সারাদেশে নিয়ম করে লোডশেডিং হচ্ছে। রাজধানীর ভেতরেই কোথাও কোথাও তিন ঘণ্টা, অভিজাত এলাকাগুলোতে এক ঘণ্টা। আশেপাশের এলাকাগুলো এবং দূরের শহরের অবস্থা আরও খারাপ। উপজেলার দিকে, গ্রাম গঞ্জে বিদ্যুৎ আসে না বললেই চলে। সরকারের তরফ থেকে বোঝানো হয়েছে ভবিষ্যৎ সম্ভাব্য অর্থনৈতিক শঙ্কার সতর্কতায় এই আগাম সিদ্ধান্ত। মুদ্রাস্ফীতি, ডলারের রিজার্ভ এবং জ্বালানি সংকটের কারণ হিসেবে দেখানো হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই বিতর্কতে পরে আসি, তার আগে বোঝা উচিত বর্তমান লোডশেডিংয়ে আমাদের লাভ না ক্ষতি? ক্ষতির পাল্লা যদি ভারী হয়, তবে যে মহাবিপদ আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে এটা নিঃসন্দেহে।
কিছুদিন আগে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে শতভাগ বিদ্যুতায়িত ঘোষণা করা হলো। তারও আগে সংসদ সদস্যসহ দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ জানালেন বাংলাদেশ এখন বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং উদ্বৃত্তের দেশ। এটা খুবই আশা-আকাঙ্ক্ষার সংবাদ। কেননা যারা গত বিএনপি-জামায়াতের শাসনামল দেখেছে, লোডশেডিং কি সেটা হাড়ে হাড়ে জানে। কিন্তু ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ফূর্তি করা উদ্বৃত্তের দেশে হঠাৎ সরকারের উপরস্থ মহল থেকে লোডশেডিংয়ের নির্দেশ আসলো কেন! এ কেমন মিথ্যামিথ্যি ফূর্তি করা তাহলে! বিদ্যুতের উদ্বৃত্ত বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একজন সংসদ সদস্য বলেছিলেন বিদ্যুৎ কারো লাগবে না, উদ্বৃত্ত জিনিস ফেরিওয়ালারা খদ্দেরের কাছে বিক্রির জন্য ঘুরে বেড়াবেন, ডাক হাঁকবেন বিদ্যুৎ লাগবে নাকি বিদ্যুৎ? হঠাৎ করে এতো এতো বিদ্যুৎ তাহলে গেল কই? মিনিটে মিনিটে জনগণের টাকা খরচ হওয়া সংসদে দাঁড়িয়ে দেওয়া এমপিদের তথ্যের এই হলো অবস্থা! বাস্তবতার নিরিখে মোসাহেবি করার রঙ্গশালা বললেও অত্যুক্তি হয় না।
বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ২২ হাজার ৩৪৮ মেগাওয়াট। তবে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিলো ১৪ হাজার ৭৮৪ মেগাওয়াট। বাকি প্রায় সাড়ে সাত হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতা অব্যবহৃত। এদের থেকে বিদ্যুৎ না নিলেও গুনতে হয় ক্যাপাসিটি চার্জ। এভাবে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে গত তিন বছরে ৫৪ হাজার কোটি টাকা গচ্চা দিয়েছে সরকারপক্ষ। যার প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা গেছে মালিকদের পকেটে। বিদ্যুৎ বিভাগে পিডিবির পাঠানো এই হলো প্রতিবেদন। প্রশ্ন দাঁড়ালো যে সকল মালিকদের ক্যাপাসিটি চার্জের নামে জনগণের ট্যাক্সের পয়সা লুট করে দেওয়া হলো এই মালিকেরা কারা? এরা সরকার বা রাষ্ট্রের কি হয়? যতদূর জানা আছে যুদ্ধবিধ্বস্ত বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটলে জরুরি অবস্থা সামাল দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিক কুইক রেন্টালে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রয়োজন পরে। বাংলাদেশ তো যুদ্ধবিধ্বস্ত নয়; কিন্তু অকারণে দীর্ঘদিন ধরে রেন্টাল বা কুইক রেন্টালেই সরকারের আগ্রহ বেশি কেন? নতুন করে যাকে আবার বৈধতা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এর অর্থ কি?
দেশের জ্বালানি পণ্যের বিরাট অংশই আমদানি নির্ভর। জ্বালানি তেল, তরল প্রকৃতিক গ্যাস, পেট্রোলিয়াম পুরোটাই অন্য দেশ থেকে কিনতে হয়। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যার ধ্বস নেমেছে। অন্যদিকে ডলার সংকটে জ্বালানি তেল আমদানিতে ঋণপত্র খুলতেও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর গড়িমসি। সহজে এই দূরবস্থা যে কাটছে না সেটা স্বীকার করেছে দায়িত্বে থাকা স্বয়ং বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। বিদ্যুৎ উৎপাদন জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় বিপর্যয়ে মুখোমুখি হয়েছে বিদ্যুৎ খাত। জ্বালানি খাতের সংকটের জন্য সরকার থেকে ঘোষণা দিয়ে সতর্কতার সঙ্গে নেওয়া হয়েছে বেশকিছু পদক্ষেপ। দেওয়া হয়েছে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং, আছে সরকারি-বেসরকারি বৈঠক ভার্চুয়ালি করার সিদ্ধান্ত, পেট্রোল পাম্প বন্ধ থাকবে সপ্তাহে একদিন। রাত ৮টার পর দোকানপাট-শপিংমল বন্ধ রাখার নির্দেশ। চিন্তা করা হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি অফিস এক থেকে দুই ঘণ্টা কমিয়ে আনার। যদিও এখন পর্যন্ত এ সকল পদক্ষেপ কাগুজে তলবনামা। কেননা বিদ্যুৎ অধিকাংশ সময়েই থাকে না। তবে আপাতত এই লোডশেডিং কাগজে-কলমে এক ঘণ্টা হলেও ভবিষ্যতে যে বাড়বে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলে সেই শঙ্কা এখনই আঁচ করা যায়। এর সরাসরি প্রভাব যে উৎপাদন খাতে পড়ছে, অর্থনীতিতে পড়ছে এটা বাস্তব।
জ্বালানি সংকটের পরিণতিতে প্রবেশের আগে আমাদের পায়ের নিচের গ্যাস সম্পর্কে একটু ঘুরে আসা যাক। গ্যাস এবং ডিজেল দিয়ে দেশের অধিকাংশ প্লান্টে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। আমাদের আছে বেশকিছু সংখ্যক গ্যাসক্ষেত্র। নতুন গ্যাস সন্ধানের সম্ভাবনাও আছে, আছে সামুদ্রিক ব্লকের নানা সম্ভাবনা। কিন্তু আমরা সেগুলোকে কখনোই কাজে লাগানোর পথে যাইনি। দেশীয় মালিকানায় স্থলভাগ এবং সমুদ্রভাগের গ্যাস উত্তোলন করা আমাদের চিন্তার বাইরে। উত্তোলন করার মতো দক্ষ জনশক্তি প্রস্তকরণেও যাচ্ছেতাই অবহেলা। বরং ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সেগুলো অন্য রাষ্ট্রের কাছে প্রতিনিয়ত বিক্রি হয়, গলা টিপে ধরা হয় নতুন নতুন সম্ভাবনার। আবার মাথার উপর বছরের অধিকাংশ সময় সূর্যের প্রচন্ড তাপ। সারা পৃথিবী যেখানে নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে ছুটেছে, সেখানে আমরাই কেবল বিদেশ নির্ভর হয়েছি। আমরা এমনভাবে আমাদের সমস্ত সম্ভাবনাময় খাত বিকিয়ে দিয়েছি যে পঙ্গু হওয়ার দশা। আমরা দ্রুত ধনী রাষ্ট্র হওয়ার প্রতিযোগিতা করছি অন্যের ওপর নির্ভর করে! যে দেশে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ চালনা করার মতো জ্বালানি অথবা কাঁচামাল নিশ্চিত না করে, নির্ভর করতে অন্যদের ওপর; সে দেশে ব্যক্তিগত গাড়ির রমরমা বাণিজ্য। আমাদের হুঁশ নেই ভবিষ্যতে জ্বালানির টান লাগতে পারে। এই গাড়িগুলো চলবে কিভাবে সেই পরিকল্পনা অনুপস্থিত। পরিবেশ উপযোগী বাড়িঘর তৈরিতে উৎসাহিত না করে সুবিধা দেওয়া হলো এয়ার কন্ডিশনার আমদানিতে। আমদানি সুবিধা বন্ধ না করে জনগণকে এয়ার কন্ডিশন বন্ধ করতে বলা তামাশার সামিল।
জ্বালানি খাতে বিশেষ করে গ্যাস বিদ্যুতের টান তৈরি হলে তার বিরূপ প্রভাব গিয়ে পরে উৎপাদনে। জটিলতা তৈরি হবে কৃষকের সেচ কাজে। পরিবহন খাতের ৯০ শতাংশ যানবাহন জ্বালানি নির্ভর হওয়ায় তৈরি হবে নৈরাজ্য। গ্যাসের অভাবে ইতিমধ্যে সারকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। একটার পর একটা দুঃসংবাদ আসছে। একেইভাবে উৎপাদনে যে নিশ্চিত প্রভাব পরতে যাচ্ছে তা তো সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তেই স্পষ্ট। উৎপাদন কমলে সেই দ্রব্যের চাহিদা বাড়বে, চাহিদা তৈরি হলে বাড়বে দ্রব্যমূল্য। উৎপাদন ব্যহত হলে রফতানি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন তলানিতে ঠেকা অর্থনীতির হিসাব। লোডশেডিং এর কারণে ঢাকার আশেপাশে, জেলা শহর বা গঞ্জে ব্যক্তি উদ্যোগে যে সকল শিল্প আছে, ছোট পরিসরে কারখানা আছে সেগুলোর উৎপাদন এতোটাই ব্যহত হবে জাতীয় পর্যায়ে যার নেতিবাচক ধকল অবশ্যাম্ভাবী। সুতরাং পরিস্থিতি এমন দাঁড়াবে যে সাশ্রয়ের চেয়ে উৎপাদনের অর্থনৈতিক হিসাবে লোকসান বেশি হবে। অর্থাৎ একদিকে সাশ্রয় করতে গিয়ে অর্থনীতির নাজেহাল চিত্র। টাকার মান পরে গিয়ে মুদ্রাস্ফীতির সমস্যা তো আমরা বর্তমানেই টের পাচ্ছি, এটা আরো বাড়বে। দ্রব্যমূল্যের এই নাভিশ্বাস আরো কি পর্যায়ে উঠবে সেটা অকল্পনীয়। উৎপাদন সংকট মোকাবিলায় সকল পণ্যের আমদানি চাহিদা বাড়বে; ডলার সংকটে তৈরি হবে রাষ্ট্রীয় দুর্গতি! ক্রমে ক্রমেই অগ্রসরমান হবে নিম্নবিত্ত গরিব খেটে খাওয়া মানুষের মৃত্যুর উপত্যকায়!
দেশে বড় বড় বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র যার অন্যতম। রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখনো চালু হয়নি। পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হলো এ বছরের প্রথমভাগে। যার উৎপাদন সক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। পাশাপাশি এ বছরের শেষ নাগাদ চালু হতে পারে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। অপেক্ষমাণ আছে মাতারবাড়ীসহ আরও কয়েকটি। রূপপুর বাদে এই সকল বিদ্যুৎ কেন্দ্র কয়লা নির্ভর হলেও কয়লা তুলতে আমাদের পর্যাপ্ত প্রযুক্তি জ্ঞান নেই। ফলতঃ ভারত থেকেই আমাদের কয়লা আমদানি করতে হবে। সারা পৃথিবী যখন পরিবেশ বিধ্বংসী কয়লা এবং পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সরে আসছে, খোদ ভারত নিজেদের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দিচ্ছে তখন আমারা একটার পর একটা কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে যাচ্ছি, পারমাণবিক শক্তিতে জোর দিয়েছি। পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে পারমাণবিক ও কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিরোধী আন্দোলন দেশজুড়ে সারা ফেলেছিলো। সেদিক থেকে ঐ সকল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু করতে বর্তমান লোডশেডিং জনসমর্থন পাওয়ারও কার্যকরী কৌশল। নিজের কোমর ভেঙে আমরা কেবল পর নির্ভরতাই শিখলাম!
যাহোক জ্বালানি পণ্যের এই জটিলতা কাটানোর তবে উপায় কী? সাময়িক সময়ের জন্য বিপর্যয় ঠেকাতে আমরা কি করতে পারি? এক কথায় ব্যক্তিকে অপ্রয়োজনে বিদ্যুৎ বা জ্বালানি ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। মোটাদাগে বললে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাধ্য করতে হবে। কেননা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা জনসাধারণ বিদ্যুৎ বিল নিজের পকেট থেকে পরিশোধ করে। ফলে তাদের বিদ্যুৎ অপচয়ের প্রবণতা কম, অপচয় যা হওয়ার তা কেবল সরকারি নানান কিসিমের প্রতিষ্ঠানে হয়। অফিস এবং আবাসিকতায় সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করতে হবে এয়ার কন্ডিশনার। যে সকল গ্রাহক এই বাধ্যবাধকতা মানবেন না, কঠোর হস্তক্ষেপ করার জন্য শুধুমাত্র তাদের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করতে কার্যকরী ব্যবস্থা জরুরি। বাঙালির দেশে ইংরেজি কায়দার স্যুট-টাইটা খুলে ফেলুন, দেখবেন অফিসিয়াল এয়ার কন্ডিশনের প্রয়োজনীয়তার অর্ধেক সমস্যা সমাধান। উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বা শিল্প ও বাণিজ্যিক অঞ্চলে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ চালু রাখতে গ্রাম এবং আবাসিক এলাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখা যেতে পারে, কিন্তু এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং দেওয়া সমীচীন হবে না। এতে বরঞ্চ সবকিছু বুমেরাং হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। গুরুত্বপূর্ণ ল্যাম্পপোস্ট ব্যতিত সারাদেশের সকল আলোকসজ্জা বন্ধকরণ, বিশ্ববিদ্যালয় হলগুলোতে রান্না করার বৈদ্যুতিক হিটার তুলে নেওয়া; এমনকি ব্যক্তিগত গাড়িতে জ্বালানি সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে পাবলিক পরিবহন ব্যবহার করতে উৎসাহিত করা সংকটকালীন সময়ের যথোপযুক্ত পদক্ষেপ। গণপরিবহনে জোড় বিজোড় নম্বর অনুযায়ী গাড়ির ব্যবহার জনগণের জন্য অতিরিক্ত ভোগান্তি তৈরি করবে। তাতে জনরোষ বাড়বে বৈ কমবে না। সুতরাং এই সকল আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে দূরে থাকাই বাঞ্ছনীয়। বিদ্যুতের মাধ্যমে ব্যাটারিচালিত ভ্যান-রিকশা কিছুদিনের জন্য নিয়ন্ত্রণ করার উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা রাখতে হবে। কুইক রেন্টাল বন্ধ করে সৌরশক্তি প্রযুক্তির প্রাধান্য দিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করতে প্লান্ট নির্মানের দায়িত্ব রাষ্ট্রীয়।
ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ না হলেও রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি-ভুলনীতিতে বর্তমান সংকটের মুখোমুখি আমরা হতাম, তবে সেটা একটু দেরিতে। ইউরোপের যুদ্ধ সংকটের মাত্রা তরান্বিত করেছে মাত্র। বিগত দিনে রাষ্ট্রীয় এবং ব্যক্তি পর্যায়ে ক্রমেই গাছপালা-বনের বিনাশ ঘটছে। জলবায়ুর পরিবর্তন, উৎপাদন এবং সংরক্ষণে নানা আধুনিক যন্ত্রপাতি চলানায় বিদ্যুতের চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাবে। অথচ আমাদের কোন স্থায়ী পরিকল্পনা না থাকা দুঃখজনক! করোনা মহামারি আমাদের শিখিয়েছে কিভাবে সামষ্টিক লড়াই করে টিকে থাকতে হয়। জ্বালানির মাধ্যমে অর্থনীতির সম্ভাব্য বিপর্যয়ে প্রবেশ মোকাবিলার এই ক্ষেত্রেও সে পথেই হাঁটা বাঞ্ছনীয়। যে উন্নয়ন পরিকল্পনা দূরদর্শিতার অভাবে হাওয়া হয়ে যায়, জনগণ সেই উন্নয়ন কখনোই চায়নি। রাজনৈতিক চালবাজি না করে দূরদর্শী পরিকল্পনার কার্যক্রম বাস্তবায়ন সময়ের আকাঙ্ক্ষা। নতুবা গণতন্ত্রহীন সিদ্ধান্তে আমরা সমূহ বিপদের সম্মুখীন। ভুলনীতির খেসারত হিসেবে জনগণের হাতে সরকার হয়তো হ্যারিকেন ধরিয়ে দিলো। হ্যারিকেন হাতের এ পথ বন্ধুর, লোকসানের। মাস দু’এক অতিক্রম করলেই যা স্পষ্ট হবে। এবার দেখা যাক হ্যারিকেন হাতে জনগণ কতটুকু সামনে আগাতে পারে।
লেখক ও কলামিস্ট