কেউ কথা রাখেনি, স্বেচ্ছাশ্রমেই ভরসা

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম | 2024-10-18 17:28:07

ভৌগলিক অবস্থানে কুড়িগ্রাম জেলার শহর ঘেঁষা পৌরসভা এলাকা। ৭ বছর আগের বন্যায় ১ কিলোমিটার সড়ক ভেঙ্গে দীর্ঘদিনের ভোগান্তিতে প্রায় ৮ হাজার মানুষ। সংস্কারের আশ্বাসে ভোগান্তি লাঘবের অপেক্ষায় ছিলো কয়েকটি গ্রামের মানুষ।

কিন্তু কর্তৃপক্ষের কেউ কথা রাখেনি। এলাকাবাসীরাই এবার নেমে পড়েছেন রাস্তা সংস্কারের কাজে। নদীর নিকটবর্তী ঐ রাস্তাটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হিসেবেও ভূমিকা রাখে।

কুড়িগ্রাম পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ডের ভেলাকোপা মৌজার হানাগড়ের মাথা থেকে প্রায় ১ কিমি সড়ক বন্যায় ভেঙে যায়। এতে করে ভেলাকোপা ওয়ার্ডের চারটি গ্রাম ও একটি ইউনিয়নের প্রায় ৮ হাজার মানুষ যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে পড়েন চরম বিপাকে।

তৎকালীন পৌর মেয়র ও সাবেক মেয়রকে অভিযোগ ও অনুরোধ করলেও সড়কটির কোন ব্যবস্থা নেননি। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ও মৌখিক আবেদন করে যথাযথ ব্যবস্থা না পাওয়ায় নিজেরাই সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয়রা।

এর কিছুদিন আগে গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে। সেটিও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রায় প্রতিদিন যাতায়াতকারীরা দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। এমন অবস্থা দেখেও পৌর কর্তৃপক্ষ নিরব থাকায় বাধ্য হয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণে এগিয়ে আসেন এলাকাবাসীরা। গত তিন দিন ধরে তারা নিজেদের পরিশ্রম ও অর্থ দিয়ে বাঁধটি নির্মাণ করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ মাজেদ বলেন, নির্বাচন এলে জনপ্রতিনিধিরা হাজারো প্রতিশ্রুতি দেয়। নির্বাচিত হলে তারা জনগণের আর খোঁজ নেয় না। কুড়িগ্রাম পৌর শহরের চেয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে রাস্তাগুলো বর্তমানে অনেক ভালো। পৌর শহরে বসবাস করে সকল পৌর টোল দিলেও পৌরসভার সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত আমরা।

অটোরিকশা চালক মোঃ হায়দার আলী বলেন, প্রতিদিন এখানকার হাজারো মানুষের একমাত্র ভরসা এই সড়কটি। বৃদ্ধ শিশুদের নিয়ে খুব কষ্ট করে এ সড়কে চলাচল করতে হয়। অসুস্থ রোগী নিয়ে স্বজনরা তো পড়ে চরম বিপাকে। অথচ কোনো পৌর মেয়র এ রাস্তাটি নিয়ে কাজ করলো না। শেষে নিজেদের কষ্ট নিজেদের দূর করতে হচ্ছে।

স্বেচ্ছাসেবক মোঃ নুর ইসলাম নুরু বলেন, আমরা নাম মাত্র পৌর শহরে বসবাস করছি। সকল প্রকার রাজস্ব দিয়ে আসলেও আমরা পৌরসভার সকল সুযোগ সুবিধা থেকে থেকে বঞ্চিত। দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ কিংবা এ্যাম্বুল্যান্সের প্রয়োজন হলে সড়ক না থাকায় আসতে পারে না। গত ৭ বছর ধরে এ অবস্থা চলছে। জনপ্রতিনিধিরা কথা দিয়ে কেউ কথা রাখেনি। বাধ্য হয়ে আমরা গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি নির্মাণ করছি। আশা করছি আর দু'একদিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে।

স্থানীয় সাবেক কমিশনার জমসেদ আলী টুংকু মিয়া বলেন, এ বিষয়ে বারবার কাগজ পত্র নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে কিন্তু কোন সমাধান না পাওয়ায় গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর