শনিবার (৩১ আগস্ট) জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ (এনআরসি) প্রকাশের পর আসামজুড়ে ক্ষোভ চলছে। রোববার (১ সেপ্টেমম্বর) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ তালিকার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সঠিক তালিকা প্রকাশের জন্য সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি।
মমতা বলেন, ‘ভুলে ভরা তালিকা। যে তালিকায় সাবেক রাষ্ট্রপতির আত্মীয় থেকে শুরু করে সেনা, আধাসেনা কর্মীসহ অনেকেরই নাম নেই।’
নাগরিকত্ব হারানো ১৯ লাখ মানুষের জন্য উষ্মা প্রকাশ করেছেন তিনি।
এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী শনিবার এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘রাজনৈতিক লাভ তোলার চেষ্টা করা হচ্ছিল, তাদের মুখোশ খুলে দিয়েছে এনআরসি বিপর্যয়। দেশকে জবাব দিতে হবে তাদের। দেশ ও সমাজের স্বার্থ পরিহার করে অসৎ উদ্দেশ্যে কাজ করলে এমনটাই ঘটে। বাংলাভাষী ভাই বোনদের জন্য খারাপ লাগছে।’
উল্লেখ, শনিবার চূড়ান্ত এনআরসি তালিকায় সাড়ে ১৯ লাখ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। ১৯৫৪ সালের পর প্রথম আসামে এনআরসি প্রকাশিত হল। এর আগে প্রকাশিত এনআরসি তালিকায় বাদ পড়েছিল ৪৩ লাখ মানুষের নাম। তখন থেকেই অলোড়ন শুরু হয় ভারতে। ওই সময় অভিযোগ ওঠে, বহু প্রকৃত ভারতীয়র নামও এই খসড়া তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। এরপর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
চরম উত্তেজনার মধ্যে শনিবার অনলাইনে প্রকাশিত হয় এনআরসি তালিকা। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর কংগ্রেসসহ বিভিন্ন বিরোধী দল তো বটেই এমনকি শাসক দল বিজেপির নেতা মন্ত্রীরা পর্যন্ত ভুলে ভরা তকমা দিয়ে এনআরসি তালিকা বর্জনের ডাক দিয়েছেন।
আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ছিলেন এনআরসির বড় সমর্থক। তিনিও বলছেন, এই এনআরসি তালিকা সঠিক নয়। এই তালিকা থেকে প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের নাম বাদ গিয়েছে। আবার বহু অনুপ্রবেশকারীর নামও ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে সফটওয়্যার সংস্থা এই তালিকা তৈরির দায়িত্বে ছিল তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে স্বয়ং বিজেপি।
যদিও আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল ও কেন্দ্র সরকার জানিয়ে দিয়েছেন, বাদ পড়া ১৯ লাখ মানুষ ১২০ দিনের মধ্যে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবেন। তারপর তারা হাইকোর্ট কিংবা সুপ্রিম কোর্টেও যেতে পারবেন। এ প্রক্রিয়া চলাকালীন কাউকে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে না। ভারতীয় নাগরিক হিসেবেই থাকবেন।