প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রবাসীদের দেশ ও প্রবাসে দেশের মানোন্নয়নে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে দুবাইয়ে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এনআরবি সিআইপি অ্যাসোসিয়েশনের সম্মাননা ও উন্মুক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।
সম্মাননা অনুষ্ঠানে এনআরবি সিআইপি অ্যাসোসিয়েশন ৩২ দেশের ৯৫ জন সিআইপিকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এসময় প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের দক্ষ কর্মীর চাহিদা রয়েছে। আমরা আরও দক্ষ কর্মী তৈরির ব্যবস্থা করব। আপনাদের সচেতনতা ও সহযোগিতা জরুরি।
সিআইপিদের বিভিন্ন দাবির প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি নিজেও একজন প্রবাসী। আপনারা যে দাবি জানিয়েছেন, সেটি নিয়ে আমি আশির দশক থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। আপনারা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি দিলে আমি সেটি নিয়ে সরাসরি কাজ করব। আপনাদের দাবির সঙ্গে আমিও একমত পোষণ করছি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, আমিরাতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর, বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন।
অনুষ্ঠানের উন্মুক্ত আলোচনায় এনআরবি সিআইপি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহতাবুর রহমান নাসির ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াসিন চৌধুরীসহ বিশ্বের নানা দেশ থেকে আসা সিআইপিরা তাদের বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করেন।
এসময় বাংলাদেশ বিমানের টিকিট মূল্য কমানো ও প্রয়োজনে প্রবাসীদের জন্য সরকারের ভর্তুকি প্রদান এবং বিমান বন্দরে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধের দাবিসহ এসময় বক্তারা বলেন সিআইপিদের জন্য দেশে পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি, জাতীয় সংসদে প্রবাসীদের জন্য সংরক্ষিত আসন রাখা, ওমানের ভিসা চালুর জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা, প্রবাসী শ্রমিক ও নারীকর্মীদের সুযোগ সুবিধা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবি করেন।
এসব দাবির প্রেক্ষিতে কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন বলেন, দেশের স্বার্থে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাওয়ার নামই দেশপ্রেম। এদেশ (আরব আমিরাত) যখন দক্ষ শ্রমিকের সার্টিফিকেট যাচাইয়ের মাধ্যমে কর্মী নেওয়া শুরু করে তখন দেখা গেল ৭০ শতাংশ সার্টিফিকেট জাল। সার্টিফিকেট যাচাই করতে গিয়ে দেখেছি প্রায় শতভাগ সার্টিফিকেট ভুয়া। যে কারণে আমাদের এখন ভিসা জটিলতার বহুমুখী সমস্যা পোহাতে হচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা এখন পর্যন্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায় বিনিয়োগ করে যাচ্ছেন। আমাদের উচিত আরও বড় পরিসরে বিনিয়োগ করা। যেখানে ভারতীয়রা স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করে একচেটিয়া ব্যবসা করে যাচ্ছে অথচ এই খাতে সম্ভাবনা থাকলেও আমাদের বিনিয়োগ নেই। শিক্ষাখাতে রয়েছে অপার সম্ভাবনা, তবে এই খাতেও আমাদের কোন বিনিয়োগ নেই। এসব খাতে বিনিয়োগ করলে আমাদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রবাসীদের জন্যই বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সকল কোটা পরিপূর্ণ হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র সম্পদ বাংলাদেশের মানুষ। দেশের মানুষ কাজ করছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা এক কোটি প্রবাসী দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি।
এসময় তিনি করোনাকালীন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিষয়টিও তুলে ধরেন।