হুট করে ও অকারণে মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে, মুড অফ হয়ে থাকছে, কারোর সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করছে না- এমন সমস্যা কমবেশি সবারই হয়। বিশেষত বছরের একটি নির্দিষ্ট সময় অর্থাৎ শীতকালে যার প্রভাব দেখা দেয় অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে বেশ অনেকখানি বেশি। এমনটা হয়ে থাকে ‘উইন্টার ব্লুজ’ এর কারণে।
শীতকাল শুরুর আগে ও পুরো শীতকাল জুড়ে আবহাওয়া অনেকটা থম ধরে থাকে। এ সময়ে পর্যাপ্ত রোদের আলোর দেখাও পাওয়া যায় না, সাথে আবহাওয়ার উষ্ণতা কমে যায় অনেকখানি। আবহাওয়া ও পারিপার্শ্বিকতাজনিত বিভিন্ন কারণ মনের উপর প্রভাব ফেলে মনকে বিষণ্ণ করে তোলে। যাকে বলা হচ্ছে উইন্টার ব্লুজ।
এ সময়ে সেরোটোনিন হরমোন ও মেলাটোনিনের মাত্রার তারতম্য দেখা দেয়। যা এই মন খারাপভাবকে আরও দীর্ঘায়িত করে। ফলে খুব সহজেই বিরক্তিবোধ, অলসতা, মুড অফ, ক্লান্ত ও কাজ করার প্রতি অনীহা দেখা দেয়।
এই উইন্টার ব্লুজ কাটাতে কাজ করবে পাঁচটি চমৎকার খাদ্য উপাদান। যা একইসাথে শরীর ও মনকে ভালো রাখবে।
পছন্দসই বাদাম খুব চমৎকারভাবেই মনকে ভালো করে দেবে। আখরোট, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম কিংবা পেস্তাবাদাম- সকল বাদাম থেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণ ট্রিপটোফেন (Tryptophan) পাওয়া যায়, যা অন্যতম একটি অ্যামিনো অ্যাসিড। এই অ্যামিনো অ্যাসিডটি সেরোটনিন নিঃসরণের মাত্রা বৃদ্ধি করে, যা মুডকে ভালো করতে কাজ করে।
সুপার ফুড খ্যাত ডিমকে শারীরিক সুস্থতার জন্যে প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। এবারে বলতে হয় শুধু শারীরিক নয়, মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্যেও ডিম অনেকখানি ভূমিকা পালন করতে পারে, তাই শীতকালীন সময়ে অন্যান্য খাবারের সাথে ডিমকেও রাখতে হবে মনে করে। এতে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন-ডি মন খারাপভাব কাটাতে কাজ করে। রোদের আলো থেকেও ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়। ফলে শরীর একই পুষ্টি উপাদান ‘ভিটামিন-ডি’ ডিম থেকে পেলেও মন খারাপভাবকে কাটাতে কাজ করবে।
কিশমিশ, ফিগ বা খেজুরের মতো শুকনো ফল মনকে ভালো করতে করবে। এই খাদ্য উপাদানে ট্রিপটোফেনের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ ম্যাগনেসিয়ামও থাকে। গবেষণা জানাচ্ছে ম্যাগনেসিয়াম মানসিক চাপ ও বিষণ্ণতাভাবকে প্রশমিত করে মুড ভালো করে।
হুট করে মন খারাপ লাগলে, অস্থিরতা কাজ করলে খুব সহজ ও মজার একটি সমাধান আছে হাতের কাছেই, সেটা হলো চকলেট। বিভিন্ন ক্যাটাগরির চকলেটের মাঝে ডার্ক চকলেট এখানে প্রাধান্য পাবে সবচেয়ে বেশি। কারণ ডার্ক চকলেটে ট্রিপটোফেনের পরিমাণ থাকে সবচেয়ে সবচেয়ে বেশি। এছাড়া এতে থাকা স্বল্প মাত্রার চিনি ও ফ্যাটও মনকে ভালো করতে ভূমিকা রাখে।
যারা ঝাল খাবার খেতে ভালোবাসেন তাদের জন্য সুখবর। বেশি করে মরিচ গুঁড়া দেওয়া ফুচকা কিংবা চটপটিতেই মন ভালো হয়ে যাবে সহজেই। মরিচে থাকা ক্যাপসাইসিন (Capsaicin) হলো একটি অ্যাকটিভ উপাদান যা মরিচে ঝাল স্বাদ আনে। এই ঝাল স্বাদ এন্ড্রোফিনস (Endrophins) নিঃসরণ করে। এই হরমোনটি শারীরিক ব্যথাভাব ও মন খারাপভাব কমাতে কাজ করে।
আরও পড়ুন: