ব্যজস্তুতি রেখে বিকেল নিয়ে বসি

কবিতা, শিল্প-সাহিত্য

মিছিল খন্দকার | 2023-08-27 16:59:01

বিকেল

বিস্মৃতি মূলত সাক্ষ্যহীন বলে
সময়ের মৃদুহাসি পরখ করার দিন আসে।
ফলে সকল অবজ্ঞা, ছুরি, বক্রোক্তি ভাঁজ করে
এরোপ্লেন বানাই আবার।
ব্যজস্তুতি রেখে বিকেল নিয়ে বসি।
বারান্দায় আসা পাখিকে দিই
মুড়ি ও কয়েন।
পয়সা পড়ে থাকে।

স্ত্রীকে না বলা ঘটনা

এক ফানা কলা নিয়ে ভোরে
শ্বশুরবাড়ির থেকে বের হয়ে
সারাদিন আমি ঘুরলাম শহরে।
দুপুরে মাথা ঝিম
ঘোড়ার ডিম
রিজলায় বানানো দুই—
হোটেলে চাষের কই দিয়ে ভাত খেয়ে
বেলস পার্কে কিছুক্ষণ শুই—
হাতে ব্যাগ, তাতে কলা এক ফানা
সন্ধ্যায়ও ঘোরাঘুরি
কতিপয় শয়তান ছানা।
এক ফাঁকে রিকশায়
একটা কলাকে যদি খাই
চিহ্ন রাখি না।
এই কলা আমাদের বাড়ির জন্য
দিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
তোমাদের গাছে ফলা সেই কলা, বীণা
পথে আমি ফেলে এসে
করি কাঁচুমাচু
তোমাকে তা ভুলেও বলি না।

শোয়ার প্রসঙ্গ

এ শীতে মেলান্দহ যাব
ট্রেনে চড়িয়া।
দুইজন সিট পাব, একজন পাব না।
একটা সিটের অভাব
তিনজনের না-বলা ভাবনা
হয়ে র’বে যাত্রাকালে।
ফলে অপরিচিত দুই দাঁড়িয়ে থাকারে দেব সিট।
ট্রেনের ক্যান্টিনে বসে র’বো
তিনজন তাতে।

মেলান্দহে বন্ধু তামিম ইয়ামীন থাকেন।
তিনি তো অবাক লোক—
জল গিলব সাত ঢোক?
তিন ঢোক ধোঁয়া।
আশপাশ থেকে আরো বন্ধুরা রওনা হবে—
শেষরাতে ঢালা বিছানায় শোয়া।
শোয়ার প্রসঙ্গ এলে আরো-আরো শোয়া নিয়ে
আলাপ উঠতে পারে—
ফলে মনে মনে কেউ গুহার দিকে যাব;
কেউ উঠতে চাইবে পাহাড়ে,
অথচ আমরা তখন মেলান্দহ ইউএনও বাংলোয়!

দুনিয়ায় শোয়ার প্রসঙ্গ যত বসার প্রসঙ্গ তত নয়।

আমি যে তখন কাকে

একদিন সকল সন্তাপের ঝুলকালি-মাখা-মুখে বেরিয়ে পড়ব, না ফেরার ইচ্ছা গোপন করে। কিছুদূর গেলে মনে হবে, যে কোনো যাওয়াই মূলত ফেলে যাওয়ার বেদনাবোধ বহন করে সাথে।

পথে সন্ধ্যা আসবে রাতের পূর্বাভাস নিয়ে। কোনো নামহীন নদীর পাড়ে, ঝাউ বা কেওড়ার বনে আবহমান জোনাকিরা একই রকমভাবে জ্বলবে নিভবে জ্বলবে নিভবে জ্বলবে।

চারপাশের শব্দহীনতায় অস্থিরতা আরো চাপা হয়ে অস্থির হয়ে ধরা দেবে। বৃষ্টি আসবে ধেয়ে, চরাচর শূন্য শূন্য শূন্য করে দিয়ে। বর্ষার চাঞ্চল্যে পাশের পুকুরে, কোলায়, নদীতে পানির ফূর্তি দেখে দেখে দেখে আমি যে তখন কাকে ঘুম থেকে তুলতে চাইব গিয়ে ডেকে!

এ সম্পর্কিত আরও খবর