হিরোশিমা দিবসে জাপানকে পারমাণবিক নিষেধাজ্ঞা চুক্তিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে খোদ শহরটির মেয়র।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা ফেলার ৭৪তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র কাজুমি মাতসুই জাপান সরকারকে পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধ করার চুক্তিতে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রায় ৯৯টি দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এ অনুষ্ঠানটি হিরোশিমার স্মৃতিসৌধ গ্রাউন্ড জিরোর কাছে পিস মেমোরিয়াল পার্কে অনুষ্ঠিত হয়।
হিরোশিমা সিটি মেয়র তার ঘোষণাপত্রে কেন্দ্রীয় সরকারকে আহ্বান জানান, জাতিসংঘের পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সম্পর্কিত চুক্তি, যা ২০১৭ সালের জুলাই মাসে অন্য ১২২টি দেশের সমর্থন নিয়ে পাস করা হয়েছিল তাতে যেন জাপান স্বাক্ষর করে।
প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়েছিলেন তবে চুক্তির বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। জাপান যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পারমাণবিক চুক্তির বিষয়ে অন্যান্য দেশের মতো এ চুক্তিতে অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট সকালে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী জাপানের হিরোশিমা শহরের ওপর ‘লিটল বয়’ নামের নিউক্লীয় বোমা ফেলে এবং এর তিনদিন পর নাগাসাকি শহরের ওপর ‘ফ্যাট ম্যান’ নামে আরও একটি নিউক্লীয় বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়।
১৯৪৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বোমা বিস্ফোরণের ফলে হিরোশিমাতে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার লোক মারা যান। নাগাসাকিতে মারা যান প্রায় ৭৪ হাজার মানুষ। পরবর্তীতে এই দুই শহরে বোমার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আরও ২ লাখ ১৪ হাজার জাপানি। বোমার প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগসমূহের ওপর হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্য গণনায় ধরে হিরোশিমায় ২ লাখ ৩৭ হাজার এবং নাগাসাকিতে ১ লাখ ৩৫ হাজার লোকের মৃত্যু ঘটে। দুই শহরেই মৃত্যুবরণকারীদের অধিকাংশই ছিলেন বেসামরিক ব্যক্তি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের আত্মসমর্পণের পেছনে এই বোমাবর্ষণের ভূমিকা এবং এর প্রতিক্রিয়া ও যৌক্তিকতা নিয়ে প্রচুর বিতর্ক হয়েছে। জাপানের সাধারণ জনগণ মনে করে এই বোমাবর্ষণ অপ্রয়োজনীয় ছিল, কেননা জাপানের বেসামরিক নেতৃত্ব যুদ্ধ থামানোর জন্য গোপনে কাজ করে যাচ্ছিল।