দীপু মনি ও জয়ের ১০ দিন রিমান্ড আবেদন

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা | 2024-08-20 16:05:23

মুদি দোকানি আবু সায়েদ হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং সাবেক ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুট থানার পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন এ রিমান্ড আবেদন করেন।

ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে এ রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামি শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক ইন্সপেক্টর জেনালের অব পুলিশ (আইজিপি) আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি হারুন-অর-রশীদ (ডিবি হারুন) ও অতিরিক্ত যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমারসহ অজ্ঞাত নামা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সদস্যগণ খুনি, ক্ষমতালোভী ও নির্যাতনকারী হিসাবে ইতিমধ্যে চিহ্নিত। সম্প্রতি কোটা সংস্কারের জন্য বৈসম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন।

গত ১৮ জুলাই থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে গতি সঞ্চার হয়। ছাত্র-জনতার এ আন্দোলনকে দমানোর জন্য বিগত আওয়ামী লীগ সরকার শুরু করে। আসামি শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদের নির্দেশে পুলিশ বাহিনী ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্র-জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালায়।

গত ১৯ জুলাই বিকাল ৪ টায় মোহাম্মদপুর থানাধীন বসিলা ৪০ ফিট চৌরাস্তায় হাজার হাজার ছাত্র জনতা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে মিছিল করছিল। সেই আন্দোলন দমনের জন্য পুলিশ নির্বিচারে আন্দোলনকারীদের উপর গুলি চালায়। উক্ত সময় মোহাম্মাপুরস্থ বসিলা ৪০ ফিট চৌরাস্তায় মুদি দোকানদার আবু সায়েদ (৪৫) রাস্তা পার হয়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়। তার মাথার এক পাশ দিয়ে গুলি ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়।

স্থানীয় লোকজন জানায় আবু সায়েদ গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর স্বানীয়রা তার লাশ গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার মাড়োয়া বামনহাট ইউনিয়নের নতুন বস্তি প্রধানহটে পাঠিয়ে দেয়। সেখানেই তাকে দাফন করা হয়। পুলিশের গুলিতে গরিব মুদি দোকানদার আবু সায়েদের মৃত্যু হয়। সচেতন নাগরিক হিসেবে অত্র মামলার বাদী আবু সায়েদ হত্যার বিচার দাবি করে এ মামলা করেছেন।

কোনো প্রকার উসকানি ছাড়া পুলিশ এজাহারে বর্ণিত আসামিদের নির্দেশে অজ্ঞাতনামা পুলিশ সদস্যরা গুলি করে আবু সায়েদকে হত্যা করেছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলন চলাকালে তা শক্ত হাতে দমন করার নির্দেশ দিয়েছেন। আসামি ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন সময় শক্ত হাতে দমন করার নির্দেশ দিয়েছেন। আসামি সাবেক ইন্সপেক্টর জেনালের অব পুলিশ (আইজিপি) আব্দুল্লাহ আল মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি হারুন-অর-রশীদ (ডিবি হারুন) ও অতিরিক্ত যুগ্ম পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার আন্দোলন দমাতে তাদের অধিনস্থ পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন।

আসামি আসাদুজ্জামান কামাল পুলিশকে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি করার নির্দেশ দেয়। অন্যান্য অজ্ঞাতনামা পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্য ও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীর নির্দেশে হত্যাকাণ্ড ঘটে।

রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হাজার হাজার নিরীহ ছাত্র-জনতাকে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে হত্যা করে।

আবেদনে আরো বলা হয়, মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে এজাহার পর্যালোচনায় মামলার পূর্বের ও পরের ঘটনা বিভিন্ন পত্রপত্রিকাসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৯ আগস্ট বারিধারা ডিওএইচএস এর বাসা হতে আসামি ডাঃ দীপু মনিকে (৫৯) আটক হয়। পরবর্তীতে ডাঃ দীপু মনির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একইদিন রাত ২২টা ৫০ মিনিটে সময় আরিফ খান জয়রক (৫৩) আটক করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর