শিরোনামের মর্মার্থের সঙ্গে তার চেয়ে আর কে বেশি মানানসই? হ্যাঁ, আবুল হায়াত এ দেশের সেই অভিনয়শিল্পীর একজন, যিনি সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে কোন সমালোচনা-কন্ট্রোভার্সি ছাড়াই পার করে দিলেন নিরেট ভালোবাসা নিয়ে। বিচিত্র চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেছেন ক্যারিয়ারজুড়ে। মঞ্চ, টিভি নাটক থেকে শুরু করে আর্ট ফিল্ম, কমার্শিয়াল ফিল্ম- সব ক্ষেত্রেই তিনি সফল। জটিল চরিত্র ফুটিয়ে তোলার অসামাণ্য ক্ষমতার পাশাপাশি অনবদ্য ব্যক্তিত্ব, ভরাট কণ্ঠশৈলী ও নান্দনিক উচ্চারণ দক্ষতার জন্য তার ভক্ত আট থেকে আশি। একাধারে তুখোড় অভিনেতা, ভালো বাবা, ভালো স্বামী, ভালো সন্তান, ভালো ভাই এবং ভালো শিক্ষক। ফলে তার পুরোটা জীবনই তো বসন্তের রঙে রঙিন।
আজ এই জীবন্ত কিংবদন্তির ৮০তম জন্মদিন। জীবনের এই পর্যায়ে এসে এই বরেণ্য অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্মাতা বলেন, ‘জীবনে অনেক পুরস্কার পেয়েছি। কিন্তু জন সাধারনের যে ভালোবাসা, তাদের কাছ থেকে যে সম্মান পেয়েছি, তার সাথে আসলে কোনো কিছুরই তুলনা চলে না। তাদের এই ভালোবাসার মাঝেই আমি বেঁচে থাকতে চাই। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেই ভালোবাসা বুকে নিয়ে অভিনয় করে যেতে চাই।’
জন্মদিন নিয়ে আলাদা কোনো পরিকল্পনা থাকে না আবুল হায়াতের। পরিবারের সদস্যরাই ঘরোয়াভাবে আয়োজন করেন। বিকেলে এই অভিনেতার জন্মদিন উদ্যাপন করবে টেলিভিশন অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন অভিনয়শিল্পী সংঘ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির সভাপতি আহসান হাবিব নাসিম। তিনি জানান, বিকেলে অভিনয়শিল্পী সংঘের অফিসে কেক কেটে আবুল হায়াতের জন্মদিন উদ্যাপন করবেন শিল্পীরা।
জন্মদিন নিয়ে আবুল হায়াত বলেন, ‘জন্মদিন নিয়ে কখনোই আমার বিশেষ কোনো পরিকল্পনা থাকে না। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাই। এদিন আমার নাতনি শ্রীষার জন্মদিন। ১২টা বাজলেই আমি ফোন করি, তারাও আমাকে ফোন করে। এ ছাড়া রাত থেকেই আত্মীয়স্বজন, সহকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষীরা ফোন করে, খুদে বার্তার মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানায়।’
এ মাসের শেষ দিকে প্রকাশ হবে আবুল হায়াতের আত্মজীবনী ‘রবি পথ’। জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশের ইচ্ছা থাকলেও সময়স্বল্পতার কারণে তা সম্ভব হয়নি।
তিন শতাধিক পৃষ্ঠার বইটি লিখতে আবুল হায়াতের সময় লেগেছে ১০ বছর। আত্মজীবনীতে নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন তিনি। রবি পথের প্রচ্ছদ করেছেন তাঁর বড় মেয়ে অভিনেত্রী বিপাশা হায়াত। প্রকাশ হবে সুবর্ণ প্রকাশনী থেকে।