নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে পরকীয়া প্রেমের জেরে খালিদ বিন লিশাদ (২২)’ কে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে দুইজনকে গতকাল ঢাকার মোহাম্মদপুর থানাধীন কাটাসুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর এলাকার চান্দের হাট বাজারের তাড়াঠেনা এলাকার রুস্তম আলীর ছেলে মো. ওয়াহিদ (৪০) ও তার স্ত্রী নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের মুশরুত পানিয়াল পুকুর এলাকার আব্দুল হাইয়ের মেয়ে মিনারা খাতুন মিনু(৩০) ও মিনারার ভাই রব্বানী।
নিহত লিশাদ মুশা পাকার মাথা সফি মিয়াপাড়া এলাকার মবেদুল হকের ছেলে ও কিশোরগঞ্জ কারিগরি বিএম কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে বলে জানা যায়। সে পড়লেখার পাশাপাশি একটি ক্যাবল অপারেটরের(ডিস) কোম্পানিতে কাজ করছিলেন।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, লিশাদের সাথে মিনারা কারিগরি বিএম কলেজে একই সাথে পড়তেন। সেসময়ে তাদের দুজনের মধ্যে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে লিশাদ মিনারার বাড়িতে যাতায়াত করতেন। এসময়ে তাদের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। এতে লিশাদ মিনারাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে মিনারার আগের স্বামী থাকায় মিনারা তাকে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। পরে লিশাদ মিনারাকে জোর করে রংপুরে গিয়ে আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেন। বিয়ের পরে মিনারার আগের স্বামীকে তালাক দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এতে মিনারা শারীরিক ও মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন।
গত ৯ নভেম্বর (শনিবার) লিশাদ ওয়াজ মাহফিল শুনতে যাওয়ার কথা বলে নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে মিনারার বাড়িতে যায়৷ মিনারা বাড়ির পাশের বাজারের দোকান থেকে ঘুমের ওষুধ কিনে এনে লিশাদকে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ায়। লিশাদ দুধ খাওয়ার কিছুক্ষণ পরে অচেতন হয়ে গেলে তাকে ঘরের মেঝেতে পুতে রাখেন। পরেরদিন সকালে সে আবার মাটি সরিয়ে দেখেন সে মারা গেছেন। পরে মিনারা তার বাবাকে সিমেন্ট বালু এনে তাকে পুতে রাখা স্থান ঢালাই দিতে বললে মিনারার বাবা কারণ জানতে চায়। এতে মিনারা তার বাবাকে সব খুলে বললে তার বাবা গভীর রাতে বাড়িতে থাকা বস্তায় ভরে মিনারার চাচাতো ভাইয়ের সহায়তায় বাড়ির পাশের নদীতে লিশাদের মরদেহ ফেলে দেয়। পরে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের সাইফুল এলাকার চাড়াল কাটা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আশরাফুল ইসলাম আরও বলেন, লিশাদের মরদেহ উদ্ধারের পরে আমরা মিনারার ভাই রব্বানীকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে তিনদিনের রিমান্ডে নিয়েছি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
তিনি বলেন, র্যাব মিনারা ও তার স্বামীকে গ্রেফতার করেছে। মিনারার সাথে লিশাদের পরকীয়ার কারণে তাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে তারা।