সদ্য সমাপ্ত কলকাতা করপোরেশন ভোট এবং গণণা। বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) ঠিক হয়ে গেল কলকাতার মেয়রের মুখ। এই নিয়ে দুইবার কলকাতার মেয়র হলেন ফিরাদ হাকিম এবং ডেপুটি মেয়র হলেন অতীন ঘোষ। অপরদিকে, এই নিয়ে পর পর দুইবার কলকাতা করপোরেশন বিরোধী দলনেতা শূন্য। ১৪৪টা ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩৪টা কাউন্সিলর তৃণমূলের। বাকি ১০ ওয়ার্ড ভাগ হয়েছে বাম(২), কংগ্রেস(২), বিজেপি(৩) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী(৩) —ফলে বিরোধী কোনও দলই ন্যূনতম শর্ত ছুঁতে পারেনি।
নিয়ম অনুযায়ী, কলকাতা করপোরেশনের প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেতে মোট ১০ শতাংশ আসন পেতে হবে। অর্থাৎ কমপক্ষে ১৫টি আসন পেতে হত। কিন্তু এবার ১৪৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের দখলে ১৩৪টি আসন। প্রতিটি বিরোধী দলই ন্যূনতম শর্ত থেকে সরে গেছে। নিয়মমাফিক কোনও দলেরই প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পাওয়ার কথা নয়।
তবে ২০১৫ সালে বামেরা বিরোধী শর্ত আদায় করলে সেবারও কলকাতা করপোরেশন ছিল বিরোধী শূন্য। সেই বছর তৃণমূল পেয়েছিল ১১৪টি আসন। বামেদের দখলে ছিল ১৫, বিজেপি ৭ এবং কংগ্রেসের হাতে ছিল ৫টি আসন। তা স্বত্তেও বামফ্রন্টকে বিরোধী দলের মর্যাদা দেওয়া হয়নি। সেবারও বিরোধী শূন্য রাখার কায়দা নেয় শাসক দল। শাসকের যুক্তি ছিল এককভাবে কোনও দল ন্যূনতম শর্ত ছুঁতে পারেনি। তাই বিরোধী দলনেতার মর্যাদা দেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, বাম বলতে সিপিআইএম, সিপিআই, আরএসপি এবং ফরোয়ার্ড ব্লক -এই জোটকেই বোঝায়। একত্রিত হয়েই জ্যোতিবাবুর আমল থেকে ভোটের লড়াইয়ের ময়দানে নামে। অথচ যে তৃণমুল এক সময় বিজেপির হাত ধরে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতার বিস্তার করে এবং এক সময় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধীও হয়ে ওঠে। তখন কিন্তু বাম আমল বিরোধীদের গুরুত্ব দিয়েছিল।
তবে রাজনৈতিকমহলের এক অংশের মত বিরোধী শূন্য থাকার যেমন অসুবিধা আছে তেমনি সুবিধাও আছে। তবে গণতন্ত্রে বিরোধী শূন্য থাকা সবচেয়ে বড় বিপজ্জনক, এমনটাই সবার মত। তবে এই কায়দায় কেন্দ্র পারলে রাজ্য কেন পারবে না! ফলে বিরোধী শূন্য কলকাতা করপোরেশন আবারও একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস।