স্বৈরাচার রুখতে চাই পিআর পদ্ধতির নির্বাচন: মোসাদ্দেক বিল্লাহ

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-10-27 16:34:52

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেছেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরেরও অধিক সময় অতিবাহিত হলেও আমরা কাঙ্খিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার পাইনি। যারাই ক্ষমতাসীন ছিলো তারাই দেশের সম্পদ লুটপাট করে আঙ্গুল ফুলে বটগাছে পরিণত হয়েছে। জনগণের অধিকারকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে।

তিনি বলেন, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ জনগণের জন্যই রাজনীতি করে তা এই বিপ্লবে আবারো প্রমাণিত হয়েছে। বিদ্যমান ঘুনে ধরা রাজনীতি ও দেশে চলমান সংস্কারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পুনরায় যেনো কেউ স্বৈরাচারের ভূমিকায় না আসতে পারে সেজন্য চাই পিআর পদ্ধতির নির্বাচন। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চলমান। এই নির্বাচন পদ্ধতি চালু হলে দেশে নির্বাচন কেন্দ্রীক সংকট দূর হবে।

শনিবার (২৭ অক্টোবর) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জের পাগলা বাজারস্থ কাজী খোরশেদ প্লাজার সামনে কুতুবপুর ইউনিয়ন শাখা আয়োজিত বিশাল গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, তাদের দলীয় লোকদের অবাধ দুর্নীতি, অপরাজনীতি এবং দুঃশাসনের জন্য দেশ বারংবার পিছিয়ে গিয়েছে। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও আরব আমিরাতের মতো দেশগুলো আমাদের সমসাময়িক সময়ে স্বাধীনতা অর্জন করলেও তারা আমাদের থেকে সর্বদিক দিয়ে বহুদূর এগিয়ে গিয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের চেষ্টা কঠোরহস্তে রুখে দিতে হবে।

প্রিন্সিপাল মাদানী বলেন, জনগণ তাদের মিথ্যার ফুলঝুড়িতে বারবার প্রতারিত হয়েছে। তারা নিজেদের স্বার্থে দেশের সংবিধান, প্রশাসন ও আমলাদের নিজের মতো করে সংস্কার করেছে। এতোদিন জনগণ সব মুখবুঝে মেনে নিলেও গত ৫ আগস্টের বিপ্লব দেশকে আবার আশার আলো দেখিয়েছে।

তিনি বলেন, ৫ আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাতের পর দেশে নতুন করে ফ্যাসিস্ট তৈরির সুযোগ যাতে না পায় সকলকে সজাগ থাকতে হবে। ছাত্রদের রক্ত মাড়িয়ে নতুন চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, লুটতরাজকারীরা এখনো বুক ফুলিয়ে হাঁটছে।

তিনি আরও বলেন, যারাই মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজী করবে তাদেরকে বেঁধে রেখে প্রশাসনকে খবর দিবেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নায়েবে আমীর এই বিপ্লবের অন্যতম মহানায়কের ভুমিকা পালন করেছে। আমাদের অনেক কর্মীকে শহিদ হয়েছে। বিপ্লব পরবর্তীতে আমাদের কর্মীবাহিনী মন্দির ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পাহারা দিয়েছিলো, ট্রাফিক দায়িত্বের পাশাপাশি ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট সংস্কারে ব্যাপক কাজ করেছে।

প্রধান বক্তা তার বক্তব্যে বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য স্বৈরাচার সরকার দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত হত্যা, লুটপাট, গুম, খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত ছিলো। এমন কোনো অপকর্ম ছিলো না যা বিগত সরকারের সন্ত্রাসী বাহিনীরা করেনি। স্বৈরাচারের সহযোগী এবং জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, বিগত দিনগুলোতে যারা দুর্নীতি ও লুটপাট করেছে তারা যেই দলেরই হোক না কেনো তাদের এমন শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ দুর্নীতি করার সাহস না পায়। গণহত্যার সাথে জড়িতদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।

ছাত্র জনতার গণ-বিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, সংখ্যানুপাতিক (চজ) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিসহ ৯দফা দাবীতে, সংগঠনের কুতুবপুর ইউনিয়ন শাখা সভাপতি হাজী মোহাম্মদ ওয়াসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মুহাম্মদ মামুনুর রশিদের সঞ্চালনায় গণসমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা সেক্রেটারি জনাব মুহাম্মাদ জাহাঙ্গীর কবির। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সংগঠনের ফতুল্লা থানা শাখা সভাপতি মুহাম্মাদ শফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারি হাজী মুহাম্মাদ আমান উল্লাহ, ইমাম আহমেদ, মুহাম্মাদ মাসুদুর রহমান, মুহাম্মাদ বেলাল হোসাইন, বামুক ছদর মাওলানা মুফতি আবু মুসা নেছারি, হাফেজ মাওলানা হাসান শরীফ, মুফতি জহিরুল ইসলাম কাসেমী, হুসাইন মুহাম্মাদ মুন্না, মুহাম্মাদ রায়হান হোসাইন, নুরে আলম সবুজ সহ কুতুবপুর ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড শাখা নেতৃবৃন্দ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর