বিখ্যাত হাদিস বিশারদ সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবী করিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াবের নিয়তে রমজান মাসের রোজা রাখবে তার পূর্বের সব গোনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াবের নিয়তে রমজান মাসের রাতে কিয়াম করে তার পূর্বের সব গোনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াবের নিয়তে কদরের রাতে ইবাদত করে কাটাবে তার পূর্বের সব গোনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)-এর সূত্রে অপর একটি হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, তিনি বলেছেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রোজা এবং কোরআন (কেয়ামতের দিন) আল্লাহর কাছে বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। রোজা বলবে, হে পরওয়ারদিগার! আমি তাকে (রমজানের) দিনে পানাহার ও প্রবৃত্তি থেকে বাধা দিয়েছি। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন। কোরআন বলবে, আমি তাকে রাতের বেলায় নিদ্রা হতে বাধা দিয়েছি। সুতরাং তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ কবুল করুন।
রমজান মাসে যেসব সময়ে দোয়া কবুল হয় তার অন্যতম ইফতারের পূর্ব মুহূর্ত। তাই তো দেখা যায়, সব রোজাদারই ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে দোয়া করে থাকেন। এটা তাদের বহু পুরোনো ঐতিগ্য। যেমন দেখা গেল তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের ঐতিহাসিক সুলতান আহমদ জেলায়। চলতি রমজানের শুরুর দিকে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে দোয়ায় শরিক হলেন রোজাদাররা। এ সময় ক্লিক করে ওঠে এপির ফটো সাংবাদিকের ক্যামেরা।
রমজান মাসে তুরস্কে পরিবারের চেষ্টা করেন একত্রে থাকার। তুর্কিরা ইফতারে তাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার খেতে পছন্দ করেন। মজার বিষয় হলো, শুধু সন্ধ্যায় ইফতারের মধ্যেই তুর্কিদের রমজানের আয়োজন শেষ হয়ে যায় না। ইফতারের পর রাতের খাবারেও চলে বিশেষ আয়োজনের ধারাবাহিকতা।
সেহেরিকে তুর্কি ভাষায় বলে ‘সাহুর’। সুবেহ সাদেকের আগের এই আহারে সাধারণত ভারি খাবার বর্জন করেন তারা। সেহেরিতে কম লবণযুক্ত খাবার খান তারা। এতে করে সারাদিন পানির তৃষ্ণা কম পায়। এ সময় তাদের খাবার টেবিলে থাকে কাজানদিবি, কাশকাভাল পনির, ঠাণ্ডা স্লাইস করা জিহ্বার মতো খাবার।
সেহরিতে তুর্কিরা একটি মাংস ও একটি সবজি জাতীয় খাবার রাখেন। এ ছাড়া পিলাভ বা নুডুলস ধরনের খাবারও থাকে তালিকায়। সঙ্গে থাকে ফলের রস এবং চা।
সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারি থেকে শুরু করে রাতের খাবার পর্যন্ত চলে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বসে ঐতিহ্যবাহী সব খাবার খাওয়া।