স্বপ্ন বোনায় ব্যস্ত খুলনার চাষিরা

খুলনা, জাতীয়

মানজারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, খুলনা, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 18:00:08

হালিম শেখ বটিয়াঘাটা উপজেলার বরইতলা এলাকার কিসমত ফুলতলা গ্রামের একজন কৃষক। দিনের আলো ফুটতে না ফুটতেই ৮ বছর বয়সী ভাইপো লিটন শেখকে নিয়ে জমিতে নেমে জমি প্রস্তুতের কাজ করছেন। ট্রাক্টর দিয়ে জমি প্রস্তুত, আগাছা পরিষ্কার করছেন এখন। এরপর বোরো চারা রোপণ করবেন তিনি। সোনালী ধানের ভরপুর স্বপ্নে বিভোর হয়ে তিনি চারা রোপণ করবেন।

জানা যায়, খুলনা জেলার নয়টি উপজেলার শহর লাগোয়া ও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে কাদা মাটিতে বুনতে শুরু করেছে কৃষকের স্বপ্ন। এ অঞ্চলে মাঘ মাসেও মৃদু শীত বইছে। ফসল ফলানোর প্রাথমিক কাজ করতে শীত উপেক্ষা করেই ইরি-বোরো চারা রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষক-কৃষাণীরা। বিগত মৌসুমে খুলনার উপজেলাগুলোতে ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় এবারও বেশ ফুরফুরে মেজাজ নিয়ে বোরো আবাদে নেমেছেন তারা। কৃষকদের পাশাপাশি কৃষাণীরাও নেমেছেন কাজে।

আগামীর খাদ্য সংগ্রহের নতুন স্বপ্ন নিয়ে বোরো আবাদে খুলনার চাষিরা কোমর বেঁধে মাঠে নামছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমি প্রস্তুত, আগাছা পরিষ্কার ও ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কৃষক পরিবারগুলো। বিরামহীন গতিতে চলছে বোরো রোপণের কাজ। তবে দেখা দিয়েছে শ্রমিক ও চারা সংকট। বিশেষ করে বর্গাচাষিদের মধ্যে বীজ-চারার সঙ্কট দেখা গেছে।

সরেজমিনে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলায় ঘুরে কৃষকদের কাছ থেকে জানা যায়, হালকা শীতের এ আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও সার কীটনাশকের মূল্য কৃষকের ক্রয় ক্ষমতার ভেতরে থাকলে চাহিদা অনুযায়ী ফলন পাওয়া সম্ভব হবে। এছাড়াও বর্গাচাষিদের মধ্যে বীজ-চারার সংকট কমাতে সরকারি পর্যায় থেকে সহযোগিতার আশা প্রকাশ করেন চাষিরা।

বটিয়াঘাটা উপজেলার বর্গা চাষি শহীদুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'আমার নিজের জমি না থাকায় চারা ক্রয় করতে হচ্ছে। সময়মতো বোরো বীজ রোপণের জন্য আমাদের কম মূল্যে বীজ দিলে ভালো হয়।'

ডুমুরিয়া উপজেলার আরেক চাষি শংকর মৃধা বার্তা২৪.কমকে জানান, বোরো আবাদের জন্যে জমিতে কিছু পরিমাণে অতিরিক্ত বীজ বপন করতে হয়। এতে ভালো ফলন পাবার সম্ভাবনা থাকে।

খুলনা জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, খুলনা জেলায় গত মৌসুমে ৫১ হাজার ৮২৪ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে ৫৮ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়। এ মৌসুমে ৫৮ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদেও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আরও বেশি জমি আবাদ হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। খুলনার ডুমুরিয়ায় সব থেকে বেশি বোরো চাষ করা হয়।

খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো: আব্দুল লতিফ বলেন, 'কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদেরকে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অধিক ফলনের কলা-কৌশলও কৃষকদের বোঝানো হচ্ছে। কৃষকদের জন্য সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা বিদ্যমান। যে কারণে বোরোর ফলনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর