জাহান জলেশ্বরীর একগুচ্ছ কবিতা

, শিল্প-সাহিত্য

জাহান জলেশ্বরী | 2023-08-24 09:19:58

নাগরিশ্বর

নাগরিক জীবনকে ছকে ফেলে আসুন রোজকার মতো সমাবেশে
ভোরবেলা গা ধুয়ে চুলে বেশ সিঁথি করে পরিপাটি, হেলেদুলে।
লোকে দেখে কাছে এসে বলুক সাধু সাধু, বাহ্!
কেউ কেউ দূরে থেকে কেলিয়ে দেখাক দাঁতের শোভা।
এতে আপনার বেশ অভ্যাস আছে হজমের
জাতিস্মর ঘেঁটে দেখা গেল জাবর কাটা গরু ছিলেন আর জনমে।
আমরা আপত্তিকর কিছু দেখি তা নয়, ঘোর বিরোধও নেই কোথাও
শুধু প্রশ্নের পর প্রশ্ন পিঠে, ভাসমান ঘরবাড়ি বাধা হতে থাকে।
শুনেছি মানুষের দুটো মুখ হয়, আপনাদের এ সীমা ছাড়ানো,
গিরগিটিও বদলায় রং আর মানুষ গিরগিটি চাররঙা কারখানায়
আবাদ করে মুখোশ!

এটি একটি নিখাদ প্রেমপত্র

আমি তোমার ট্যাংকি উপচে পড়া
পানির অপচয়, মনশরীরের ক্ষয়!

দিনের শেষে
সব চুকিয়ে বুকিয়ে
আমি তোমার রহমতের শেষ লোকমা,
শেষ প্রসাদের ভাগ।

আমার হলুদ শরীর, রাংতা হাতের কসম!
নিভৃত কবির মতো
আমি ধারণ করি তোমায়।
আর তোমার প্রতিরাতের আহত শব্দরা
টাটকা ঘুমের মতো
বহন করে চলে আমার দীর্ঘশ্বাসের শব!

মানত

তোমার জুতোর তলার ধুলোটুকু হোক শিরোধার্য, হোক গ্রাসী বামবুক!
অচেনা নিজের বাক্সবন্দির নত-ইতিহাস
পুরাতন মদের মতো অভিজাত হোক দিন দিন,
আর সুপরিচিত অসুখি চোখ কথা বলে উঠুক
শীত-শরীরের ওম আশ্রয়ের বাজারদরের কবিতায়!

আবর্ত

জীবনের করিডোর,
খেলা শেষে কলাপাতায় এলানো সংসার,
খলবলে কৈশোরের লাটিমে চতুর্দোল।
পরিচয়হীন দুর্বিপাকে পিঁড়ার মুখোমুখি ধাক্কা!
সময়বেল্টে বাঁধা জীবনের মাপ,
এই ঢের, এ জনমে...

সময় তো জড়ানো কাঁটায়
পাথরকুচি,
ব্যথা, রূপ কিংবা আহার
আবছা ফাটলে এক পরগাছা!

জীবন সায়াহ্ন

আমি যদি নাও থাকি
তোমার প্রিয় কফির কাপে লিখে যাব
বেঁচে থাকার এক তীব্র ইতিহাস!
চাইলে ধোঁয়ায় উড়িয়ে দিও শূন্যতা আমার,
আর উষ্ণতায় মুছে ফেলো ঠোঁটের জলছাপ।

অলঙ্করণ শতাব্দী জাহিদ

এ সম্পর্কিত আরও খবর