‘পথচারীদের জন্য ফুটপাত’- এই স্লোগানকে সামনে রেখে রাজধানীর সব সড়ক থেকে বিলবোর্ড তুলে দেয় সিটি করপোরেশন। কিন্তু বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কে ফুটপাত জুড়ে বসানো হয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপের মালিকানাধীন ‘আকাশ’ ডিটিএইস'র বিজ্ঞাপন। ফলে পথচারীদের চলাচল যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে তেমনি গাড়ি চালকরাও বিপাকে পড়ছেন।
অভিযোগ আছে, বিমানবন্দর সড়কে এসব বিলবোর্ড বসাতে কোনও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করা হয়নি। এসব বিলবোর্ড সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিয়ে বসানো হয়েছে কিনা- সে বিষয়েও সঠিক জবাবও মিলছে না। শুধু দেখা মিলছে বিলবোর্ডে ছেয়ে যাওয়া বিমানবন্দর সড়ক।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে কিছু দূর পর পর বসানো হয়েছে ‘আকাশ’ ডিটিএইচ'র বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ড। কোথাও ফুটপাতের ওপর আবার কোথাও ফুটপাতের পাশেই এসব বিলবোর্ড বসানো হয়েছে। ফলে রাতে চালকদের গাড়ি চালাতে সমস্যা হচ্ছে। কারণ রাতে গাড়ি লাইট বিলবোর্ডে রিফ্লেক্ট করায় দুর্ঘটনা ঘটছে।
সিটি করপোরেশনের ঘোষণা অনুযায়ী, রাজধানীর কোথাও বিলবোর্ড বসানো যাবে না। তবে প্রয়োজনে সীমিত আকারে নির্দিষ্ট জায়গায় অনুমতি নিয়ে বিলবোর্ড বসানোর একটা বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু আকাশ ডিটিএইচ'র বিলবোর্ডে বসানোর ক্ষেত্রে সেই অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা- সে বিষয়ে কেউই কিছু জানেন না।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল হামিদ মিয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘অন্যান্য সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বিভাগ বিলবোর্ডের বিষয়টি দেখে। কিন্তু ডিএনসিসির রাজস্ব বিভাগের সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। কাজেই আমি এ বিষয়ে সঠিকভাবে কিছু জানি না। এটা দেখে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ। তারাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবে।’
এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর মঞ্জুর হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘আইন অনুযায়ী অনুমতি নিয়ে বিলবোর্ড বসাতে হয়। কিন্তু কেউ আইন অমান্য করে বিলবোর্ড বসিয়েছে কিনা, সেটা দেখার জন্য আমাদের মনিটরিং টিম রয়েছে। কেউ অনুমতি না নিলে ওই টিম আমাদের রিপোর্ট করবে। তখন যদি দেখা যায় অনুমতি নেওয়া হয়নি তাহলে আইন অনুযায়ী জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।‘
তিনি আরও বলেন, ‘আকাশ ডিটিএইচ-এর বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ড বাসানোর ক্ষেত্রে অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা- সে বিষয়ে আমি সঠিকভাবে কিছু বলতে পারছি না। কেননা আমি এখন অফিসে নেই। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’
তবে ফুটপাতে বিলবোর্ড বাসানোর ক্ষেত্রে অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি-হয়নি সে উত্তর না পাওয়া গেলেও বিজ্ঞাপনী সংস্থা যে খেয়াল খুশিমতো বিলবোর্ড বসিয়ে রমরমা বাণিজ্য করে যাচ্ছে সে বিষয়টি স্পষ্ট।
অন্যদিকে, বিমানবন্দরে সড়কের ফুটপাতে বিজ্ঞাপনী বিলবোর্ড দেখে অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন। আব্দুর রাজ্জাক নামে এক পথচারী জানান, বিলবোর্ডগুলো অনেকটাই ফুটপাত লাগায়ো। ফলে হাঁটতে সমস্যা হয়। তাছাড়া গাড়ির লাইট বিলবোর্ডে পড়লে রিফ্লেক্ট করে। এতে গাড়ি দিকভ্রান্ত হয়। তাই যেকোনও সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের দেখা উচিৎ।