মংলা থেকে: ঘূর্ণিঝড় ফণী আতঙ্কে মংলার উপকূলীয় গ্রাম জয়মনি ঘোলের বাসিন্দারা পার্শ্ববর্তী সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিচ্ছেন। বাসা বাড়ি থেকে সকল প্রয়োজনীয় ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে লোকজন রওনা দিয়েছেন সাইক্লোন সেন্টারে। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখে মুখে দেখে গেছে আতঙ্ক ও ভিটামাটি ছেড়ে যাওয়ার বিষণ্ণতা।
শুক্রবার (৩ মে) দুপুরের বৃষ্টিপাতের পর লোকজন মূলত বাড়ি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নিয়েছেন।
ফণীর সর্বশেষ অবস্থা: ফণীর প্রভাবে উত্তাল মেঘনা
জয়মনি ঘোল এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, এই গ্রামটির এক পাশে বয়ে গেছে পশুর ও ওপর পাশে সেলা নদী। আর সঙ্গে এক পাশে সুন্দরবন। এই এলাকাটিকে মংলা উপকূলীয় অঞ্চলের সব থেকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বলা হয়। তাই এলাকাটিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে এক যোগে কাজ করছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স।
আরও দেখা যায়, গ্রামটিতে প্রায় ৫০০ ঘর রয়েছে। যার মধ্যে প্রায় সকল ঘরই কাঁচা। সে কারণে এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এই গ্রামে। তাই গ্রামটি থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য তৎপর দেখা গেছে পুলিশকে।
এ বিষয়ে মংলা থানার উপ-পরিদর্শক রহুল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘প্রায় বেশিরভাগ মানুষকেই আমরা সাইক্লোন সেন্টারে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছি। তবে কিছু কিছু লোকজন আছে যাদের এখনো সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাদেরকে এক প্রকার জোর করেই আমাদের সাইক্লোন সেন্টারে নিয়ে যেতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সন্ধ্যা নাগাদ ১৪০ কি.মি. বেগে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে ফণী
এদিকে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকালের দিকে তারা সাইক্লোন সেন্টারে না যেতে চেলেও দুপুরের বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে তারা এখন সরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। কেননা এখন পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে অবনতির দিকে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদ ইব্রাহিম মোল্লা বার্তা২৪.কমকে জানান, সকালের দিকে মানুষ না যেতে চাইলেও এখন ঠিকই চলে যাচ্ছে। আমাদের এলাকায় বারবার মাইকিং করে বলা হচ্ছে সন্ধ্যার পর যেকোনো সময় ফণী আঘাত আনবে। তাই এখন মানুষ ভয় পেয়ে চলে যাচ্ছেন নিরাপদ আশ্রয়ে।
গ্রামের আরেক বাসিন্দা মো.হাবিবুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বাড়ি ঘর ছেড়ে যেতে সবারই খারাপ লাগছে। তবে এখন আর কোনো উপায় না থাকায় সবাই চলে যাচ্ছে। সন্ধ্যার মধ্যে গ্রামে আর একজন মানুষও থাকবে না আশা করা যায়।’
আশ্রয় কেন্দ্রে আসা শেফালি বেগম, শিউলি ও ইস্তিফান হালদার জানান, দুপুরে ঝড়-বৃষ্টি ছাড়লে ভয়ে বাচ্চাদের নিয়ে এখানে চলে আসি। শেফালি আরও বলেন, বাচ্চার বাবা পাশের বৈদ্যমারী বাজারে ঝড়ের খোঁজ নিতে গেছে। যদি রাতে ঝড় বাড়ে তাহলে এখানে থেকে যাব, কিন্তু বাড়ি ঘরের কী হবে জানি না। দুপুর থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে যারা অবস্থান করছে তাদের জন্য এখন পর্যন্ত কোন খাবারের ব্যবস্থা করা হয়নি।
ফণী সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন 'ফণী ঘূর্ণিঝড়'