সুগন্ধির প্রতি মানুষের আকর্ষণ সহজাত। সুগন্ধির প্রতি অনুরাগ নবী-রাসূলদের আদর্শ। সুগন্ধি ও সুরভির ব্যবহার হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নতও বটে। বিভিন্ন উপলক্ষে ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সুগন্ধি-আতর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এসবকে পবিত্রতার প্রতীক মনে করা হয়।
সোমবার (২৭ এপ্রিল) ইফতারের আগে মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীর কার্যপরিচালনা পর্ষদের প্রেসিডেন্ট শায়খ ড. আবদুর রহমান বিন আবদুল আজিজ আস সুদাইস কাবা শরিফের দেয়াল, হাজরে আসওয়াদ, কাবার গিলাফ ও মাকামে ইবরাহিম উন্নতমানের সুগন্ধি ‘উদ ফাখির ও আসওয়াদ’ দিয়ে সুরভিত করেন। এ সময় তার সঙ্গে মসজিদে হারামের কার্যপরিচালনা বিভাগের প্রতিনিধি ড. মুহাম্মদ বিন আহমদ আল খুদাইরিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কাবার দেয়ালে এভাবে সুগন্ধি লাগানোর অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে পবিত্র কাবা শরিফ ও এর আঙ্গিনা পবিত্র ও সুরভিত রাখা। পাশাপাশি উপস্থিত মুসল্লিদের জন্য মনোরম, স্নিগ্ধ আবহ ও পরিবেশ বজায় রাখা। যেন সুঘ্রাণে আমোদিত হয়ে স্বচ্ছন্দে ও প্রশান্ত মনে ইবাদত-বন্দেগি করতে পারেন।
স্বাভাবিক সময়ে কাবার প্রাঙ্গন উদ দিয়ে সুগন্ধিময় করা হয়। আর মসজিদে হারামের অভ্যন্তরে ধূপপায়ী বার্নারের (ধূপাধার) মাধ্যমে অত্যন্ত উন্নতমানের ধূপ ও লোবান দিয়ে সুরভি বিতরণ করা হয়।
করোনার কারণে মসজিদে হারামে মুসল্লিদের প্রবেশ নীমিত করা হয়েছে। উমরা বন্ধ। কিন্তু মসজিদে হারামের দৈনন্দিন কাজে কোনো কমতি নেই। আগের মতো এখনও প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজের আগে পবিত্র কাবা প্রাঙ্গন জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার করা হয়। পরিষ্কার শেসে বিশেষ সুগন্ধি মাখানো হয়।
কাবায় মাখানো সুগন্ধিটি সৌদি আরবেই বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। যদিও পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই কমবেশি আতর-সুগন্ধি উৎপাদন হয়। তবে সৌদি আরব উন্নতমানের সুগন্ধি উৎপাদন করে। তাদের উৎপাদিত সুগন্ধির উল্লেখযোগ্য হলো- উদ, উদ আমিরি, উদ আসওয়াদ ও উদ ফাখির।
মুসলমানরা প্রতিদিন কাবা ঘরের দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। প্রতি বছর লাখ লাখ লোক হজ ও উমরা পালনে কাবায় আসেন। হজ ও উমরা পালনকারীদের জন্য কাবাঘর প্রদক্ষিণ করা অন্যতম প্রধান একটি কাজ।
পৃথিবীর প্রথম মানব হজরত আদম আলাইহিস সালাম কাবাঘরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। পরবর্তীতে হজরত ইবরাহিম (আ.) ও তার পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.) আজ থেকে ৪০০০ বছর পূর্বে আল্লাহর নির্দেশে কাবা ঘর পুনঃনির্মাণ করেন।
উল্লেখ্য, সৌদি আরবে শুক্রবার রমজান শুরু হয়েছে। মহামারি করোনার কারণে মসজিদে হারাম কর্তৃপক্ষ সীমিত পরিসরে রমজানের আয়োজন চালু রেখেছেন। সৌদি আরবের সব মসজিদে তারাবি বন্ধ থাকলেও সীমিত সংখ্যক মুসল্লি ও রাকাত কমিয়ে হারামাইনে তারাবি, ওয়াক্তিয়া জামাত ও জুমা চলছে। দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে উমরা।