সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য দৈনিক জালালাবাদের সহকারী সম্পাদক কবি-সাংবাদিক নিজাম উদ্দিন সালেহ ‘ভোকেশনাল এক্সেলেন্সি এওয়ার্ড’ লাভ করেছেন। গত সোমবার রোটারি ক্লাব অব মেট্রোপলিটন সিলেটের ব্যবস্থাপনায় সিলেট অঞ্চলের ১৬টি ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে এই এওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ব্যবসায়িক ও পেশাদার ব্যক্তিদের নিয়ে গড়ে উঠা বিশ্বব্যাপী সেবামূলক সংগঠন। উচ্চস্তরের মানদণ্ড, সমাজ সেবা ও আন্তর্জাতিক বোঝাপড়ায় এ সংগঠনের ভূমিকা অপরিসীম। স্থানীয় শাখাসমূহ কেন্দ্রের নীতিমালার আলোকে বহুমুখি কর্মকান্ড পরিচালনা করে। মানবিক মূল্যবোধ ও সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ভোকেশনাল এক্সেলেন্সি এওয়ার্ড প্রদান তাদের কর্মসূচির অংশ।
নিজাম উদ্দীন সালেহকে এই এক্সেলেন্সি এওয়ার্ড প্রদান খুবই যথার্থ হয়েছে। রোটারি ক্লাব সমূহ থেকে একজন গুণী লেখককে সম্মান জানাতে পেরে রোটারি ক্লাব অব সিলেট সিটির চাটার প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমিও গর্ববোধ করছি।
নিজাম উদ্দীন সালেহ কবি, গবেষক, সাংবাদিক ও শিক্ষক। সাহিত্যের প্রায় সকল শাখায় রয়েছে অবাধ বিচরণ। বাংলা ও ইংরেজিতে সমান পারদর্শী এই লেখক আধুনিক বাংলা কবিতায় অন্যরকম নান্দনিকতা সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছেন। সেখানে রোমান্টিকতা যেমন আছে, তেমনি মৃত্যুচেতনাও রয়েছে। দেশ প্রেমের পাশাপাশি বিশ্বজনীনতা ও মানবিকতা উঠে এসেছে তার সাহিত্য ও সাংবাদিকতায়। এই সৃজনকর্ম প্রবীনদের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকেও উজ্জীবিত করে।
নিজাম উদ্দীন সালেহ আমার একজন প্রিয় লেখক। প্রায় তিন দশক ধরে তাকে আমি কাছে থেকে দেখছি। বিভিন্ন সময় বহু প্রকল্পে একসাথে কাজ করেছি। শৈশব থেকেই সংগ্রামী চেতনার মানুষ তিনি। তার মেধা এবং নিষ্ঠা, সততা ও সাহসের প্রশংসা করতে হয়।
সিলেটের আলোকিত সাংবাদিক মুকতাবিস-উন-নূর সম্পাদিত দৈনিক জালালাবাদে আমরা একত্রে কাজ করেছি। সেখানে ছিলেন শক্তিমান লেখক-সাংবাদিক আব্দুল হামিদ মানিক ও নিজাম উদ্দীন সালেহ। সালেহ ভাই বয়সে বড় হলেও এক ধরণের বন্ধুবৎসল আচরণ করতেন। আমি তখন জাতীয় দৈনিকের সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি। ঢাকার খবর পাঠিয়ে জালালাবাদে যেতাম এবং শেষরাত অবদি দেশ-বিদেশের সর্বশেষ সংবাদ তৈরীতে এক সাথে কাজ করতাম।
সংলাপ সাহিত্য-সংস্কৃতি ফ্রন্টেও নিজাম উদ্দীন সালেহ সম্পৃক্ত ছিলেন। আমি সংলাপের সেক্রেটারি জেনারেল থাকাকালে আমাদের অনেক অনুষ্ঠানে তিনি মুখ্য আলোচক হিসেবে সাহিত্য আসরে পঠিত লেখার প্রাণবন্ত মূল্যায়ন করতেন। উপস্থিত নবীন-প্রবীন লেখিয়েরা এতে মুগ্ধ ও পরিতৃপ্ত হতেন।
প্রবাসীদের উদ্যোগে সিলেটে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল ও রিসোর্ট প্রতিষ্ঠার পর সেখানেও একত্রে কাজ করেছি। প্রতিষ্ঠাতা ম্যানেজিং ডাইরেক্টর হিসেবে আমি তাকে অনুরোধ করলে তিনি পাবলিক রিলেশনস অফিসার (পিআরও) হিসেবে যোগ দেন। এসময় ফেইসবুক সহ বিভিন্ন মিডিয়াতে তার চমৎকার বর্ণনায় সিলেটের ট্যুরিজম দারুণভাবে বিকশিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ভাবে হালাল ট্যুরিজম নিয়েও আমরা একসাথে কাজ করেছি।
এসময় আমার অনুপ্রেরণায় তিনি ফেইসবুকে বেশ সক্রিয় হন এবং আপন প্রতিভা গুণে ব্যাপক গবেষণা শুরু করেন। ২০১৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তাকে নিয়ে 'পারসোনাল জার্নালিজম ইন সোশ্যাল মিডিয়া: এ নিউ হরাইজন অব জার্নালিজম’ (PERSONAL JOURNALISM IN SOCIAL MEDIA: A NEW HORIZON OF JOURNALISM) শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করি। আমার (সাঈদ চৌধুরী) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তিনি অসাধারণ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
দৈনিক জালালাবাদের স্টাফ রিপোর্টার খালেদ আহমদের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মুকতাবিস উন নূর, বর্তমান সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সাবেক সভাপতি আহমেদ নূর, অধ্যক্ষ কবি আবুল কালাম আজাদ, শিক্ষাবিদ লেঃ কর্নেল (অব.) সৈয়দ আলী আহমদ, কবি মুকুল চৌধুরী, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান, টেলিভিশন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ইকরামুল কবির, সিলেট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ, রোটারী ক্লাব অব ক্বীনব্রীজের প্রেসিডেন্ট এডভোকেট রফিক চৌধুরী, এডভোকেট কবি কামাল তৈয়ব, শেভরণ বাংলাদেশের এইচইএসটিসি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর শাহ মনসুর আলী নোমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রায় সকলেই একমত হন যে, ’পারসোনাল জার্নালিজ’ সাংবাদিকতার একটি আধুনিকতম, সময়োপযোগী ও গতিশীল বিবর্তন, যার প্রতি মানুষের অকুন্ঠ সমর্থন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাংলাদেশে এই নতুন ধারার প্রবক্তা ও প্রোপোন্যান্ট হিসেবে সাংবাদিক নিজাম উদ্দীন সালেহ’র ভূমিকা অবশ্যই স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশেষভাবে ফেইসবুক কেন্দ্রিক সাংবাদিকতা বিষয়ে গবেষণা দিয়ে ‘ব্যক্তিগত সাংবাদিকতা’ নামে তিনি অবশেষে গ্রন্থ রচনা করেছেন। ঢাকার শব্দকোষ প্রকাশনী থেকে বেরিয়েছে। এটি সম্ভবত এশিয়া থেকে এ বিষয়ক প্রথম গবেষণা ও প্রামাণ্য গ্রন্থ।
শিক্ষক হিসেবেও নিজাম উদ্দীন সালেহ বেশ সফল। ১৯৯৭ সালে সিলেটে ইংরেজি শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহন করি। আমার শিক্ষা কার্যক্রম পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি অবহিত হয়ে বেশ আগ্রহী হয়ে ওঠেন শহরের জিন্দাবাজার কাজী ম্যানশনের সত্তাধিকার ও এপেক্স বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট কাজী এনাম উদ্দিন আহমদ। তিনি তার বন্ধু বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কয়সর জাহান সহ আরো কয়েকজনকে সাথে রাখার অনুরোধ করেন। এভাবে আস্তে আস্তে আমাদের আরো ক‘জন বন্ধুও সম্পৃক্ত হন। প্রতিষ্ঠিত হয় বৃটিশ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (বিবিআইএস)।
স্কুল প্রতিষ্ঠায় ইংলিশ মিডিয়ামের খ্যাতিমান শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া, এনাম চৌধুরী, মাওলানা আব্দুল হাই (পরিচালক) প্রমুখ এবং সাংবাদিক নিজাম উদ্দীন সালেহ ও এডভোকেট রফিক আহমদ চৌধুরীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। নিজাম উদ্দীন সালেহ পরবর্তীতে বিবিআইএস শিক্ষক এবং অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল কলেজে ইংরেজির প্রভাষক হিসেবে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
সিলেট ও লন্ডনের অনেক সৃষ্টিশীল কর্মের সাথে নিজাম উদ্দীন সালেহ সক্রিয় ভাবে জড়িত। ২০০১ সালে আমাদের উদ্যোগে ও সম্পাদনায় লন্ডন থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ইউরো বাংলায় তার লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হয়েছে। এরপর আমার সম্পাদিত সময়২৪ এর তিনি বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে দীর্ঘকাল সম্পৃক্ত ছিলেন। আরব নিউজ সহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সংবাদ পত্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন অনুবাদ করে দেয়ার জন্য তাকে পাঠাতাম। কয়েক ঘন্টার মধ্যে তিনি তা করে দিতেন। এভাবে তার অনুদিত মুসলিম দুনিয়ার সেরা খবর সবার আগে আমরা বাংলা পাঠকের হাতে তুলে দিতে সক্ষম হয়েছি।
লন্ডনে সংবাদ সংস্থা মিডিয়া মহল থেকে আমার সম্পাদিত ইউকে বাংলা ডাইরেক্টরি, ইউকে এশিয়ান রেষ্টুরেন্ট ডাইরেক্টরি এবং ওআইসি ভুক্ত ৫৭টি দেশের তথ্য সমৃদ্ধ মুসলিম ইন্ডেক্স প্রকাশনায় নিজাম উদ্দীন সালেহ নানাভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন।
লেখক ও গবেষক হিসেবে নিজাম উদ্দীন সালেহ’র ডকুমেন্টারি ‘পণাতীর্থ: অ্য প্লেস অব পিলগ্রিমেজ’ ২০১৬ সালের শ্রেষ্ঠ শর্ট ফিল্ম হিসেবে লস এঞ্জেলেস ফিল্ম ফেস্টিভেলে পুরস্কৃত হয়েছে। ক্বীন ব্রিজের ঠেলাওয়ালা শিশুদের নিয়ে ‘পুশ কীডস্’ ডকুমেন্টারিতেও তিনি কাজ করেছেন, যেটি আন্তর্জাতিক ভাবে পুরস্কার লাভ করেছে। তার লেখা ‘স্বপ্ন পরবাসী’ নাটক টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। ইন্টারমিডিয়েট পড়াকালীন ১৯৭৮ সালে তার লেখা ‘রত্নগুহা’ নাটক মঞ্চস্থ ও স্থানীয় ইউনিয়ন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান কর্তৃক পুরস্কৃত হয়।
খ্যাতিমান ব্রিটিশ সাংবাদিক এন্থনি মাসকারেনহাসের বাংলাদেশ বিষয়ক গ্রন্থ ‘বাংলাদেশ: অ্য লিগ্যাসি অব ব্লাভের’ প্রথম পূর্ণাঙ্গ অনুবাদক নিজাম উদ্দিন সালেহ। পরে যদিও বইটির একাধিক অনুবাদ হয়েছে। এছাড়া তিনি ইউরোপের ইউক্রেইনে চেরকাসি স্টেট টেকনোলজি ইউনিভার্সিটির পদার্থবিদ্যা বিষয়ক সারফেইস টেকনোলজির ওপর লেখা একটি ম্যানুয়েল বাংলায় অনুবাদ করেছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাভাষী শিক্ষার্থীদের জন্য ‘রেফারেন্স বুক’ বা সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত। ঢাকা বিদ্যালয়ের থিসিস লেভেলের অনেক বিষয় তিনি ইংরেজি থেকে বাংলায় রূপান্তর করেছেন।
নিজাম উদ্দিন সালেহ বাংলাদেশে অতিন্দ্রিয় বা অতি প্রাকৃতিক বিষয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিক। সিলেট টাইমস্ পত্রিকায় তার জ্বীন বিষয়ক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হলে পাঠক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি প্রকাশিত তার ‘অতীত দিনের সিলেট’ বইটিও বেশ আলোচিত ও সমাদৃত হয়েছে। নিজের স্মৃতিচারণমূলক এই গ্রন্থে লেখক গত পঞ্চাশ বছরে সিলেট নগরির বিকাশের চিত্র তুলে ধরেছেন।
লেখকের প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, এইদেশ এই মাটি (১৯৭৫), সবুজের আগ্নেয় প্রপাত (কবিতা সংকলন, ১৯৭৭), অভিযাত্রীর স্বপ্ন (১৯৮৬), শ্বাশ্বত প্রত্যয় (১৯৯৬), ব্যক্তিগত সাংবাদিকতা (গবেষণা-২০১৪), নীল চাঁদোয়ার নীচে (কাব্য- ২০১৬), অতীত দিনের সিলেট (২০২১)।
আমার ‘কালজয়ী কবিতার স্রষ্টা আল মাহমুদ’ গ্রন্থে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রধান কবি ও কথাসাহিত্যিক আল মাহমুদ সত্তর ও আশির দশকের খ্যাতিমান কবিদের মধ্যে নিজাম উদ্দীন সালেহ’র নাম এনেছেন বেশ গুরুত্বের সাথে।
নিজাম উদ্দীন সালেহ’র জন্ম ১৯৫৭ সালের ২২ নভেম্বর, তার নানাবাড়ি সিলেটের বালাগঞ্জের রাজাপুর গ্রামে জায়গীরদার বাড়িতে। পৈতৃক নিবাস ওসমানীনগরের তাহিরপুরে। পিতা মৌলভী আব্দুল জলিল ছিলেন সুনামখ্যাত শিক্ষক। বাংলা, ইংরেজি, আরবি, উর্দু ও ফার্সি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন।
ইংরেজি অনার্সের মেধাবী ছাত্র নিজাম উদ্দীন সালেহ সাবসিডারী পাশের পর ৩ বছর পড়াশোনা করেছেন। কিন্তু অসুস্থতার জন্য অনার্স সম্পন্ন করতে পারেননি। পরে বিএ পাশ করে ঢাকার প্রাইম ইউনিভার্সিটি থেকে আইনশাস্ত্রে উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন।
ইসলামী ফাউন্ডেশনের সিলেট শাখায় প্রোগ্রাম অর্গ্যানাইজার হিসেবে তার কর্মজীবনের শুরু। আশির দশকের শুরুতে দৈনিক জালালাবাদী ও সাপ্তাহিক সিলেট সমাচারে সহ-সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেন। পরে সিলেটের ডাক ও যুগভেরীতে সহকারী সম্পাদক ছিলেন। লন্ডন থেকে প্রকাশিত ইংরেজি সাপ্তাহিক বাংলা মিরর, অনলাইন ইংরেজি সিলেট মিরর, নিউ নেশন, নিউ এইজ, নিউজ টুডে ইত্যাদিতে তিনি লেখালেখি করেন। বাংলা-ইংরেজি দ্বিভাষিক সাপ্তাহিক সিলেট টাইমস্ পত্রিকা ৩ বছর সম্পাদনা করেছেন। বর্তমানে দৈনিক জালালাবাদের সহকারী সম্পাদক হিসেবে কর্মরত।
এদিকে ভোকেশনাল এক্সেলেন্সি এওয়ার্ড প্রদানের জন্য গত সোমবার রোটারি ক্লাব অব মেট্রোপলিটন সিলেটের ব্যবস্থাপনায় সিলেট অঞ্চলের ১৬টি ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সিলেট নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রোটারি ডিস্ট্রিক্ট (৩২৮২) গভর্নর আবু ফয়েজ খান চৌধুরী। ইভেন্ট চেয়ার আইপিপি প্রভাষক রেহান উদ্দিন রায়হানের সভাপতিত্বে প্রোগ্রামের কল টু অর্ডার করেন মেট্রোপলিটন সিলেটের প্রেসিডেন্ট রোটারিয়ান সাইফুর রহমান।
কোরআন তেলাওয়াত করেন রোটারি ক্লাব অব সিলেট সেনারজির প্রেসিডেন্ট আব্দুর রহমান। রোটারি প্রত্যয় পাঠ করেন রোটারি ক্লাব অব গ্রীণসিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আলমগীর হোসাইন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রোটারি ক্লাব অব মেট্রোপলিটন সিলেটের প্রেসিডেন্ট সাইফুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পিডিজি ও ডিস্ট্রিক্ট ট্রেইনার প্রিন্সিপাল কর্নেল অব. এম আতাউর রহমান পীর, পিডিএফএল রোটা ফিরোজা রহমান, পিডিজি ইঞ্জিনিয়ার এম এ লতিফ এমডি। ভোট অব থ্যাংকস জ্ঞাপন করেন রোটারি ক্লাব অব মেট্রোপলিটন সিলেটের ফার্স্ট লেডি রোটারিয়ান তাহমিনা আক্তার।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চিটাগাং আগ্রাবাদ ক্লাবের পিপি ও পিডিএস কেরামুতুল আজিম পিন্টু, পিডিএস এ এইচ এম ফয়সল আহমদ, পাস্ট ডিস্ট্রিক্ট এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি গার্ডেন সিটির পিপি সেলিম খান, ফাস্ট জোনাল কো অর্ডিনেটর জাকির হোসাইন চৌধুরী, এসিস্ট্যান্ট গভর্নর কবিরুল ইসলাম, আবু সুফিয়ান, ডায়নামিক ক্লাবের জিএস আর ডেপুটি গভর্নর ব্যাংকার নাজিম উদ্দিন শাহান, গ্রীণসিটির প্রেসিডেন্ট শাহজাহান সেলিম বুলবুল, রাইজিং স্টারের ইউনুস আলী, ই ক্লাব অব ৩২৮২ এর প্রেসিডেন্ট এডভোকেট আজিম উদ্দিন, হিলটাউন ক্লাবের প্রেসিডেন্ট দিদার হোসাইন, ছাতক ক্লাবের রাসেল আহমদ, ডাউন টাউনের আবুল আজাদ, রোজ গার্ডেনের নাজমুল ইসলাম, ডেফোডিলের ইসলাম উদ্দিন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, প্রখর মেধাবী নিজাম উদ্দীন সালেহ শিক্ষাজীবন থেকে লেখালেখি ও সেবা কর্মের সাথে জড়িত। একজন নিভৃতচারী লেখক ও গবেষক হিসেবে বিরামহীন ভাবে লিখে চলেছেন। একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে তিনি নন্দিত। সফল অনুবাদক হিসেবে সর্ব মহলে সমাদৃত। লেখকের একটি কবিতার নিম্নোক্ত পংক্তিমালা থেক থেকেই তার জীবন ও কাব্য ভাবনা সহজে অনুধাবন করার যাবে।
‘নদীর ভাঙ্গনে গেছে ঘর-বাড়ি, যাক্ / সোনা দানা টাকা কড়ি হারায়, হারাক / শুধু ভয় নৈতিক অবক্ষয় / যদি কেড়ে নেয় মূল্যবোধ / জীবনের শেষ সঞ্চয়! / আমাদের আঙ্গিনায় সত্য ও ন্যায় / স্খলিত লতার মতো গ্রীষ্মের ক্রোধে / হাঁফায়, লুটায় / এক বিন্দু পানি নেই, শিশিরও যে নেই / ভেজাবে প্রীতির রসে, বিবেকের বোধে। / প্রচন্ড খরায় পুড়ে যায় জমি, যাক্ / শস্যের সোনালি হাসি মিলায়, মিলাক / শুধু ভয় লোভ মোহ স্বার্থের উদগ্র পিপাসা / শুষে নেয় উদ্ভাসিত মানবতাটুকু / অন্ধকারে শেষ আলো আশা।’ (কবিতা- ভাঙ্গনের শব্দ)