ভুয়া প্রাতিষ্ঠানিক সনদ দেখিয়ে দক্ষ কর্মী ক্যাটাগরিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা পাওয়ার পথ বন্ধ হলো। ভুয়া প্রাতিষ্ঠানিক সনদ দেখিয়ে দক্ষ কর্মী ক্যাটাগরিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আসছিলেন বাংলাদেশিরা। বিষয়টি টের পেয়ে কঠোর উদ্যোগ নিয়েছে আমিরাত কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশিদের ভুয়া প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট ব্যবহার বন্ধে নেয়া হয়েছে বেশকিছু পদক্ষেপ। আগের নিয়মে সার্টিফিকেট জমা দিয়ে গত তিন দিন ধরে ভিসা পাচ্ছেন না বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশি ট্রাভেল এজেন্সির একাধিক সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে বর্তমানে লেবার ভিসা করতে না পারায় অনেকেই পার্টনার বা ইনভেষ্টর ভিসা নিচ্ছেন।
২০১২ সালের আগস্ট মাস থেকে বাংলাদেশিদের জন্য শ্রম ভিসা বন্ধ ঘোষণা করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। গৃহকর্মী ও পেশাজীবী উচ্চ শিক্ষিত কর্মীদের ভিসা চালু রাখা হয়। তবে করোনা পরবর্তী সময় কয়েক বছরে ভ্রমণ ভিসা নিয়ে আমিরাতে এসে কাজের ভিসায় রূপান্তরিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হওয়ায় এ সময় কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন প্রায় তিন লাখ বাংলাদেশি। এরমধ্যে ২০২৩ সালের প্রথম ৬ মাসে ৪২ হাজার বাংলাদেশি এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন।
তবে জুন মাস থেকে আবারও বাংলাদেশিদের সাধারণ শ্রমিক ভিসা, ভ্রমণে এসে ভিসা পরিবর্তন এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগও বন্ধ করে দেয় আমিরাত সরকার। কেবলমাত্র দুবাই শহরে উচ্চ শিক্ষিতদের জন্য স্কিল ভিসা চালু রাখা হয়। এই সুযোগে অসাধু একটি চক্র অনলাইনে ভুয়া সনদ দাখিল করে ভিসা পাইয়ে দিচ্ছিল।
এই পদ্ধতিতে সার্টিফিকেট জমা দিয়ে গত তিন দিন ধরে ভিসা পাওয়া যাচ্ছে না বলে একাধিক বাংলাদেশি ট্রাভেল এজেন্সির সূত্রে জানা গেছে।
দুবাই থেকে বাংলাদেশি একটি ট্রাভেল এজেন্সির ম্যানেজার শাহিন জানান, বেশ কয়েক দিন ধরে সঠিক সার্টিফিকেট অনলাইনে দাখিলের অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না। আবেদন সাবমিট করার পরে সার্টিফিকেট কপি নিয়ে লেবার অ্যান্ড ইমিগ্রেশন দপ্তরে গিয়ে অনুমোদন নিয়ে আসার কথা বলছে কর্তৃপক্ষ। বেশিরভাগভুয়া সনদ দাখিল করে ভিসা আবেদনের কারণেই এমনটা হয়েছে।'
দুবাই প্রবাসী শেখ ফজলুর রহমান বলেন, কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে আমিরাতে তথা বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। জাল সার্টিফিকেট দিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করে অনেকেই ভিসা পেয়েছেন। অতিরিক্ত ভুয়া সনদ জমা হওয়ার কারনে এখন আমিরাত সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। ফলে এ পদ্ধতিতে ভিসা মিলছে না। এতে যারা অর্জিনাল সার্টিফিকেট দিয়েও ভিসা জমা করছেন তাদেরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এব্যাপারে দুবাইয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন জানান, প্রতিদিন কনস্যুলেট প্রায় ৬০০-৭০০ ভিসা সত্যায়নের আবেদন আসত। যার সবগুলো দক্ষ শ্রমিক ভিসা। কিন্তু ভিসা সত্যায়নের সময় শিক্ষাগত সনদ যাচাই করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে সেগুলো বেশিরভাগই ভুয়া। এমনটা চলতে থাকলে দুবাইয়ে ব্যাংকার, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, নার্স, আইসিটি গ্রাজুয়েটদের ভিসা পাওয়ার সুযোগ হারানোর আশঙ্কা আছে।