বাচ্চারা কোনো না কোনো সময় মিথ্যে কথা বলেই থাকে। তার সব ক’টা যে খুব সচেতনভাবে, তা নয়। প্রথম প্রথম হয়তো খুব হালকা চালে কিছু মিথ্যে কথা বলতে পারে বাচ্চাটি। কিন্তু সেই মিথ্যে বলায় কোনো বাধা না পেলে, পরে বাড়তে থাকে মিথ্যের পরিমাণ। আর তখনই বিষয়টা সমস্যার হয়ে দাঁড়ায়।
কিন্তু এ মিথ্যে বলার প্রবণতা থেকে বাচ্চাকে থামানো উচিত। যদি সেটা না হয়, তাহলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কারণে-অকারণে মিথ্যে বলাটা অভ্যাসে পরিণত হবে এবং সেটা তার ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য খুবই ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়াবে।
বাচ্চাদের মিথ্যা বলা থেকে বিরত রাখতে করণীয়-
রোল মডেল হোক সত্যটা
মিথ্যে যে বলে সে খারাপ, আর সত্যি যে বলে সে ভালো। যে ভালো, তাকেই রোল মডেল করা উচিত। এরকম একটা ধারণা ছোটবেলা থেকেই তার মনে সৃষ্টি করে দিন। মিথ্যে যে বলে, তাকে কেউ পছন্দ করে না, তার সঙ্গে কেউ খেলে না, তাকে কেউ ভালোবাসে না- এমন একটা ধারণা বাচ্চার মনে গেঁথে দিন। এমন কোনো একজন কাল্পনিক চরিত্রের কথাও তাকে বলতে পারেন, মিথ্যে বলে যার জীবন খুব কষ্টে কাটে।
সত্যি বললে পুরস্কার
বাচ্চা কেন মিথ্যে বলছে সেটা আপনাকে বুঝতে হবে এবং প্রথমেই সেই জায়গাটা তাকে দিতে হবে, যাতে সে সত্যি বলতে ভয় না পায়। তাকে বুঝিয়ে দিন, ঘটনাটা যত খারাপই হোক না কেন সত্যি বলতে সে যেন কখনো ভয় না পায়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো পথ, সে যদি প্রথমে মিথ্যে বলে, তারপর সত্যিটা স্বীকার করে, তাহলে তাকে পুরস্কার দিন। সেক্ষেত্রে সত্যি বলার উৎসাহ বাড়বে।
সাবধান করুন
প্রথমবার মিথ্যে বললেই শাস্তি দেয়ার রাস্তায় হাঁটবেন না। বরং তাকে সাবধান করুন। এটাও পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিন, সেই কথা না মানলে কী কী শাস্তি সে পেতে পারে। যেমন ধরুন আগামী ছুটিতে তাকে নিয়ে হয়তো কোথাও বেড়াতে যাওয়ার কথা আছে। মিথ্যে বললে, সেটা বাতিল হয়ে যেতে পারে- এমন শাস্তির আভাস দিয়ে রাখুন।
বিশ্বাস ফিরিয়ে আনুন
মিথ্যে বলার পর সে যদি সত্যিটা স্বীকার করে নেয়, তাহলে তাকে যতটা পুরস্কার দেবেন বলে জানিয়েছিলেন, তার চেয়ে বেশি কিছু দিন। তাতে তার বিশ্বাস বাড়বে। সে সত্যি বলার ভালো দিকগুলো সম্পর্কে সচেতন হতে পারবে।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
যদি দেখেন কোনোভাবেই বাচ্চার মিথ্যে বলার অভ্যাস বন্ধ করা যাচ্ছে না, তাহলে মনোবিদের পরামর্শ নিন। কারণ তিনি বলতে পারবেন, কোন থেরাপির মাধ্যমে কীভাবে তার মিথ্যে বলার অভ্যাস বন্ধ করা যায়। তবে বিষয়টি খুব বাড়াবাড়ি জায়গা গেলেই এই পদক্ষেপটি করতে হবে।