কুহক
কোনো কোনো ঘুম
পাশ ফিরে শোয়
চোখের ভেতর
জমে কাঁটাতার
পথগুলো দূরে
আমায় পেরোয়
গেল কোথা একা
ফিরল না আর।
কেউ আসবে না
বসে থাকা কেন?
গোধূলির দেশে
ছিল আলোলতা
দিন শেষে গ্রহে
মুছে গেলে কথা
আমার কালিমা
লোকালয়ে জাগে...
ওড়ো উন্মাদ
নিদ্রাযন্ত্রে
শরণার্থী
আর লিখব না। পুরাতন লেখাজোকা ঘুমিয়ে গেলে
এবার হাঁটা দিতে হবে সীমান্তে, বাঁশঝাড়ের দিকে, খোলা রামদা হাতে।
আমার অতীত থেকে আমিই বের হয়ে আসি,
বর্তমান আমার চোখের ভেতর আমাকে
রাখে না! ভাঙা দুপুরের সাজে
বিচূর্ণ নিজেকে বাঁচাতে আমাকেই করব খুন—
গভীর মসৃণ কোনো আয়না তেড়ে আসছে বাস্তুভূমিতে;
স্তব্ধ। বাকরুদ্ধ নিদ্রায় চোখ মেলে
তাই না-লেখাও লিখব না—গল্পের মতো অনিশ্চয়তা ঘুমিয়ে আছে লেখার লাইনের ভেতর...
প্রচ্ছন্ন
অসীম গানে লেখা হচ্ছো তুমি
দূরে পৃথিবী স্মৃতির মাঝে একা
ক্ষতের মতো লিখে যাচ্ছে রাত;
সেসব কিছু গভীর হলে আমি
সিলিংফ্যানে ঝুলিয়ে রাখি ছায়া—
কাঁপন দিয়ে কমার পরে দাঁড়ি।
জানিয়েছিলে বিভূতি নেই দেশে
উড়ে এসেছি পয়সাখেকো ভাই,
পথে ভগ্নি পানি-তেষ্টা পেলে
পরের দেয়া কিছু খাসনে যেন।
এই বাক্যে হাতখরচ শেষে
ভুলেও গেছ হলকা-আঁকা দিন!
গরম বালি রুমালে ফোঁড় তোলে,
বেঁচে ছিলাম একটু পর পর।
গল্পে আছে দৈত্যমাখা ভয়
বজ্র-জাগা দুয়োরানীর মেয়ে
তার জন্য বাতাসটুকু থাক;
এবার পাশে বসো সিলিংফ্যান
কুয়াশা হয়ে লেখো কেবল ‘আমি
ঝুলন্তকে উড়িয়ে দেবো কাল!’
কানা ছেলের চোখ
পরাজয় রাক্ষসের মতো।
ছুটে যায়। নক্ষত্রপতন
আর রুদ্ধ বেদনা পাশের বাড়ির
উঠোনে রঙ্গন গাছ, অথবা সে
ক্লান্ত লাঠিয়াল!
‘সবই কপালের ফের’—উড়াও এ কথার পতাকা;
হাওয়া, সাথে এলো কাঁপন; সেই সঙ্গে
একাকী পানের ট্রাক গল্পের ভেতর
কী মর্মান্তিক রহস্য নিয়ে আসে, চেনো তাকে?
অথচ পঁচিশ টাকা রাত থেকে রাতের গভীরে
আমাকে চালান করে দেয়
আলোর গতির মাঝে;
পঁচিশ টাকা এবং পানের ট্রাক। অলস। তবু এরপর
আমায় উড়িয়ে নেবে
কণ্টক শহরে;
বহু ক্ষুধার্ত দিন আমার বিপরীতে
নৃশংস সূর্যের আভায় কোমল,
সেখানে বসন্ত আসে, ফুলে ফুলে ফোটে রঙিন ভাত!
আঙরা খাই। তাপ
গুম
হয়ে
যায়
দেহে...
হা হা এ কী মজা, ভাই! চমৎকার ট্রাকে চেপে রক্তাক্ত, ঘুরছি—
ওস্তাদের মার ওই পঁচিশ টাকায়!
টোল ওঠাও, বসাও রাস্তানাগ,
আমাদের সঙ্গে কপালে কপাল ঘষে
পরাজয়;
টস করে—হেড নাকি টেল?
বাঘ না শাপলা?
ব্যাঘ্র আসুক না-আসুক
ভাসুক কি ডুবুক,
আমরা ঘুমিয়ে পড়ব সুন্দর সুখে—
রাখাল যা বলে যায়, যাক...
শুরু হলো সেই তো সমর—কারেন্ট শকের দিন,
মাথা হেঁট, মাথা হেঁট;
পরের মুখে মরিচ খাওয়ার এই হাটবাজারে
গোপনে আজড় কর ঝাল!
ফুল মার্কস কি জিরো?
কপালের গহীনে ডাকুয়া মসজিদ এঁকে
দাঁড়িয়েছো বুঝি, কাউকেই দেখা যাচ্ছে না!
আলোর গতির মাঝে জিরো কোনো সংখ্যা নয়? জানা গেল—
পৃথিবীজুড়ে বিপদগামী পানের ট্রাক
একে একে
আমাকে নামিয়ে যাচ্ছে
নীরবতায়—
দুর্ধর্ষ কানা ছেলের চোখে...
অলঙ্করণ শতাব্দী জাহিদ