মংলা থেকে: ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার বেগে ভারতের ওড়িশা রাজ্যের পুরিতে আঘাত হেনেছে সুপার সাইক্লোন ঘূর্ণিঝড় ফণী। শুক্রবার (৩ মে) সকালে ওড়িশার স্থলভাগে আছড়ে পড়ে এই ঘূর্ণিঝড়।
সেখানে ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে বইছে। এর পর ওড়িশা থেকে ঘূর্ণিঝড়টি কিছুটা দুর্বল হয়ে ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে আঘাত হানতে পারে বলে আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
এদিকে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে। তাপমাত্রার সঙ্গে গরমের প্রভাবটাও কমে আসছে। তবে সবার মধ্যে ফণী আতঙ্ক বিরাজ করছে। কিন্তু বেলা ১১টা পার হলেও উপকূলীয় এলাকা মংলার আকাশে ঘূর্ণিঝড় ফণী প্রভাব এখনো দেখা যায়নি। আকাশে স্বাভাবি রৌদ্রজ্জ্বল রয়েছে। তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এছাড়া স্থানীয়রা বলছেন, ৭ নম্বর বিপদ সংকেত অনুযায়ী যে ধরনের প্রভাব আবহাওয়াতে থাকে তা এই মুহূর্তে মংলার আকাশে দেখা যাচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, মংলা শহরটি দুইভাবে বিভক্ত। মংলা নদীর এক পাড়ে সমুদ্র বন্দর, বাস স্ট্যান্ড ও কিছু আবাসিক হোটলে রয়েছে। আর অন্য পাড়ে মংলা সদর উপজেলা শহর। মংলার এই দুপাড়েই এখন ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। আকাশে সূর্য দেখা যাচ্ছে আর রোদের তাপ স্বাভাবিক।
তবে মাঝে মধ্যে ভারী কালো মেঘ আকাশে ভাসতে দেখা গেছে। তবে কিছুক্ষণ পর আবার সেই মেঘ বাতাসে ভেসে দূরে চলে যাচ্ছে। তাই সব মিলিয়ে বলা যায় ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব এখনো দেখতে হয়নি মংলাবাসীকে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত ৩ বা ৪ নম্বর বিপদ সংকেত দেখানো হলে যে প্রভাব দেখা যায় তা ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে দেখানো ৭ নম্বর বিপদ সংকেত কিছু হচ্ছে না। উল্টো স্বাভাবিক দিনের মতোই আবহাওয়া বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে মংলার বাসিন্দা আবুল শাকিল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সাধারণ আমাদের এলাকায় ৩ ও ৪ নম্বর বিপদ সংকেত দেখানো হলেই বৃষ্টি হয়। মোকাবিলা করা সম্ভব হয় না। কিন্তু এখন ৭ নম্বর বিপদ সংকেত অনুযায়ী তো কিছুই হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত সব স্বাভাবিক রয়েছে।’
তবে স্থানীয় অভিজ্ঞ রজ্জব আলী বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আকাশে ধীরে ধীরে ভারী কালো মেঘ জমছে। এইটাই মূল লক্ষণ। এছাড়া গরম বাতাসও বয়েছে। কিছুক্ষণ পর আবার হয়তো ঠাণ্ডা বাতাস বইতে পারে। তাই বলা চলে আস্তে আস্তে ঘূর্ণিঝড় ফণী আঘাত হানার লক্ষণ কিছুটা হলেও দেখা যাচ্ছে।’
উল্লেখ্য, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে এবং কক্সবাজার সমূদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার সমুদ্রবন্দরের সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারে এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।