বেনাপোল বন্দর দিয়ে বৈধপথে পণ্যবাহি ট্রাকে দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান চোরাচালান প্রতিরোধে অবশেষে বেনাপোল বন্দর কার্গোভেহিকেল টার্মিনালে স্থাপন করা হয়েছে অত্যাধুনিক স্ক্যানার মেশিন।
আগামী মাসের প্রথম দিকে শুরু হবে এর কার্যক্রম। এখন পরীক্ষামূলক ট্রায়াল চলছে। অত্যাধুনিক এই স্ক্যানার পণ্যবাহী ট্রাকে লুকিয়ে রাখা যেকোনো ধাতব পদার্থ বা অবৈধ পণ্য শনাক্ত করতে সক্ষম। এটি স্থাপন করা হলে ব্যবসায়ীদের হয়রানি যেমন কমবে, তেমনি বাণিজ্য নিরাপত্তা বহুগুণ বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, স্থলপথে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য হয় বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে। বেনাপোল বন্দরের গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার ইতিমধ্যে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শূন্যরেখায় কার্গোভেহিকেল টার্মিনাল স্থাপন করেছে। তবে বন্দরে স্ক্যানিং কার্যক্রম না থাকায় চোরাকারবারিদের কারণে সম্প্রতি এ পথ এখন অরক্ষিত হয়ে পড়েছে।
স্বর্ণ, মাদকসহ অবৈধ পণ্য ভারত অংশে আটক হলেও স্ক্যানিং মেশিনের অভাবে এপারের নিরাপত্তাকর্মীরা অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছিলেন।
অবশেষে সরকার বেনাপোল বন্দরে বাণিজ্য নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা ফেরাতে কার্গোভেহিকেল টার্মিনালে স্ক্যানিং মেশিন স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অর্থায়নে কেনা হয় ছয়টি স্ক্যানার। যার একটি স্থাপন করা হয় বেনাপোল বন্দরে। পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশদ্বারে শূন্যরেখায় অত্যাধুনিক স্ক্যানার স্থাপনের কাজ শেষ প্রান্তে।
১৬ জন দক্ষ প্রকৌশলী কাজ করছে স্ক্যানার স্থাপনে। এর মধ্যে ১২ জন রয়েছে চাইনিজ প্রকৌশলী ও ৪ জন দেশিয়। জানুয়ারীতে প্রথম সপ্তাহে শুরু হতে পারে স্ক্যানিংয়ের কার্যক্রম। এখন চলছে পরীক্ষামূলক। সীমান্ত অতিক্রমের সময় সন্দেহভাজন পণ্যবাহী ট্রাক এ স্ক্যানার মেশিনে তোলা হবে। ফলে ট্রাকটিতে ঘোষণা অতিরিক্ত কোন পণ্য বা লুকিয়ে রাখা যে কোন ধাতব পদার্থ থাকলেই সহজেই সনাক্ত করা যাবে।
পণ্যবাহী ট্রাক চালক রহিম জানান, বেনাপোল বন্দরে পূর্বের একটি স্ক্যানিং মেশিন থাকলেও সেটি প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। সীমান্ত পথ কড়াকড়ি থাকায় এখন চোরাকারবারিরা কৌশলে আমদানি, রফতানি পণ্যবাহী ট্রাকে বৈধ পণ্যের সাথে স্বর্ণ, মাদক পাচার হচ্ছে। নতুন স্ক্যানার মেশিন চালু হলে বৈধ পথে চোরাচালান বন্ধ হবে। এতে ট্রাক চালকেদের হয়রানি বন্ধ হবে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক মোঃ মেহেরুল্লাহ জানান, ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে বন্দরে স্ক্যানিং মেশিন চালু হচ্ছে। এতে বানিজ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরের সহকারি পরিচালক ফয়সাল আহসান সজিব জানান, স্ক্যানার স্থাপনের ফলে বানিজ্যে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা বাড়বে। দ্রুত পণ্য আমদানিতেও ভূমিকা রাখবে। আমরা আশা করছি, জানুয়ারিতে এটা চালু হবে।