মেঘ
কালবর্ষী মেঘ
তোমার দিকেই চেয়ে থাকি
তুমি রেখে যাও স্মৃতি,
রেখে যাও আয়ুজল, করো বৃক্ষস্বভাবী।
চলে যাওয়া পাখি যায় না তো ফেলে
চিহ্নসুর কোনো, তবুও তরল প্রাণ
টানে শূন্য, মহাব্যোম, অনন্তছায়ায়!
নক্ষত্রের চুঁইয়ে-পড়া জ্যোতিরস পেয়ে
মানুষের দীর্ঘশ্বাস হাহাকারে কেঁপে কেঁপে ওঠে।
কালবর্ষী মেঘ, আজ, আমাকেও নিয়ে চলো
দূরবর্তী তোমার প্রবাসে!
কাল ও তুমি
সন্ধ্যার নদীকূল ভালো, অবলোপী
দেখা যায় জলের বিষাদ
একটি খঞ্জনা পাখি এইমাত্র উড়ে গেল
মনে তার বিস্ময় অপার
বধিরেরা এইপথে আনমনে বয়ে চলে বেদনার ভার।
তোমার বসন্তকুঞ্জ হয়েছে যে ঋদ্ধ, এইবার
ফুলে-ফলে কোরকের ছলে
কিন্তু জেনো হিমবতী ঋতু অনুবর্তী
একটি ছায়ার মতো বিস্তারিত, মৃত্যুর কৌশলে।
যে-সব পুষ্পকলি ফোটালে, কী আশায় আশায়
কালের বন্দনাগীত স্তব্ধ হলে
সে-কোন অজানা থেকে ভেসে আসা নিশ্চিহ্নের দান
গ্রহণ করতে হলো নিয়তির বরে
জন্মনক্ষত্রের দিকে ছুটে গেল একটি প্রলয়
প্রবল প্রচণ্ড খেলাচ্ছলে!
তবু থাকো প্রীতি নিয়ে, প্রেমনদী বেয়ে দিন যাক
আশ্চর্য দিনের পরমায়ু তোমাকে অস্থির করে করে
ভিড়বে আমার কাছে আজ
পেছনেই পড়ে থাক মরণের রক্তচক্ষু, শূন্যগর্ভ মাঠ!
মৃত্যু
মৃত্যুর পর কেউ আর
হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলমান
বা অন্যকিছু থাকে না,
থাকে না ধর্মীয় বা অধর্মীয়,
কিন্তু হয়ে যায় আধ্যাত্মিক।
কেননা মৃত্যুতে ব্যক্তি
বস্তু থেকে ভাবে রূপান্তরিত হয়
কায়া তখন ছায়া হয়ে যায়,
হয় কালরূপ,
সে তার আগের সব পরিচিতিকে বাতিল করে
অনন্ত হয়, আর অপার্থিব থেকে পার্থিবকে
শাসাতে থাকে।