শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে যথাযথভাবে আইন পরিপালন করতে নোটিশও দিয়েছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের এক তদন্তে দেখা গেছে, শ্রম আইন ১২ ভাবে লঙ্ঘন করেছে গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ। যা যথাযথভাবে পরিপালন করতে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। যার অনুলিপি দেওয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেও। কিন্তু তাতেও টনক নড়েনি গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষের। গত মার্চ মাসে নোটিশ দেওয়া হলেও আইন বাস্তবায়নে কোনো অগ্রগতি হয়নি। যদিও চলতি মাসের শুরুতে গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে মালিকপক্ষের কাছে শ্রম আইন বাস্তবায়নের জন্য দাবিনামা পেশ করা হয়েছে।
গ্রামীণ টেলিকম শ্রম আইনের যেসব ধারা লঙ্ঘন করেছে সেগুলো হলো- নিজস্ব নিয়োগ বিধি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের মহাপরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত নয়, শ্রমিকদের আইনের বিধান মোতাবেক নিয়োগ দেওয়া হয়নি, বিধি মোতাবেক শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও ছবিসহ পরিচয়পত্র দেওয়া হয়নি, কর্মীদের সার্ভিস বই রাখা হয়নি, নির্ধারিত ফরম-৩৪ অনুযায়ী কর্মীদের দৈনিক হাজিরা রক্ষাণাবেক্ষণ করা হয় না, কাজের সময়সূচির নোটিশ মহাপরিদর্শক কতৃক অনুমোদিত হয়নি, আইনের বিধান অনুযায়ী কাজের নগদায়ন সুবিধা প্রদান করা হয়নি, ১৮ দিনের জন্য একদিন বাৎসরিক ছুটি প্রদান করা হয় না, নির্ধারিত ফরম-৯ অনুযায়ী ছুটির রেজিস্ট্রার রক্ষাণাবেক্ষণ করা হয় না, কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয় নি, কোম্পানির পলিসি অনুযায়ী দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি দেওয়ার কথা থাকলেও সার্ভিস বিভাগের কর্মীদের তা দেওয়া হচ্ছে না, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন হতে রেজিস্ট্রেশন লাইসেন্স গ্রহন করা হয় নি।
সম্প্রতি এসব উল্লেখ করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (সাধারণ) আবুল হাজ্জাত সোহাগ স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ দেওয়া হয় গ্রামীন টেলিকমকে।
এ বিষয়ে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘শ্রম আইন লঙ্ঘন করায় সাধারণ কর্মীরা বিপাকে পড়েছেন। বর্তমান ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে আমাদের তিন বছর ধরে কোনো ইনক্রিমেন্ট হচ্ছে না। আমরা কিভাবে আমাদের সংসার চালাচ্ছি তা আমরাই জানি। অন্যদিকে আমাদের ছুটির দিনেও কাজ করতে হয়। কিন্তু ওভারটাইম দেওয়া হয় না।’
তিনি আরো বলেন, ‘শ্রম আইন অনুযায়ী লভ্যাংশের একটি অংশ শ্রমিকদের পাওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না। এসব বিষয়ে আমরা একাধিকবার মালিকপক্ষের সাথে আলোচনা করেছি। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। সম্প্রতি এসব বিষয়ে আমরা মালিকপক্ষের কাছে দাবিনামা দিয়েছি। যদি তা দ্রুত বাস্তবায়ন না হয় তাহলে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেবো।’
এসব অভিযোগের বিষয়ে অবস্থান জানতে গ্রামীণ টেলিকমের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. শাহজাহানের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।