নেহা আর অনামিকা দুজনেই প্রাণের বন্ধু। ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে বড় হওয়া। এখন ওরা একটা বাড়িতে পেয়িংগেস্ট হয়ে থাকে। যে বাড়িটায় থাকে সেখানে নীচের তলায় বাড়ির মালিক থাকেন। ওপরতলায় ওরা দুই বন্ধু। নেহা বিয়ে করবে না বলে বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে আর অনামিকা মডেলিং করবে বলে পালিয়ে এসেছে।
দুজনের বয়সই আঠারো থেকে কুড়ির মধ্যে। ওরা দুজনে একটা কলসেন্টারে পার্টটাইম কাজ করছে। দুজনের ভালোই কাটছে কলকাতা শহরে। ইদানিং নেহার একটা সমস্যা হচ্ছে নীচে মাঝবয়সি যে ভদ্রলোক থাকেন তার হাবভাব নেহার ভাল লাগছে না। কথাটা নেহা অনামিকাকে জানিয়েছে। অনামিকা বলেছে “আমার তো সেরকম মনে হয় না। যদি হয়েও থাকে পাত্তা দিস না”। লোকটি ছাদে যাওয়ার নাম করে মাঝে মাঝে ওপরতলার বাথরুমের ওপরের ছোট্ট জানলাটায় উঁকি দেয়। নেহা সেকথা অবশ্য ঘুণাক্ষরেও টের পায় না। এর মাঝে একদিন নেহা তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরে। আর অনামিকা নেহাকে জানায় রাতে নাইট ডিউটি থাকায় সে রাতে একটু দেরীতে ফিরবে। নীচে যে কাজের মহিলা রান্না করে, সে রান্না করেই চলে যায়। রাতে ওদের নীচে গিয়ে খাবার নিয়ে আসতে হয়। অনামিকা নেই বলে নেহা আর নীচে নামে না কারণ লোকটার মুখোমুখি হতে নেহার ইচ্ছে করে না। অনামিকার জন্য অপেক্ষা করে। হঠাৎ দরজায় আওয়াজ হয়। নেহা খুলে দেখে বাড়িওয়ালা ভদ্রলোক হাতে ট্রে করে খাবার নিয়ে এসেছে। নেহার ভাল লাগে না তবু ভদ্রতা করে ভেতরে আসতে বলে।
নেহা উঠে স্টিয়ারিং –হাত রাখে, চাবি ঘোরায় ,ট্যাক্সি ছুটতে থাকে। ভয়ে , আতঙ্কে তারা কোথায় এসেছে এই রাতের অন্ধকারে তারা জানে না। হঠাৎ একটা আওয়াজ করে একটা শুনশান রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়। সম্ভবত গাড়ির তেল শেষ। ওরা দুজনে গাড়ি থেকে নামে।দূরদূরান্তে কোনো বাড়ি নেই রাত দেড়টা থেকে দুটো হবে ,ঘড়িটা দেখে নেহা। হঠাৎ খেয়াল করে সামনেই একটা একতলা মতো ভাঙাচোরা বাড়ি আছে। ওরা গাড়ি থেকে নামে , ব্যাগ হাতে নিয়ে মোবাইল জ্বালাতে জ্বালাতে বাড়িটার ভেতরে ঢোকে।
(চলবে... প্রতি রোববার)