যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াস্থ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অগ্রসরতার নতুন নতুন ধাপ পার করছে। মিলছে নতুন স্বীকৃতি ও সম্মাননা। সবশেষ ভার্জিনিয়া স্টেট অ্যাসেম্বলিতে বিশেষ স্বীকৃতি ও সম্মাননা পেলো এই বিশ্ববিদ্যালয়। যার মালিকানায় রয়েছেন বাংলাদেশি-আমেরিকান আইটি ও শিক্ষা উদ্যোক্তা ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ।
এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ভার্জিনিয়া স্টেট সিনেটে সম্মাননা ও স্বীকৃতি পায় ডব্লিউইউএসটি।সেবার ৪০ জন সিনেটরের পক্ষ থেকে সাইটেশন পাবার পর এবার জেনারেল অ্যাসেম্বলিতে ভার্জিনিয়ার ১০০ সদস্যের হাউজ অব ডেলিগেটসে বিশেষ সম্মাননা পেলো ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি-ডব্লিউইউএসটি।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সোমবার ভার্জিনিয়ার রাজধানী শহর রিচমন্ডের অ্যাসেম্বলি হলে ফেয়ারফ্যাক্স কাউন্টির ডিস্ট্রিক্ট সেভেনের ডেমোক্র্যাট ডেলিগেট ক্যারেন কিইস গামাররা তার উপস্থাপনায় তুলে আনেন এই বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রসঙ্গ। জানান, চেয়ারম্যান ও চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ ও প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কারাবার্কে নেতৃত্বে ডব্লিউইউএসটি অগ্রসরতার কথা। যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শিক্ষার বিস্তার এবং ভবিষ্যতের জন্য আশা জাগানিয়া অবদান রাখার জন্য সম্মাননা প্রস্তাব তোলেন ক্যারেন কিইস গামাররা। তার উপস্থাপনা শেষ হতে স্পিকার ডন স্কটের নেতৃত্বে ১শ ডেলিগেটস ও গ্যালারিতে উপস্থিত সকল অতিথিগণ তুমুল করতালির মাধ্যমে সম্মননা জানান ডব্লিউইউএসটিকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ ও প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কারাবার্কের নেতৃত্বে ১৩সদস্যের এই প্রতিনিধি দল এসময় অ্যাসেম্বলি হলে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদের মধ্যে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএফও ফারহানা হানিপ, আবুবকর হানিপ ও ফারহানা হানিপের জ্যেষ্ঠ কন্যা সাইবার সিকিউরিটির শিক্ষার্থী নাফিসা নওশিন, স্কুল অব বিজনেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মার্ক রবিনসন, স্কুল অব বিজনেস ও জেনারেল এডুকেশন ফ্যাকাল্টি প্রফেসর সালমান এলবাদর, জেনারেল এডুকেশন অ্যান্ড সেন্টার ফর স্টুডেন্ট সাকসেস এর অ্যাসিসট্যান্ট ডিরেক্টর ড. হুয়ান লি, বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং ডিরেক্টর হোসে উর্তেগা, স্টুডেন্ট সাকসেস ও ক্যারিয়ার সার্ভিস ম্যানেজার র্যাচেল রোজ, ক্যারিয়ার সার্ভিস ও আইটি ম্যানেজার অমিত গুপ্ত, স্টুডেন্ট গর্ভামেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সেলিন ইগিত এবং ইনফরমেশন টেকনলজির মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. নাঈম হাসান।
অ্যাসেম্বলি হলে সম্মাননা অনুষ্ঠান শেষে ভার্জিনিয়ার ৪৮তম অ্যাটর্নি জেনারেল জেসন মিয়ারেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ডব্লিউইউএসটি প্রতিনিধি দল। কমনওয়েলথ অব ভার্জিনিয়ার বারবারা জনস বিল্ডিংয়ে এই সাক্ষাতের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হন স্টেট অ্যাটর্নি জেনারেল। ডব্লিউইউএসটির পক্ষ থেকে রিপাবলিকান এই অ্যাটর্নি জেনারেলের হাতে স্যুভেনির তুলে দেয়া হয়। পরে ফটোসেশনের মাধ্যমে এই বৈঠক শেষ হয়।
এদিকে এশিয়ান কমিউনিটি নিয়ে বহুবছর ধরে সফলতার সাথে ভার্জিনিয়ার রিচমন্ডে কাজ করে আসছে এমন চারটি সংগঠনের আয়োজনে একটি মিট অ্যান্ড গ্রিট অনুষ্ঠান ছিলো সন্ধ্যায়। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভার্জিনিয়ার ৭৪তম গভর্নর রিপাবলিকান দলের গ্লেন ইয়ংকিন। বেশ কয়েকজন সিনেটর ও হাউজ অব ডেলিগেটস এতে উপস্থিত ছিলেন, যেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয় ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির প্রতিনিধি দলকে। ভার্জিনিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ নানা কথা উঠে আসে গভর্নর গ্লেন ইয়ংকিনের বক্তৃতায়। নতুন নতুন প্রোগ্রামের মাধ্যমে ইন্ড্রাস্টিতে কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভূমিকা রাখছে তা উল্লেখ করেন তিনি।
এই অনুষ্ঠানেও ডব্লিউইউএসটির সফলতার কথা তুলে ধরেন ডিস্ট্রিক সেভেনের ডেলিগেট ক্যারেন কিইস গামাররা।
আর স্টেটে শিক্ষা সেবায় অনন্য ভূমিকা রাখায় ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ ও প্রেসিডেন্ট ড. হাসান কারাবার্কে সাধুবাদ জানান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সফলতা কামনা করেন গভর্ণর গ্লেন ইয়ংকিন। ডিনারের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই আয়োজন।
এই স্বীকৃতিকে পাথেয় করে নতুন উদ্যম ও উদ্দীপনা নিয়ে রিচমন্ড থেকে ভার্জিনিয়ায় ফিরে আসে ডব্লিউইএসটি টিম।
২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ও বাংলাদেশি-আমেরিকান আইটি ও শিক্ষা উদ্যোক্তা ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপের ব্যবস্থাপনা ও নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষণ ও পরিচালন পদ্ধতিতে আসে ব্যাপক পরিবর্তন। যার মধ্য দিয়ে ঘটেছে দ্রুত প্রসার, শিক্ষার্থীদের কাছে হয়ে উঠে জনপ্রিয়। তিনবছরের ব্যবধানে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩০০ থেকে বেড়ে দাড়িয়েছে ১৭০০।
এখানে তথ্য-প্রযুক্তি, সাইবার সিকিউরিটি ও ব্যবসায়িক প্রশাসনের উপর ব্যাচেলর ও মাস্টার্স কোর্সে বর্তমানে বিশ্বের ১২১ দেশের শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। সম্প্রতি ভার্জিনিয়ার আলেক্সান্দ্রিয়ায় বৃহৎ ভবনে গড়ে তোলা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির নতুন ক্যাম্পাস।