লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের দরপত্র (টেন্ডার) জমাদানে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে আটক যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম জুলহাসকে(৪০) ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
বুধবার(৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কোন অভিযোগ না দেয়ায় তাকে ছেড়ে দিয়েছে সদর থানা পুলিশ। এর আগে একই দিন দুপুরে সদর হাসপাতাল চত্ত্বর থেকে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে সেনা সদস্যরা।
যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম জুলহাস লালমনিরহাট পৌরসভা গেট এলাকার বাসিন্দা। তিনি লালমনিরহাট পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ও জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আড়াইশত শয্যা বিশিষ্ট লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের রোগীদের পথ্য সামগ্রী সরবরাহসহ ৩টি গ্রুপে সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য দরপত্র আহবান করে হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. আব্দুল মোকাদ্দেম। বিজ্ঞাপ্তি অনুযায়ী বুধবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২ টার মধ্যে তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের নিদিষ্ট দরবক্সে দরপত্র জমা দিতে বলা হয়।
হাসপাতালের দরপত্র জমাদানে যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে দরপত্রবক্স তথা হাসপাতাল চত্ত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ। সেই পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে সকাল থেকে অন্যদের দরপত্র জমাদানে বাঁধা দিয়ে আসছিলেন লালমনিরহাট পৌর যুবদলের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম জুলহাস। এ সময় দরপত্র গ্রহনকারী কর্তৃপক্ষকেও লাঞ্চিত করেন তিনি।
অন্য দরদাতারা দরপত্র জমাদান করতে না পেয়ে সেনা সদস্যদের খবর দেন। খবর পেয়ে সেনাসদস্যরা এসে ধাওয়া দিয়ে যুবদল নেতা জুলহাসকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন হলে ২৪ জন দরদাতা তাদের দরপত্র জমা দেন।
এ ঘটনায় পরবর্তিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আটককৃত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে কোন ধরনের অভিযোগ দায়ের করেনি। একই সাথে হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম জুলহাসকে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেয় সদর থানা পুলিশ।
দুপুরে লালমনিরহাট জেলা যুবদলের সভাপতি আনিছুর রহমান আনিছ বলেন, পৌর যুবদল আহবায়ক জুলহাস দৌড়ে পালানোর কারনে তাকে আটক করেছে। এটি মুলত আপোষযোগ্য বিষয়। পত্রিকায় না লেখাই ভাল।
দুপুরে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সামিরা হোসেন বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য ও বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেছিল জুলহাস নামে একজন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সেনাবাহিনীর সহায়তা চেয়ে তাদের ফোন করা হলে তারা এসে বিশৃঙ্খলাকারীকে আটক করেছে।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আব্দুল কাদেরকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
দুপুরে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম বলেন, দরপত্র দাখিল নিয়ে হট্টগোল করার চেষ্টা করলে জুলহাস নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তাকে ছেড়ে দেয়ার পরে সন্ধ্যায় তিনি আবার বলেন, আটককৃত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কোন ধরনের লিখিত অভিযোগ দেননি এবং হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আটককৃতের বিরুদ্ধে ধর্তব্য কোন অপরাধ পাওয়া যায়নি। তাই জুলহাসকে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।