সড়ক ব্যবস্থা সংস্কারে 'সড়ক নিরাপত্তা আইন' প্রণয়নের দাবি

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-10-17 15:05:02

বর্তমান বাস্তবতার আলোকে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন 'সড়ক নিরাপত্তা আইন' প্রণয়ণের দাবি জানিয়েছে রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানিয়েছেন হেলথ সিস্টেম রিসার্চ ডিভিশন এন্ড আরটিআই প্রিভেনশন এন্ড রিসার্চ ইউনিটের পরিচালক সেলিম মাহমুদ চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে সেলিম মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত ডিকেড অব একশন ফর রোড সেফটি ২০২১-২০৩০ এ উল্লেখিত বিষয়সমূহ বিশেষ করে সেফ সিস্টেম এপ্রোচ অন্তর্ভুক্ত করার আলোকে নতুন সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ণ করতে হবে।

তিনি জানান, এই আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সড়ক ব্যবহারকারীদের জীবনের নিরাপত্তা; রোডক্র্যাশ জনিত মানুষের মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের হার হ্রাস; টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৩.৬ ও ১১.২ অর্জন ও রোডক্র্যাশ হ্রাসের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন ও পরিবেশের উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।

বাংলাদেশের প্রচলিত সড়ক পরিবহন আইন- ২০১৮ এ বেশকিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান আইনটিতে মূলত পরিবহন ব্যবস্থার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এতে প্রচলিত সড়ক ব্যবহারকারীর আচরণগত ঝুঁকিসমূহ যেমনঃ বেপরোয়া গতি, হেলমেট ব্যবহার না করা, মদ্যপ বা নেশাগ্রস্থ অবস্থায় গাড়ী চালানো, সীটবেল্ট বা চাইল্ড রেস্ট্রিয়েন্ট ব্যবহার না করা ইত্যাদি বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা যথাযথভাবে উল্লেখ করা হয়নি।

প্রচলিত আইনে জাতিসংঘ ঘোষিত ডিকেড অব একশন ফর রোড সেফটি ২০২১-২০৩০ এ উল্লেখিত মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট বা বহুমুখি পরিবহন ব্যবস্থা ও ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা, নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো, নিরাপদ যানবাহন, নিরাপদ সড়ক ব্যবহারকারী এবং রোডক্র্যাশ পরবর্তী সাড়া প্রদান ও ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি বলে জানান তিনি।

এ ছাড়াও বর্তমান আইনে ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক ব্যবহারকারী যেমন: পথচারী, সাইক্লিস্ট, শিশু এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সুরক্ষার বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে। যথাযথ মানদন্ড অনুসরণ করে রোড ক্র্যাশের তদন্ত করা এবং রেকর্ড সংরক্ষণ করার বিষয়ে বর্তমান আইনি কাঠামোতে কোন বিধান রাখা হয়নি বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা একটি মন্ত্রণালয় কিংবা একটি দপ্তরের একার কাজ নয়। এতে অনেকগুলো মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তরের সক্রিয় অংশগ্রহণ যেমন দরকার তেমনি প্রয়োজন লীড এজেন্সী নির্ধারণ করা, যা আইনী কাঠামোর দ্বারা স্বীকৃত হতে হবে। বর্তমান আইনি কাঠামোতে সড়ক নিরাপত্তা কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কোন লীড এজেন্সি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কিছু উল্লেখ নেই।

সংবাদ সম্মেলনে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, শুধু আইন করলেই হবে না, আইনের বাস্তবায়ন করতে হবে। যেসকল আইন আছে তার কিছুটাও যদি বাস্তবায়ন হতো তাহলেও কিছুটা উন্নতি হতো। সড়কে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য জাতিসংঘ যে মডেল দিয়েছে তার আলোকে আমরা নতুন 'সড়ক নিরাপত্তা আইন' প্রণয়নের দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইপিআরবি এর রোড সেফটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপক কাজী বোরহান উদ্দিন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও অ্যান্ড প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচএম বজলুর রহমান, ব্র্যাক সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রোগ্রাম ম্যানেজার এম খালিদ মাহমুদ, স্টেপস্ টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্ট এর নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অফ বাংলাদেশ প্রকল্প কর্মকর্তা মোঃ ওয়ালী নোমান, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি প্রকল্প কর্মকর্তা মোঃ শরাফত-ই-আলম, ঢাকা আহছানিয়া মিশনের প্রকল্প সমন্বয়কারী শারমিন রহমান, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক মোঃ বজলুর রহমানসহ কোয়ালিশনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর