রাখাইনের আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (এআরএসএ) সন্দেহভাজন সদস্যদের বিরুদ্ধে তদন্তের সময় নিয়ম না মানার অভিযোগে সেনাদের বিরুদ্ধে সামরিক আদালতে বিচার শুরু করতে যাচ্ছে মিয়ানমার।
গত সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাও মিন তুন বলেছেন, ‘সেনাবাহিনী ২০১৮ সালে ফেব্রুয়ারি বুথিডাং জনপদের একটি গ্রামে ১৯ সন্দেহভাজন এআরএসএ সদস্যদের মৃত্যুর জন্য জড়িত সেনাদের বিরুদ্ধে কোর্ট মার্শাল কার্যক্রম শুরু করবে। একটি সামরিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দলের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে গুতাবিন গ্রামে সৈন্যরা এই ঘটনায় যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করেনি। সৈনিকদের কোর্ট মার্শাল বেসামরিক আদালতে প্রক্রিয়া সমান, তবে এটি বেশি সময় নেয় না।’
জড়িতদের সম্পর্কে বিস্তারিত আদালত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই প্রকাশ করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, গত শনিবার (৩১ আগস্ট) দেশটির সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, মেজর জেনারেল মায়াট কিয়ার নেতৃত্বাধীন একটি দলের তদন্তের সময় জানতে পারা যায় যে, নির্দেশনা অনুসরণে কাজ হয়নি যা সামরিক শৃঙ্খলা আবশ্যক ছিল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সামরিক বিচারের পদ্ধতি অনুসারে সেনাদের বিচারের জন্য একটি কোর্ট মার্শাল গঠন করা হবে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের উপ-এশিয়া পরিচালক ফিল রবার্টসন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, কোর্ট মার্শাল উত্তর রাখাইনে মুসলমানদেরকে ঘিরে থাকা আসল সমস্যা থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ সরিয়ে নেবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাও মিন তুন বলেছেন, ‘সামরিক বাহিনী সংঘাতময় অঞ্চলে সৈন্যদের জন্য নতুন নিয়ম তৈরি করেছে, যাতে তারা জানতে পারে কী কী তাদের করণীয়। এই নিয়ম অনুসরণে দুর্বলতা পেলে সেনাবাহিনী ব্যবস্থা নেবে। তদন্তের ফলাফলের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে।’
মিয়ানমার সরকারকে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অভিযোগ, তারা উত্তর রাখাইনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে নিয়মিত ও মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ২০১৭ সালের আগস্টে ৭ লাখ মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।
মিয়ানমার সরকার এবং সেনাবাহিনী এসব অভিযোগ কঠোরভাবে অস্বীকার করেছে।
মিয়ানমারের অনেক নাগরিক উত্তর রাখাইনের মুসলমানদের পরিবার থেকে বংশ পরম্পরায় এ রাজ্যে বসবাস করেও বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচিত করছে।