মা জাতি সমাজের স্তম্ভ। তাদের মাধ্যমেই একটি আদর্শবান সমাজ গড়ে উঠে। মা সন্তানের আশ্রয়স্থল। মায়ের অক্লান্ত পরিশ্রমে সন্তান আদর্শবান হয়ে বেড়ে উঠে। দুনিয়াজুড়ে বড় বড় আলেম, বিদগ্ধ হাদিস বিশারদসহ আরও যতো বিখ্যাত মনীষী রয়েছে তাদের স্মরণ করি শ্রদ্ধার সঙ্গে। কিন্তু তাদের বড় হওয়ার পেছনে রয়েছে মায়ের অবদান। এ কথা খুব কম মানুষই স্মরণ করে।
আমরা সবাই ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহির কথা জানি, ইমাম বোখারি রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে চেনেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু ইমাম আবু হানিফা (রহ.) ও ইমাম বোখারি (রহ.)-এর বড় হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা হলো- তাদের মায়ের। মা জননীর অবদানে বিশ্বজুড়ে তারা খ্যাতি অর্জন করেছেন। আর লোক চক্ষুর অন্তরালেই রয়ে গেছে মায়ের অবদানের কথা।
ইতিহাসে এমন কিছু মনীষীর বিরল কিছু ঘটনা পাওয়া যায় যা আমাদের রীতিমতো চমকে দেয়। তেমনি একজন মহান ব্যক্তি ইমাম বোখারি (রহ.)। জ্ঞানের গভীরতা, স্মৃতির প্রখরতা তাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তিনি হাদিস জগতের সম্রাট উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন।
ইমাম বোখারি (রহ.) বাল্যকালেই পিতৃহারা হন। তার মা-ই তাকে লালন-পালন করতে লাগলেন। বাল্যকালে অসুস্থ হয়ে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। এমতাবস্থায় তার মা তার জন্য অস্থির হয়ে উঠেন। কারণ তিনি সন্তানকে নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন দেখতেন। সন্তানের অসুস্থতা মায়ের জন্য কতটা বেদনাদায়ক- তা কেবল একজন মা-ই অনুভব করতে পারেন। ছেলের অসুস্থতার জন্য তিনি রবের নিকট দোয়া করতে থাকেন। সন্তানের জন্য মায়ের দোয়া আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না।
এক হাদিসে এসেছে, তিন ব্যক্তির দোয়া অবশ্যই কবুল হয়; এতে কোনো সন্দেহ নেই। এক. মা-বাবার দোয়া তার সন্তানের জন্য, দুই. মুসাফিরের দোয়া ও তিন. অত্যাচারিত ব্যক্তির দোয়া অত্যাচারীর বিরুদ্ধে। -সুনানে আবু দাউদ: ১৫৩৮
একরাতে তিনি অনেক দোয়া করলেন, এর কিছুদিন পর তিনি স্বপ্নে হজরত ইবরাহিম (আ.) কে দেখলেন। তিনি বললেন তোমার সন্তানের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘুম থেকে ওঠে দেখতে পান ইমাম বোখারি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছেন- সুবহানাল্লাহ।
এ ঘটনা থেকে আমরা বুঝতে পারি আদর্শ সন্তানের জন্য আদর্শবান মা হওয়া বাঞ্চনীয়। এমন কোনো মা নেই যিনি তার সন্তানকে বড় ও আদর্শবান হওয়ার স্বপ্ন দেখেন না। সন্তানকে আদর্শবান করার পেছনে মায়েদের ভূমিকা অপরিসীম। এ জন্য আল্লাহর কাছে তাদের মর্যাদাও অনেক।
আল্লাহতায়ালা আদর্শ সন্তানের জন্য দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন। সন্তানকে বেশি বেশি দোয়া করতে বলেছেন। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।