নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) তাঁর জীবনের প্রথম বাজেট পেশ করবেন। ভোটের প্রতিশ্রুতি বাজেটে কতটা প্রতিফলিত হতে পারে তা নিয়ে অনেক বির্তক আছে। নতুন সরকার নতুন মন্ত্রিসভা এর একটা প্রতিফলন চায়। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান ভোটের প্রতিশ্রুতি যাতে বাজেটে প্রতিফলন ঘটে।
এজন্য অর্থমন্ত্রী সম্প্রতি প্রাক-বাজেট আলোচনায় সেই প্রতিশ্রুতির একটা বিষয় বলেই ফেললেন যে, প্রতিটি পরিবারের একজনের চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।
অর্থ বিভাগের সূত্র জানায়, জুনের ১৩ তারিখে বাজেট ঘোষণার এক প্রস্তাব অর্থমন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়েছে। অর্থ সচিব আব্দুল রউফ তালুকদার ইতোমধ্যে এ প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন। তিনি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ১৩ তারিখে সংসদে বাজেট ঘোষণার বিষয়টি মাথায় রেখে বাজেটের কাজ করে যেতে বলেছেন।
জুনের প্রথম সপ্তাহে ৪ থেকে ৬ তারিখ পর্যন্ত ঈদুল ফিতরের ছুটি হওয়ায় সেই সময়ে বাজেট ঘোষণা করা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে বৃহস্পতিবার বাজেট ঘোষণা করা হবে। রোববার (২৪ মার্চ) সিঙ্গাপুর থেকে অর্থমন্ত্রী দেশে ফিরলে অর্থ বিভাগের প্রস্তাবে সায় দেবেন বলে জানা গেছে।
আগামী ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে দীর্ঘমেয়াদি টেকসই উন্নয়নের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এছাড়া গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে দুই বছরের মধ্যে রূপকল্প-২১ বাস্তবায়ন। ঐ সময়ে সম্পূর্ণ রূপে দারিদ্র্য দূর করে স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী পালন করবে নতুন সরকার।
দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। গত ১০ বছরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার বাড়ানো হবে। সোয়া পাঁচ লাখ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়েছে অর্থবিভাগে ও পরিকল্পনা কমিশন।
ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রী সরকারের আয় বাড়ানোর জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নির্দেশনা দিয়েছেন। এক্ষেত্রে কর না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়ানোর উপর পরামর্শ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী এরই মধ্যে বলেছেন, নতুন ভ্যাট আইন আগামী বাজেট থেকে বাস্তবায়ন হবে। ভ্যাটের হার হবে ৫, ৭ ও ১০ শতাংশ। গত অর্থবছর সরকার দেশের ব্যবসায়ীদের চাপে পড়ে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করতে পারেনি। যার ফলে ব্যাপক হারে রাজস্ব হারিয়েছে।
জানা গেছে, উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দ্রুত এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে। পদ্মা সেতুসহ দশ মেগা প্রকল্প, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগের ১০ প্রকল্প ও সামাজিক সুরক্ষার মতো প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ জোর দেওয়া হয়েছে।
আগামী বাজেটে সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয়ের নাম হচ্ছে ‘আমার গ্রাম আমার শহর’। অনেকেই এ বিষয়টিকে একটি উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দর্শন বলে আখ্যা দিয়েছেন এই বিষয়টির ফলে কাঁচা রাস্তা পাকা হবে, থাকবে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সুবিধা। এই দর্শনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়ে। শহরের মতো গ্রামের মানুষ সব ধরণের নাগরিক সুবিধা পাবেন।