বহিষ্কার করেও নাম প্রকাশে লুকোচুরি বেরোবি প্রশাসনের

, ক্যাম্পাস

বেরোবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2025-01-20 19:19:24

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলা ও পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়া আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় ৭১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেও নাম প্রকাশে লুকোচুরি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।

গত ৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৯ তম সিন্ডিকেট সভায় দুই সেমিস্টারের জন্য ৩৩ জন শিক্ষার্থী এবং এক সেমিস্টারের জন্য ২৩ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি সাবেক ১৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য প্রফেসর ড.মো.শওকাত আলী জানান।

এর আগে তথ্য অনুসন্ধান কমিটি ৭২ জন শিক্ষার্থীর একটি তালিকা জমা দেয়। যা ১০৮ তম সিন্ডিকেট সভায় উত্থাপন করা হয়। পরে ১০৯ তম সিন্ডিকেট সভায় একজনকে মানবিক বিবেচনায় বাদ দিয়ে বাকি ৭১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এইদিকে অর্ধমাস পেরিয়ে গেলেও নামের তালিকা না পেয়ে হতাশ শিক্ষার্থীরা। কাকে কোন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই ৭১ জন কারা সেটি না জানায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে অনেকেই। এছাড়া তাদের শাস্তির ব্যাপারেও অসন্তুষ্ট শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আবু সাঈদ হত্যা ও কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত অনেকেই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। অনেকেই এসে পরীক্ষা দিচ্ছেন।

এই ব্যাপারে বেরোবির কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক শারিয়ার সোহাগ বলেন, যে ৭১ জনের তালিকা রয়েছে সেটি ত্রুটিপূর্ণ এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ। কারা কি ধরনের অপরাধ করেছে তার একটি মাপকাঠি তৈরি করে সেই অনুযায়ী তাদের শাস্তি দিতে হবে। সেই অনুয়ায়ী যদি শাস্তি না দেওয়া হয় সেটি তো সুষ্ঠু বিচার হয় না। সার্বিকভাবে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে সেটি ব্যক্তিগত ভাবে আমি সন্তুষ্ট নই। আমি এর বিরোধিতা করে আসছি। আমার সাথে বিশ্ববিদ্যালয় অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা এর বিরোধিতা করছে এবং তারা সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদাহরণ টেনে তিনি আরও বলেন, রাবিতে অপরাধের মাপ কাঠি অনুযায়ী স্থায়ী বহিষ্কার, হলের সিট বাতিল, অর্থদণ্ড ও যাদের ছাত্রত্ব নেই তাদের সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সেখানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক সেমিস্টার, দুই সেমিস্টার বহিষ্কার করেই দায় সারছেন। যাদের ছাত্রত্ব নেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে প্রশাসন আশ্বস্ত করলেও তা কবে করা হবে এবং কীভাবে করা হবে সে বিষয়ে কোন পরিষ্কার বক্তব্য বা রূপরেখা নেই।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড.মো. ফেরদৌসর রহমানের কাছে নামের তালিকা চাইলে তিনি বলেন, সিন্ডিকেট সভার পর নামের তালিকা রেজিস্ট্রারের কাছে আছে। নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে। আগে বিভাগ গুলোতে নোটিশ যাবে।

রেজিস্টার ড. মো. হারুন অর রশিদ কাছে তালিকার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। সাংবাদিকদের তালিকা দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান সাংবাদিকদের এই তালিকা দেওয়া হবে না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর