মিয়ানমারের বাগান মন্দিরে পর্যটকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা

এশিয়া, আন্তর্জাতিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-26 03:59:30

মিয়ানমারে বিখ্যাত বাগান মন্দিরগুলোতে পর্যটকদের উঠতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। পর্যটকদের আরোহণ বন্ধ করতে বাগানের মন্দিরগুলোর আশেপাশে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

চলতি জুলাই মাসে ইউনেস্কো বাগানের মন্দিরকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। চমৎকার সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে হাজার হাজার পর্যটক এখানে আসেন। তারা মন্দিরের চূড়ায় উঠে ছবি তুলতে পছন্দ করেন।

মিয়ানমার সরকার ইতোমধ্যে ২০২৮ সালের মধ্যে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো থেকে সমস্ত হোটেল স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দিয়েছে। ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট মিয়ানমারে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এ ভূমিকম্পে দেশটির ২২৮টির মতো মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত মন্দিরগুলোর মধ্যে প্রাচীন রাজধানী হিসেবে খ্যাত বাগানের ১৮৭টি ইটের তৈরি মন্দির রয়েছে।

প্রাচীন এই মন্দিরগুলোর জন্য আগে থেকেই মিয়ানমার সরকার বাগানকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আবেদন করেছিল। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে পরিচিতি পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাগান একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্মতাত্ত্বিক স্থাপনা। কম্বোডিয়ার আংগোর ওয়াট ও ইন্দোনেশিয়ার বড়বুদুরের সাথে একে তুলনা করা হয়।

বাগান পর্যটকদের কাছেও আকর্ষণীয় গন্তব্য। এখানে প্রায় তিন হাজারের মতো মন্দির রয়েছে। এর আগে ১৯৭৫ সালে ভূমিকম্পে এখানকার মন্দিরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। মিয়ানমার ইতোমধ্যে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করে ফেলেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির দ্রুত পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু তা এখন আগের মতো শক্তিশালী কাঠামোতে এখন নেই।

ইতিহাসবিদ ও ইয়াঙ্গুন হেরিটেজ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান থান্ট মাইন্ট ইউ সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, বাগান মন্দিরগুলো সবার আগে দেশের সাধারণ মানুষের পরিদর্শনের জন্য রাখা উচিৎ। এটি বিদেশি পর্যটকদের খেলার মাঠ নয় যে তারা যত্রতত্র বিচরণ করে বেড়াবেন। মিয়ানমারের শিক্ষার্থী, তীর্থযাত্রী ও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সুশৃঙ্খলভাবে এ ঐতিহ্যবাহী স্থান ঘুরে ঘুরে দেখানোর পরিকল্পনা কেন্দ্রে থাকা উচিত।’

তিনি বলেন, ‘সমস্ত বাণিজ্যিক কার্যক্রম প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চল থেকে অবশ্যই অপসারণ করা উচিত।

নবম থেকে ত্রয়োদশ শতাব্দিতে বাগান নগরটি প্যাগান রাজ্যের রাজধানী ছিল। একাদশ ও ত্রয়োদশ শতকের মধ্যে রাজ্যের ১০ হাজার বৌদ্ধ মন্দির, প্যাগোডা ও মঠ নির্মিত হয়েছিল বাগানে। যার মধ্যে দুই হাজার ২০০ এরও বেশি মন্দির ও প্যাগোডা এখনো পর্যন্ত টিকে আছে। শহরটির আয়তন ১০৪ বর্গ কিলোমিটার বা ৪০ বর্গ মাইল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর