যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির ৪৮তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।
রোববার (২৩ মে) কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষাপটে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা অংশ নেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তির ৪৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
দূতাবাসের প্রথম সচিব তাহসিনা আফরিন শারমিনের সঞ্চালনায় এ আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ, কমার্শিয়াল কাউন্সেলর রেদোয়ান আহমেদ এবং প্রথম সচিব (শ্রম) মুতাসিমুল ইসলাম প্রমুখ।
এসময় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনন্য অবদানের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলেন, ‘বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখে বিশ্বনন্দিত নেতায় আবির্ভূত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। যে কারণে সারা বিশ্ব আজ তাকে গর্বের সঙ্গে স্মরণ করছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃত্বে, দীর্ঘ নয় মাস মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিজয়। ফ্যাসিবাদবিরোধী, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ও শোষণের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামকে বিশ্ব মানবতার ইতিহাসে চির অম্লান করে রাখার জন্য বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৭৩ সালের ২৩ মে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদান করে।’
এ সম্মান পাবার পর বঙ্গবন্ধু তার বক্তৃতায় বলেছিলেন, “এ সম্মান কোন ব্যক্তি বিশেষের জন্য নয়। এ সম্মান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্মদানকারী শহীদদের, স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সেনানীদের। জুলিও কুরি শান্তি পদক সমগ্র বাঙালী জাতির।”
বঙ্গবন্ধুকে পদক পরিয়ে দেয়ার সময় বিশ্ব শান্তি পরিষদ এর মহাসচিব ঘোষণা করলেন, “শেখ মুজিব শুধু বঙ্গবন্ধু নন, আজ থেকে তিনি বিশ্ববন্ধুও বটে।”
শান্তির দূত বঙ্গবন্ধু “সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়” এবং সকল বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানকে তার পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু আজ উপস্থিত না থাকলেও তার মহান আদর্শ, উদ্দেশ্য এবং তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ আজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শান্তির স্বপক্ষে বাংলাদেশ কর্তৃক গৃহীত বিবিধ পদক্ষেপ বিশ্বব্যাপী প্রভূত প্রশংসিত হয়েছ্। মিয়ানমার থেকে ১.১ মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। প্রতিবছর জাতিসংঘে বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত শান্তির স্বপক্ষে ‘রেজুলিয়শন’ ব্যপকভাবে গৃহীত হয়। এছাড়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।