গত ৫ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা রদ করেছিল মোদি সরকার। তার ঠিক তিনদিন আগে থেকেই সরকারিভাবে পর্যটকদের কাশ্মীর ছাড়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় বৈঠকে সেই নিষেধাজ্ঞা বৃহস্পতিবার তুলে নেওয়া হয় সরকারিভাবে এবং তা শুক্রবার (১১ অক্টোবর) থেকে কার্যকর হলো। ফলে পর্যটকদের জন্য ফের খুলে গেল ভূস্বর্গ।
বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের কয়েকদিন আগেই সন্ত্রাসবাদী হামলার আশঙ্কায় কেন্দ্রীয় সরকার পর্যটক ও পুণ্যার্থীদের জম্মু ও কাশ্মীর ছাড়তে বলে। স্থগিত করে দেওয়া হয় হিন্দুদের অমরনাথ যাত্রাও। এরপরই চলতি বছর ৫ আগস্ট ৩৭০ ধারা বাতিল করে মোদি সরকার। কাশ্মীরে বন্ধ করে দেওয়া হয় টেলিফোন, মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা। গৃহবন্দি করা হয় চারশোর বেশি রাজনৈতিক নেতাকে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে জুলাই অর্থাৎ ৭ মাসে জম্মু ও কাশ্মীরে পাঁচ লাখেরও বেশি পর্যটক ছিল। হঠাৎ করে পর্যটকদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় বিপাকে পড়েছিল সেখানকার ব্যবসায়ীরাও। এতে করে সমস্যায় পড়ে পর্যটন ও হোটেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকা বহু মানুষ। এদিন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২ আগস্ট পর্যটকদের উপর যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হলো।
এদিকে দুমাসেরও বেশি সময় ধরে বন্দী থাকার পর মুক্তি পেলেন জম্মু ও কাশ্মীরের আরও তিন রাজনৈতিক নেতা। মুক্তি পায় নুর আহমেদ, শোয়েব লোন এবং ওয়াই মির। মির হলেন পিডিএ দলের নেতা। শোয়েব লোন হলেন কংগ্রেস নেতা। এবারের লোকসভা নির্বাচনে তিনি উত্তর কাশ্মীর থেকে দলের প্রার্থী হয়েছিলেন। যদিও নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। অন্যদিকে নুর মহম্মদ হলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা। শ্রীনগরে তাঁর উপর একবার জঙ্গি হামলা হয়েছিল।
অবশ্য তাঁদের মুক্তি দেওয়ার আগে একটি বয়ান লিখিয়ে নেয় প্রশাসন। রাজ্যে শান্তি, শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন বলে তাঁরা প্রতিশ্রুতি দেন। তবে এর আগে আরও কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাকে মুক্তি দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু ওই রাজ্যের তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতি এখনও গৃহবন্দি রয়েছেন। তাঁদের কবে মুক্তি দেওয়া হবে, এব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন।
চলতি মাসে পুরোপুরিভাবে কাশ্মীরের স্কুল কলেজ খুলে গেলেও এখনো সেভাবে শিক্ষার্থীদের দেখা নেই। এর উপর ২ আগস্ট থেকে জম্মু ও কাশ্মীর ছিল পর্যটক শূন্য। ৬৭ দিন পর পর্যটকদের উপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় কাশ্মীরের ব্যবসায়ীদের মুখেও হাসি ফুটেছে। পর্যটকদের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় ওই রাজ্যে পর্যটন শিল্প ফের চাঙ্গা হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন সব মহল।