বন্দরনগরী চট্টগ্রামের চাক্তাই খালের মোহনায় পণ্যর হাতবদলে লেনদেন হয় কোটি টাকা। দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে চাক্তাই খাল। এই পথ পূরণ করছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদী পথের পণ্যের চাহিদা।
প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা চাক্তাই খাল একটি ঐতিহ্যের অংশ। এখানে জোয়ার-ভাটার সঙ্গে মিল রেখে মালিক-শ্রমিকরা পণ্য ওঠানামার কাজ করে।
এই পথে পণ্য চট্টগ্রামের ব্যবসায়ের প্রাণ খাতুনগঞ্জের গুদামে সংরক্ষণ করা হয়। এরপর পণ্যর চাহিদা অনুযায়ী খাতুনগঞ্জে হয়ে চাক্তাই খাল দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রেরণ করা হয়।
সকাল থেকে রাত অবধি এখানে ব্যস্ত সময় পার করে শ্রমিকরা। ট্রলার থেকে মাল নামিয়ে গুদাম করে সংরক্ষণ , আবার গুদাম থেকে বিক্রিত মাল ট্রলার বোঝাই করে শ্রমিকরা। এই কাজকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন পাঁচ হাজারের অধিক শ্রমিক। ক্ষেত্রবিশেষে পণ্যর বস্তার ওজনের ওঠানামায় ওপরে ৫-৭ টাকা করে পায় প্রতি শ্রমিক।
এসব ভোগ্যপণ্যের মধ্যে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, ডাল, ময়দা, নারকেল, সয়াবিন তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সংখ্যা বেশি।
১২ বছরের বেশি সময় ধরে মজুরির কাজ করা শ্রমিক আব্দুল খালেক বার্তা২৪.কমকে বলেন, সারাদিন ধরে এখানে পণ্যর ওঠানামা কাজ চলে। কখনও রাত তিনটা কখনও বা ভোর পাঁচটায় ট্রলার করে মাল পাঠানো হয়।
এখানে কর্মরত বেশিরভাগই শ্রমিক ও ট্রলারের মালিকের বাড়ি সন্দীপ এলাকায়। প্রতিদিন ৫শর বেশি ট্রলার নির্দিষ্ট গন্তব্যে মালামাল নিয়ে যায়। এসব ট্রলারে ১২০-১৪০ মেট্রিক টন পণ্যের ধারণক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া মাঝারি আকারের নৌকায় পণ্য বহন করা হয়।
চাক্তাই খালকে চট্টগ্রামের জন্য দুঃখ বলা হয়ে থাকে। বিশেষ করে বর্ষায় পানির তীব্র স্রোতে মালামাল নষ্ট ও ওঠানামায় সমস্যা সৃষ্টি করে। এলক্ষে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) সুইস গেট নির্মাণের সিদ্ধান্তে নিয়েছে। এতে সমস্যা অনেকাংশে কমে আসছে বলে ধারণা করছে সিডিএ।
এ বিষয়ে মনোযোগ আর্কষণ করা হলে ট্রলার চালক ওমর ফারুক বার্তা২৪.কমকে জানান, বর্ষায় পণ্যর ক্ষয়ক্ষিত হয়ে থাকে, কাজ করতে সমস্যা হয়। এমনভাবে সুইস গেট নির্মাণ করা উচিত যাতে করে দোলাই ও চাক্তাই খালের পণ্য পরিবহন আরও সহজতর হয়।