ফারুকীকে আওয়ামী দোসর বলা হাস্যকর বললেন আশফাক নিপুন

সংস্কৃতি অঙ্গন, বিনোদন

বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2024-11-17 20:55:03

জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন বর্তমান সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ভাই-ব্রাদার, এ কথা প্রায় সবাই জানেন। তারা একই রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী এ কথা বলাই যায়। বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনে তাদের যে রাজনৈতিক অবস্থান দেখা গেছে, তাতে এ কথা স্পষ্ট। ফারুকী সংস্কৃতি উপদেষ্টা হওয়ার পর থেকেই তাকে নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনা দেখা যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। গুঞ্জন এ পর্যন্ত ছড়িয়েছে যে, তিনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন! এমন প্রেক্ষাপটে বড় ভাইতূল্য ফারুকীকে নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করলেন আশফাক নিপুন। তিনি আজ তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস পোস্ট করেছেন। তা হুবহু তুলে ধরা হলো-

মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে আওয়ামী দোসর বলা হাস্যকর। দু:খজনক না বলে হাস্যকর বললাম কারণ খোদ কট্টর আওয়ামী শিল্পী সমাজ থেকে শুরু করে ক্যাডার বাহিনী পর্যন্ত তাকে নিজেদের দলে দেখতে আগেও স্বাচ্ছন্দবোধ করেন নাই, এখনো করবেন না।

বিশ্বাস না হলে আপনার পাশের আওয়ামীজন কে জিজ্ঞেস করে দেখেন? ছ্যাঁত করে উঠবে! আর উনার পুরোনো কিছু স্ট্যাটাস, ছবিই যদি অকাট্য প্রমাণ হয় তাহলে তার বিপরীতে গত ১৫ বছরে, বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনে নিরন্তর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারকে সমালোচনা করে উনার ফেসবুক পোষ্টও আমলে নেয়া হোক? যেগুলো নিয়ে আওয়ামী শিল্পী সমাজ থেকে শুরু করে খোদ পলাতক প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত চূড়ান্ত বিরক্ত ছিলেন? অথবা আওয়ামী সরকারের আমলে দুইবার উনার সিনেমা আটকে দেয়া আমলে নেয়া হোক?

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

কয়েকটা ফেসবুক পোষ্ট আর একটা/দুইটা ছবি যদি কোন দলের দোসর হওয়ার, সহমত ভাই হওয়ার চুড়ান্ত যোগ্যতা হয় তাহলে গত ১৬ বছরে যেসব শিল্পী নিজেদের 'আপা'র কাছের লোক প্রমাণে, প্লট, পদ, ব্যবসা বাণিজ্য বাগানোর জন্য ভুয়া নির্বাচনী প্রচারণা থেকে শুরু করে 'আপা'র সামনে, পিছনে হাত কচলে, তৈলমর্দন করতে করতে আমাকে আর আমিমনাদের দিনরাত শূলে চড়াতেন তাদের জন্য এক বালতি সমবেদনা। অনেক বেশি শারীরিক কষ্ট করলেন এক জীবনে, বুঝতেও পারেন নাই এর ০.১% করলেও খুশিতে খুশিতে 'আপা'র দোসর ট্যাগ খেয়ে যাতে পারতেন এখন!

দুই তারকা দম্পতি আশফাক নিপুন-এলিটা করিম ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকী-নুসরাত ইমরোজ তিশা

ফারুকীর সংস্কৃতি উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে প্রচুর সমালোচনা। উনি সংস্কৃতির লোক তাই উনাকে এই মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বানানো। উনাকে তো অর্থ, বাণিজ্য, স্বরাষ্ট্র, আইন বা স্বাস্থ্য উপদেষ্টা করা হয় নাই। উনি দেশে বিদেশে সংস্কৃতি অঙ্গনের বিখ্যাত মানুষ, জুলাই আন্দোলনেরও বহুকাল আগে থেকেই ফ্যাসিস্ট সরকারের সমালোচনায় সরব, স্পিরিটে তরুণ তাই হয়ত উনার এই নিয়োগ। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে এই আন্দোলনের স্পিরিট, ডকুমেন্টস ধারণ করার মত কাজ উনি যদি করে দেখাতে না পারেন তাহলে আমিও উনার সমালোচনা করব। ১০০ বার করব। কিন্তু কাজটা তো করে দেখানোর সুযোগ দিতে হবে আগে? সেটাও দেয়া যাবে না কেন? শত শত ফ্যাসিস্ট সমালোচনার বাইরে উনার কয়েকটা ফেসবুক পোষ্ট বা পলক সাহেবের সাথে একটা ছবির কারণে?

এক ফ্রেমে ফারুকীর ভাই-ব্রাদার টিমের নির্মাতা রাজ, নিপুন, রনি ও আদনান

ছোট মুখে বড় একটা কথা বলি তাহলে, বেয়াদবি মাফ করবেন। এই ছাত্র জনতার আন্দোলনে সম্পৃক্ত অনেককেই আমরা চিনি, জানি যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ দুইভাবেই জীবনের কোন না কোন সময়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত ছিল। কেউ ইচ্ছাকৃত, কেউ অনিচ্ছাকৃত, কেউ কৌশলে আর কেউ বাধ্য হয়ে ছিল। কিন্তু আন্দোলনের স্পিরিটে ফ্যাসিস্ট তাড়াতে সবাই এক হয়ে গিয়েছিল। এই ঐক্যই ছিল আমাদের শক্তি। এখন এই ডিভাইড এণ্ড রুল পলিসি কেন? কার বা কাদের সুবিধার জন্য?

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

ফারুকীর কাজের সমালোচনা ১০০ বার করেন। সেটা উনার উপর অর্পিত দায়িত্ব উনি পালন করতে না পারলে করেন। যৌক্তিকভাবে করেন। কিন্তু উনি যা না, যা উনি বলেন নাই, সেটার পিছনে অযৌক্তিক সমালোচনা করে শক্তি নষ্ট কইরেন না। আমি বিশ্বাস করি, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এই মহান আন্দোলনকে ডকুমেন্টেড করার জন্য উনার সেবাবলে সর্ব্বোচ্চটাই ঢেলে দিবেন। সেই সক্ষমতা উনার এবং উনার টিমের আছে। আমি সাগ্রহে তাকিয়ে আছি উনি আমাদের কি কি উপহার দিতে পারেন সেদিকে। না পারলে তখন উনাকে গালমন্দ কইরেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর