যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবের আমেজে রোমে বাংলাদেশ দূতাবাস ২৬ মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন করেছে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জাতির পিতা ও মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন, বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত, বাণী পাঠ, প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা সম্প্রচার, বিদেশি ও বাংলাদেশি আলোচকদের অংশগ্রহণে আলোচনা সভা এবং শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
দূতাবাসের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মূল পর্বের প্রথমে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ ও প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা সম্প্রচার করা হয়। এর পর রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন।
বক্তব্যের পর আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথি, কূটনৈতিক কোরের সদস্য এবং প্রবাসী বাংলাদেশী নেতৃবৃন্দের অনলাইন উপস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত দূতাবাসে সম্প্রতি স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এর উদ্বোধন করেন।
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন ইতালিতে নিযুক্ত হলি সি এর অ্যাপোস্টলিক নুনসিও ও কূটনীতিক কোরের ডীন মনসাইনিয়র এমিল পল সেরিং, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত এনরিকো নুনজাতা, রোমস্থ জাতিসংঘের সংস্থাসমূহে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের স্থায়ী প্রতিনিধি থানাওয়াত তিয়েনসিন, রোমস্থ ভারতীয় দূতাবাসের মিশন উপ-প্রধান নীহারিকা সিং, ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া অধিদপ্তরের প্রধান কাউন্সেলর জিয়ানপাওলো নেরি প্রমুখ।
এছাড়া আলোচনা সভায় ইতালি, ইউরোপের অন্যান্য দেশে বসবাসকারী এবং বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানকারী প্রবাসী বাংলাদেশী রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ এবং সাংবাদিকরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। আলোচকগণ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান এবং বিগত ৫০ বছরে অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নারী ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বক্তাগণ বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করেন এবং দূতাবাসে স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও অসাধারণ জীবন সম্পর্কে দর্শনার্থীরা ও নতুন প্রজন্ম জানার সুযোগ পাবেন বলে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছে লা সাপিয়াঞ্জা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগও। উল্লেখ্য, স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তী উপলক্ষে ইতালির রাষ্ট্রপতি ও সার্বিয়ার রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে এবং মন্টেনিগ্রোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা বার্তা প্রেরণ করেছেন।
রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, সকল শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। একই সাথে তিনি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিদেশী বন্ধুদের ভূমিকার কথাও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ার জন্য বঙ্গবন্ধু কাজ শুরু করেছিলেন কিন্তু অল্প সময়ে তিনি এ কাজ সমাপ্ত করতে পারেননি। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বৈশিক পরিমন্ডলে একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে মর্মে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুজিববর্ষে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হওয়ার চুড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা অর্জনের পথে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
বিদেশী অতিথিদের আলোচনার শেষে স্থানীয় সঞ্চারি সংগীতায়ন এর পরিচালক সুস্মিতা সুলতানার নির্দেশনায় শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে দেশাত্মকবোধক গান ও নৃত্যের ধারনকৃত ভিডিও সম্প্রচারিত হয় যা সবাইকে মুগ্ধ করে।