ফুডপান্ডায় খাবার অর্ডার দিয়ে ভোগান্তি, গ্রাহকদের ক্ষোভ!

ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 00:54:58

সারা দেশে চলছে বিধিনিষেধ, এ কারণে ঘরেই থাকছেন মানুষ। ঘরবন্দির এই সময়ে অনেকেই শখের বশে বা নিরূপায় হয়ে অনলাইনে খাবার অর্ডার করে থাকেন। এতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদে ক্ষুধা নিবারণ করা হলেও এটা যেন ভোগান্তিতে রূপান্তর করেছে অনলাইনে অর্ডার নিয়ে খাবার ডেলিভারি দেওয়া প্রতিষ্ঠান ‘ফুডপান্ডা।’

শুরু থেকেই এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ ভোক্তাদের। কিন্তু এই করোনাকালীন কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে এটা যেন পাহাড় সমান হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাবার মিসিং, কম দেওয়া বা একটার বদলে আরেকটা খাবার দেওয়ার মতো অভিযোগ তো রয়েছেই। নতুন করে যুক্ত হয়েছে ভাউচার ও হেল্পলাইন বিড়ম্বনা।

সম্প্রতি পেটুক কাপল নামের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ থেকে একটি ভিডিওর মাধ্যমে অভিযোগ জানানো হয়, ফুডপান্ডা থেকে খিচুড়ি আর কাচ্ছির রাইস অর্ডার করে তারা পেয়েছেন কাচ্ছির রাইস আর রোস্ট। খিচুড়ির জায়গায় কেন রোস্ট দেওয়া হলো এমন অভিযোগ করা হলে ফুডপান্ডার হেল্পলাইন থেকে ৫৩ টাকার একটি ভাউচার দেওয়া হয়। ভাউচারের পরিবর্তে খিচুড়ি চাইলে প্রায় তিন ঘণ্টা চ্যাটিং হেল্পলাইনের সময়ক্ষেপণ করেও সমাধান দেওয়া হয়নি।

গ্রাহকদের যত অভিযোগ

এমন অভিযোগ ফুডপান্ডায় নিয়মিত অর্ডারকারী রিফাত হাসান দিপ্ররও। তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, গতমাসে দুইবার আমার সাথে প্রোডাক্ট মিসিং'র ঘটনা ঘটেছে। একবার খাবার মিসিং হয়েছে আরেকবার বাজার। একবারও তারা কোন টাকা রিফান্ড করেনি। হেল্পলাইনে যোগাযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। ডেলিভারি ম্যানকেও জানিয়েছিলাম, তারা বলেছে যে তাদের প্রোডাক্ট ভেতরে কি আছে সেটা তারা জানেন না। প্যাকেট খোলা তাদের জন্য নিষেধ।

তানজুমানা আলম রিয়া নামে আরেক অর্ডারকারী বলেন, একবার ফুডপান্ডার ডেলিভারি ম্যান আমাকে নষ্ট পিৎজা দিয়ে গেছে। আমি নষ্ট পিজা পেয়ে ডেলিভারি ম্যানকে ফোন দিলে তিনি আমাকে হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে বলেন। কাস্টমার কেয়ারে কথা বললে অনেক ঝামেলা তাই পিৎজা ফেরত দিয়ে আবার নতুন করে অর্ডার দিয়েছি।খাবার নেওয়ার সময় চেক করে নেওয়া উচিত।

জামিন তৃণা নামে এক অর্ডারকারী বলেন, কিছুদিন আগে ফুডপান্ডায় অর্ডার করেছি। ডেলিভারির আগ থেকে বৃষ্টি হচ্ছিলো অনেক। ডেলিভারি ম্যান আমাকে কল দিয়ে বলেন, ‘বৃষ্টির জন্য আমি আপনার ঠিকানায় যেতে পারব না আপনি একটু সামনে এসে নিয়ে যান’। আমি বললাম, ‘আপনি একটু ওয়েট করেন, বৃষ্টি কমলে নিয়ে আসেন’। কিন্তু আমার উত্তরে কাউকে পাঠাতে বললেন। একপর্যায়ে ডেলিভারি ম্যান বলেন, নিয়ে যান, না হলে অর্ডার ক্যানসেল করে দিব।

তৃণা ক্ষোভ নিয়ে আরো বলেন, আমি যদি গিয়ে নিয়ে আসতে পারতাম তাহলে ওদেরকে অর্ডার কেন দিলাম!

ফুডপান্ডার বিরুদ্ধে রয়েছে অফার বা ডিসকাউন্ড নিয়ে ভাওতাবাজির মত অভিযোগও। এসব নিয়ে সুমাইয়া স্মৃতি নামে একজন বলেছেন, ডিসকাউন্টে অনেক সময়ই খাবার ভালো থাকেনি, ভুল আসছে, ক্যানসেল হয়েছে। কিছুক্ষণ পরপর সম্ভাব্য সময় পরিবর্তন করে এরা।

একবার, সন্ধ্যা ৭ টা ২০ এ স্ন্যাকস অর্ডার করে রাত ৯টায় জানতে পারি ডেলিভারিম্যান ফুডপান্ডা থেকে মাত্র অর্ডার পেয়েছে। আগে থেকে পেমেন্ট করা ছিল। পরে হেল্প সেন্টারের মেসেজ সার্ভিসে যোগাযোগ করে তেমন কোন ফল পাইনি। সন্ধ্যার খাবার রাত ৯টা ২০ এ আসছে সেটাও আবার ভুল! ডেলিভারি ম্যান বলেছেন, চেঞ্জ করে আনি! কিন্তু পূর্ববর্তী ঘটনা থেকে আর সাহস হয়নি। এরপর অ্যাপটা আনইন্সটল করে দেই।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে ফুডপান্ডার হেড অব পিআর সৌরভ দে’র সঙ্গে মোবাইল ফোনে কল ও মেসেজ করে যোগাযাগ করা হলে তিনি কোন উত্তর দেননি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর