সারাদিন রোজা থাকার পর স্বাভাবিকভাবেই ইফতারিতে অনেক বেশি খাবার একসাথে খাওয়ার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন অনেকেই। ফলাফল স্বরূপ খেয়ে ফেলেন তেলেভাজা, অধিক চিনিযুক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার।
যা শুধু ক্ষুধাভাব দূর করতেই কাজ করে, স্বাস্থ্যের উপকারে আসে না। এছাড়া এ ধরনের খাবার গ্রহণের ফলে খুব সহজেই বুক জ্বালাপোড়া, গ্যাসভাব দেখা দেওয়া, পেট ফুলে যাওয়ার মতো কষ্টদায়ক সমস্যাগুলো দেখা দিতে থাকে।
অন্যদিকে রমজান মাস জুড়ে সঠিক খাদ্যাভ্যাস স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। এর মাধ্যমে শারীরিক বেশ কিছু সমস্যা কমে যায় লক্ষণীয়ভাবে। ইফতারিতে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার থাকলে পরবর্তী রোজা রাখার ক্ষেত্রে সুবিধা হয় ও শরীর সেইভাবে প্রস্তুত হয়।
আজকের এই ফিচার থেকে তাই জেনে নিন ইফতারিতে কী খাবেন ও এড়িয়ে যাবেন।
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার
আমাদের শরীরে বহু প্রত্যাঙ্গের পরিপূর্ণ কার্যকারিতার জন্য প্রয়োজন হয় পটাশিয়াম। দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকার ফলে শরীরে কিছুটা হলেও পটাশিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়। যা থেকে ক্লান্তিভাব ও শরীরের বিভিন্ন অংশের পেশীতে ব্যথাভাবের সৃষ্টি হয়। পটাশিয়ামের ঘাটতি দূর করতে ও পরবর্তী দিনের জন্য পর্যাপ্ত পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারে প্রাধান্য দিতে হবে ইফতারির মেন্যুতে। মটরশুঁটি, গাড় সবুজ শাক, আলু, দই, অ্যাভোকাডো, তরমুজ, মাশরুম ও কলা রাখতে হবে ইফতারির মেন্যুতে। পুষ্টির পাওয়ার হাউজ খেজুর থেকেও পাওয়া যাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়াম।
পান করতে হবে পর্যাপ্ত পানীয়
এটা তো বলাই বাহুল্য যে ইফতারিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানীয় পান করতে হবে। তবে একবারে কয়েক গ্লাস পানি পান করা যাবে না। এতে পাকস্থলীর ওপর বাড়তি চাপের সৃষ্টি হয়। রোজা ভাঙার পর ধীরেসুস্থে দুই গ্লাস সমপরিমাণ পানি পান করতে হবে এবং ইফতারি থেকে সেহেরির সময়ের মাঝে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করতে হবে। পানির পাশাপাশি ডাবের পানি ও ফলের রসও রাখা যাবে।
বাদাম
কাজুবাদামে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ উপকারী ফ্যাট, যা লম্বা সময় অভুক্ত থাকার পর শরীরে শক্তি যোগাতে প্রয়োজনীয়। এছাড়া বাদাম পেট ভরা রাখতে কাজ করে।
জলীয় অংশ সমৃদ্ধ সবজি
শসা, লেটুস পাতার মতো জলীয় অংশ সমৃদ্ধ সবজিকে প্রাধান্য দিতে হবে ইফতারিতে। এই গরমে দীর্ঘসময় পানি ও খাবার ব্যাতীত শরীর শুষ্ক হয়ে ওঠে আর্দ্রতা হারিয়ে। সেক্ষেত্রে এমন ধরনের সবজি খুবই উপকারী।
কার্বোনেটেড পানীয়
প্রসেসড পানীয় তথা কার্বোনেটেড পানীয় পান করা থেকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে যেতে হবে। এই সকল পানীয় অনেক বেশি চিনিসমৃদ্ধ হওয়ায় ওজন বৃদ্ধির সম্ভবনা থাকে সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও সারাদিন সম্পূর্ণ অভুক্ত থাকার পর কোমল পানীয় পানে রক্তে চিনির মাত্রা হুট করে অনেক বেশি বেড়ে যায়। যা থেকে বৃদ্ধি পায় ডায়বেটিস দেখা দেওয়ার সম্ভবনা। চিনিযুক্ত এই সকল পানীয় পানের পরিবর্তে চিনিবিহীন শরবত পান করতে হবে।
অধিক চিনিযুক্ত খাবার
যে সকল খাবারে অনেক বেশি মাত্রায় চিনি রয়েছে, সে খাবারগুলো সম্পূর্ণ বাদ দিতে হবে ইফতারির মেন্যু থেকে। চকলেট, কেক, পেস্ট্রি, ক্যান্ডি খেতে যতই ভালো লাগুক না কেন, ইফতারিতে কখনোই এমন ধরনের খাবার রাখা উচিৎ নয়।
তেলেভাজা খাবার
প্রচলিত বেগুনী, চপ, বড়া, সমুচা, কিংবা তেলেভাজা খাবারে পুষ্টিগুণ থাকে না বললেই চলে। উপরন্তু এই সকল খাবার খাওয়ার ফলে বুক জ্বালাপোড়াসহ পেটের নানাবিধ সমস্যা তৈরি হয়।
আরও পড়ুন: কী রাখবেন সেহেরিতে?
আরও পড়ুন: সাত উপকারের এক মটরশুঁটি