের পাশাপাশি রেল পথকেও সমানভাবে প্রাধান্য দিচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে ঢাকা শহরের চারপাশ ঘিরে বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ।
রোববার (৩ নভেম্বর) বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা কার্যক্রমের প্রকল্প পরিচালক মনিরুল ইসলাম ফিরোজী প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানিয়েছেন।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, বৃত্তকার রেলপথের দৈর্ঘ হবে ৮০ কিলোমিটার। প্রাথমিক পর্যায়ে এই রেলপথ নির্মাণে সমীক্ষা চালানো হচ্ছে যেসব রুট ধরে সেগুলো হলো—উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গী, বিরুলিয়া, মিরপুর, গাবতলী, রায়েরবাজার, বাবুবাজার, সদরঘাট, শ্যামপুর, ফতুল্লা, চাষাড়া ও পূর্বাচল সড়ক ঘিরে।
প্রকল্প সূত্রে আরো জানা যায়, ঢাকা শহরের চারপাশ ঘিরে বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণে সমীক্ষার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা। যার পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে করা হচ্ছে। তবে প্রাথমিক সমীক্ষা শেষে মূল রেলপথের নির্মাণের ব্যয় হতে পারে ৭২ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। মূল কাজের নির্মাণ প্রকল্পে থাকবে ২০টি স্টেশন, ডিপো নির্মাণ, রোলিং স্টক ও কোচ আমদানি।
রেলসূত্রে জানা যায়, বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করতে গত ৩০ এপ্রিল বাংলাদেশ রেলওয়ে, চীনের সিউয়াং সার্ভে, চীনের ডিজাইন গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড, বেটস কনসাল্টিং সার্ভিস লিমিটেড বাংলাদেশ ও ইঞ্জিনিয়ার অ্যান্ড অ্যাডভাইজার লিমিটেড বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা কার্যক্রমের প্রকল্প পরিচালক মনিরুল ইসলাম ফিরোজী প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয়ে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ঢাকা শহরে বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণের ফিজিবিলিটি স্টাডি চলছে। এখন পর্যন্ত আমাদের যে প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে সেখানে ৫০ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়েছে। প্রকল্পের কাজ সুবিধাজনক পর্যায়ে রয়েছে। চলতি বছরের মে মাসে এ প্রকল্পের কাজ আমরা শুরু করেছি। যথাসময়ে অর্থাৎ ২০২০ সালের মে মাসে প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ হবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে নতুন করে আর ব্যয় বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
তিনি আরো বলেন, ঢাকা শহরের চতুর্দিকে বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা বা ফিজিবিলিটি স্টাডি কার্যক্রম শেষে আমরা একটা প্রতিবেদন দেব। তার ওপর ভিত্তি করে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণের মূল কাজ শুরু হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সুবিধা উল্লেখ করে প্রকল্প পরিচালক মনিরুল ইসলাম ফিরোজী বলেন, ঢাকা শহরের চারপাশে বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণ হলে ঢাকা ও আশপাশের জেলার মানুষ সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করতে পারবেন। কেউ যদি চাষাঢ়া থেকে টঙ্গী যেতে চান তাহলে রাজধানীর ভেতরে প্রবেশ না করেই বৃত্তাকার এই রেলপথ ব্যবহার করে সহজেই যাতায়াত করতে পারবেন। এর ফলে রাজধানীর যানজট তাকে পোহাতে হবে না এবং কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।