ঢাকা-খুলনা-বেনাপোল রুটে যাত্রী সেবা বৃদ্ধিতে ঢাকা-কাশিয়ানী জংশন হয়ে খুলনা ও বেনাপোল রুটে নতুন দুই জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন থেকে যাত্রীবাহী ‘রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরে বিকাল সাড়ে ৪ টায় ট্রেনটি যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। নতুন এ ট্রেনটি পদ্মা সেতু হয়ে মাত্র পৌনে চার ঘণ্টায় বেনাপোল থেকে ঢাকায় পৌঁছাবে।
এদিকে রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ায় এরুটে পাসপোর্টধারী যাতায়াত বৃদ্ধি ও আগামীতে বানিজ্য ক্ষাতেও ভুমিকা রাখবে বলছেন সংশিষ্টরা।
রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস’ ট্রেনটি ঢাকা থেকে সকাল পৌনে ১১টায় ছাড়বে এবং বেলা ২টা ২৫ মিনিটে বেনাপোল পৌঁছাবে। আবার বেনাপোল থেকে বিকেল ৩টা ২৫ মিনিটে ছেড়ে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাবে। যশোর জংশন, নড়াইল, কাশিয়ানী জংশন এবং ভাঙ্গা জংশনে থেমে যাত্রী ওঠাবে এ ট্রেন।
রেল ষ্টেশন সুত্রে জানায়, ট্রেনটিতে ৭৬৮ আসনের বিপরীতে প্রথমদিনে ৯২৭ জন যাত্রী পরিবহন করেছে। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত শোভন চেয়ার ৪৪৫ টাকা, স্নিগ্ধা ৭৪০ টাকা, এসি সিট ৮৮৫ টাকা এবং এসি কেবিন ১,৩৩০ টাকা। প্রতিটি শ্রেণির ভাড়ার সঙ্গে সরকার নির্ধারিত ভ্যাটও প্রযোজ্য হবে।
বেনাপোল রেল স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান জানান, বেনাপোল-ঢাকা-বেনাপোল রুটে সপ্তাহে ছয় দিন চলাচল করবে এ ট্রেন, সোমবার থাকবে সাপ্তাহিক ছুটি। নতুন রুটের মাধ্যমে ঢাকার সঙ্গে বেনাপোলের যোগাযোগ আরও দ্রুত ও সহজ হবে। বর্তমানে ট্রেনটি ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল-ঈশ্বরদী হয়ে বেনাপোল পৌঁছাতে ৭ ঘণ্টা ৩০ মিনিট সময় লাগলেও পদ্মা সেতু রুটে এ সময় চার ঘণ্টা কমে এসেছে।
বেনাপোল বন্দর চেকপোষ্ট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আজিজুল হক জানান, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যে পাসপোর্টধারী যাতায়াত বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম হয়ে থাকে এর বড় একটি অংশ হয় বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে। প্রতিবছর এর পরিমান প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। আর বছরে ২০ লাখের মত পাসপোর্টধারী যাতায়াত করে। দুই খাতে সরকারের রাজস্ব আসে ১০ হাজার কোটির কাছাকাছি। যা দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে৷ যোগাযোগ খাত উন্নয়নে গণমানুষের দাবির মুখে অবশেষে সরকার বেনাপোল রুটের গুরুত্ব বিবেচনা করে যাত্রীসেবা বাড়াতে বেনাপোল-ঢাকা রুটে প্রথমে বেনাপোল এক্সপ্রেস চালু করে। এবার এই সেবা আরো এক ধাপ বৃদ্ধিতে ঢাকা -কাশিয়ানী জংশন হয়ে খুলনা ও বেনাপোল রুটে নতুন দুই জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করলো। রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস চালুর ফলে বেনাপোলবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছিল। এটি তাদের ভোগান্তি কমিয়েছে এবং ঢাকার সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগের সুযোগ তৈরি করেছে।
বেনাপোল আমদানি, রফতানি সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জানান, মাত্র সাড়ে ৪ ঘন্টায় ঢাকা থেকে বেনাপোল পৌছাবে রেল। যা বেনাপোল এক্সপ্রেসে আগে সময় লাগতো সাড়ে ৯ ঘন্টা। যাত্রার সময় সীমা কমে আসায় এ রুটে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত আগামীতে আরো বাড়বে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সামসুর রহমান জানান, বেনাপোল বন্দর থেকে ঢাকা বা অন্যান্য গন্তব্যে পণ্য পরিবহনের মাধ্যম কেবল সড়ক পথ। তবে খুব দ্রুত রেল রুটে পণ্য পরিবহন শুরু হবে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এতে কম সময় ও সাশ্রয়ে পণ্য পরিবহনের সুযোগে এরুটে আমদানি-রফতানি বাড়বে।