একদিকে করোনার দাপট, অন্যদিকে সাইক্লোন আম্পান। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। ঘূর্ণিঝড় আম্পান নিয়ে রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন নবান্নে মঙ্গলবার (১৯ মে) সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই মন্তব্য করলেন কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই ঝড়ের তীব্রতা বেশি হবে। কেউ কেউ বলছেন ছাপিয়ে যেতে পারে আয়লা ও বুলবুলের তীব্রতা। এই ঘূর্ণিঝড়ের তিনটি অংশ- মাথা, চোখ, লেজ। প্রথমে যেটা হিট করবে সেটা মাথা। যখন দেখবেন ঝড়টা থেমে গেল, ভাববেন না থেমে গিয়েছে, আরেকটা দমকা আসবে। শেষ দমকা হবে লেজ যখন রাজ্যের উপর দিয়ে যাবে।’
তবে আম্পান মোকাবিলায় প্রস্তুত নবান্ন। রাজ্যে হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। এছাড়া জেলায় জেলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কারও কোনো অসুবিধা হলে জানাবেন। আমরা বুধবার (২০ মে) দিনরাত কাজ করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘মোতায়েন করা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
মমতা বলেন, ‘সবাইকে বলছি কেউ বাড়ি থেকে বেরোবেন না। আজও বৃষ্টি হবে। কাল ঝড়-বৃষ্টি চলবে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রভাব থাকবে ঝড়ের। সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরের একাংশও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘এরইমধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এখনো পর্যন্ত ২ লাখ মানুষ, উত্তর ২৪ পরগনায় ৫০ হাজার মানুষকে সরানো হয়েছে নিরাপদে। পূর্ব মেদিনীপুরে প্রায় ৪০ হাজার ও পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় ১০ হাজার মানুষকে সরানো হয়েছে। এ সময় করোনার জেরে সব সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এ জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে।’
এদিন ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
কলকাতা আবহাওয়া দফতর থেকে জানা গেছে, বুধবার বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে রাজ্যের দিঘা ও বাংলাদেশের হাতিয়ার মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে এই অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। এ সময় ঘূর্ণিঝড়ের বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৬৫-১৭৫ কিলোমিটার। আম্পানের সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার। সেই সময় কলকাতায় ঝড়ের গতি থাকতে পারে ১১০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়।