এই সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ও অনুপ্রেরণা সৃষ্টিকারী ব্যক্তিত্ব কাতারের নাগরিক ঘানিম মুহাম্মদ আল মুফতাহ। সবশেষ ফিফা বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঘানিম কোরআন তেলাওয়াত করে বিশ্ববাসীকে মুগ্ধ করেছিলেন। ২১ বছর বয়সী বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এক যুবকের শরীরের অর্ধেক অংশ নেই। তার পরও তার কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ বিশ্ববাসী। সেই ঘানিম ফের বিশ্বকে মুগ্ধ করলেন দুই হাতে পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফ করে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি ঘানিম আল-মুফতাহ ওমরাহ পালন করতে সৌদি আরব যান। ওমরাহ পালনের সময় মসজিদে হারামের প্রশাসন তাকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেয়। নিরাপত্তা কর্মীরাও তাকে সাহায্য করেন। তার জন্য ইলেকট্রিক হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করা হলেও তিনি হাতের সাহায্যেই স্বাচ্ছন্দ্যে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করেন।
ঘানিম আল-মুফতাহ বলেন, ‘আমার পা না থাকলে কী হবে, আমার আল্লাহ আমাকে শক্তিশালী হাত দিয়ে কৃতজ্ঞ করেছেন। এ হাতই আমার পায়ের বিকল্প। আমি আল্লাহর দেওয়া এ হাত দিয়েই বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করবো।’
এ সময় পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতও তিনি তেলাওয়াত করেন, ‘আল্লাহ কাউকে তার শক্তির বেশি বোঝা দেন না।’ -সরা আল-বাকারা : ২৮৬
এর আগেও ২০১৭ জানুয়ারি মাসে ঘানিম পবিত্র ওমরাহ পালন করেন। তথনও তিনি হাতে ভর দিয়ে পবিত্র কাবা তাওয়াফ করেন।
ঘানিম আল-মুফতাহ একজন ইউটিউবার এবং উদ্যোক্তা। ২০১৭ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে কাতারের সর্বকনিষ্ঠ উদ্যোক্তা হয়ে ওঠেন। ইংল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ঘানিম গত বিশ্বকাপে ফিফার শুভেচ্ছাদূত মনোনীত হন।
ঘানিম তার পরিবারের সাহায্যে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গঠন করেন। তার মতো যারা পায়ে চলাচল করতে পারেন না, সংস্থাটি থেকে তাদেরকে হুইলচেয়ার উপহার দেয়া হয়। তিনি একজন ‘মানবদরদি নায়ক’ হিসেবে গোটা পৃথিবীতে পরিচিত। ২০১৪ সালে কুয়েতের আমির শেখ শাবাহ আল আহমদে আল শাবাহ তাকে ‘শান্তির দূত’ নামে অভিহিত করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় লাখ লাখ ফলোয়ার রয়েছে তার।