সম্পর্কের মাঝে ভালোবাসা, বোঝাপড়া, সম্মান ও বন্ধুত্বের কোন কমতি থাকবে না। কমতি থাকবে না নিরাপত্তাবোধেও। প্রতিটি ভালোবাসার সম্পর্ক এভাবেই গড়ে ওঠার কথা থাকলেও, বাস্তবতার সাথে প্রত্যাশার মেলবন্ধন ঘটে খুব কম।
হুট করে ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়ার পর খেয়াল করলেন যেমনটা হওয়ার কথা ছিল, সবক্ষেত্রে হচ্ছে তার উল্টো ঘটনা। নিজেকে বড্ড ভুল একটি সম্পর্কের মাঝে জড়িয়ে ফেলার পরেও অনেক সময় সন্দেহ থেকে যায় মনে। আদতে সম্পর্কটি ভুল, নাকি সমস্যাটি নিজের। সেক্ষেত্রে খুবই সাধারণ কিছু আচরণ ও লক্ষণে ভুল সম্পর্কের বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে ওঠে।
ছোট-বড় প্রতিটি বিষয়ে সঙ্গী যখন আপনার উপর জোরজবরদস্তি করবে, নিজের নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করবে আপনার সকল সিদ্ধান্তকে, তখন বুঝতে হবে খুব একটা ‘সঠিক’ কোন সম্পর্কের মাঝে আপনি নেই। সম্পর্কে কোন না কোন ক্ষেত্রে পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা চলে আসে। কিন্তু নিজের সকল বিষয়ের ওপর যদি জোরপূর্বক অধিকার খাটানো হয়, তবে তা সময়ের সাথে সাথে সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করা ব্যতীত ভালো কিছুই বয়ে আনবে না।
শরীরের মতো আমাদের মনও খুব নাজুক ও সংবেদনশীল। স্বাস্থ্যকর খাবারে শরীর যেমন সুস্থ থাকবে, অস্বাস্থ্যকর সম্পর্কে মন তেমনই নাজুক হয়ে পড়বে। ভালোবাসার মানুষটির সাথে থাকার ফলে নিজেকে সুখি, প্রাণবন্ত, উৎফুল্ল ও খুব গভীরভাবে নিরাপদবোধ করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি যদি ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে থাকাকালীন সম্পূর্ণ উল্টো অনুভূতি বোধ করেন, তবে সম্পর্কের দিকে এখনই খেয়াল দেওয়া প্রয়োজন।
যে কোন সম্পর্কে দু’জন মানুষের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি বা মনোমালিন্যের সৃষ্টি হবে। এটা স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু প্রতিদিন সামান্যতম ছোট বিষয় নিয়েও ঝগড়া হওয়া এবং এমন ঝগড়া, তর্কাতর্কি চলতে থাকা কখনোই একটি সুসম্পর্কের নির্দেশনা দেয় না।
হুট করে রিঅ্যাক্ট করার স্বভাবটি আমাদের সবার মাঝেই আছে। কিন্তু অহেতুক, অকারণে ও একেবারেই সামান্য বিষয়ে বড় ধরনের কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলা কখনোই ভালো ফলাফল বয়ে আনে না। উত্তেজনা ও হটকারিতার এই সময়ে অনেক সময়েই সঙ্গী একে অপরের গায়ে হাত তোলার মতো কাজও করে ফেলেন।
একসাথে ঘোরা, ছবি তোলা কিংবা রেস্টুরেন্টে যাওয়াই ভালো সম্পর্ক তৈরিতে সহায়ক নয়। সম্পর্কের মাঝে একে-অন্যের সাথে কথা বলতে হবে। এই কথা বলা মানে নিজের মানসিক অবস্থা, নিজের ভয় কিংবা নিজের সংশয় নিয়ে কথা বলে। সঙ্গী যখন কোন বিষয়ে জানতে চাইবে তাকে সে বিষয়ে জানানো, আশ্বস্ত করা। কিন্তু ঘটনা যদি তার উল্টো হয়, সঙ্গী যদি কথা আলোচনা করার পরিবর্তে একেবারেই কথা বলতে না চায়, কোন বিষয় লুকিয়ে রাখতে চায়- তবে বুঝতে হবে সেখানে কোন সমস্যা রয়েছে।
যে সম্পর্ক আপনাকে আনন্দিত রাখার পরিবর্তে মানসিক অশান্তিতে রাখছে, সে সম্পর্কটি কখনোই সঠিক নয়। ভুল সম্পর্কে নিজেকে লম্বা সময়ের জন্য জড়িয়ে রাখলে সময় নষ্ট হওয়ার সঙ্গে নষ্ট হয় আত্মবিশ্বাসও। তাই নিজের ভালোবাসার সম্পর্কটির ধরন বোঝা প্রয়োজন সবার আগে।
আরও পড়ুন: সম্পর্কে ‘দূরত্ব’ তৈরি করছে যে আচরণগুলো